দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাখাইন রাজ্যের কিয়াউকফিউ শহরে মিয়ানমারের জান্তা বাহিনীর নৌঘাঁটিতে প্রচণ্ড হামলা চালাচ্ছে আরাকান আর্মি। কিয়াউকফিউয়ে তেল এবং গ্যাস পাইপলাইন, একটি গভীর সমুদ্রবন্দর ও একটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলসহ বেশ কয়েকটি চীনা সমর্থিত মেগা প্রকল্পও রয়েছে।
স্থানীয় সংবাদমাধ্যম ইরাবতি জানিয়েছে যে, আরাকান আর্মি ইতিমধ্যেই রাখাইনের ১৪টি শহর দখল করে নিয়েছে। কেবল কিয়াউকফিউ, রাজ্যের রাজধানী সিত্তে ও মানাউং জান্তার নিয়ন্ত্রণেই রয়েছে।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানিয়েছেন যে, এক বছরের বেশি সময় পর সম্প্রতি দানইয়াওয়াদি ঘাঁটিতে পুনরায় আক্রমণ শুরু করে আরাকান আর্মি। একই সঙ্গে আশেপাশের সামরিক ফাঁড়ি ও একটি পুলিশ ব্যাটালিয়নেও লড়াই চলছে।
গত সোম ও মঙ্গলবার থেমে থেমে সংঘর্ষ অব্যাহত থাকলেও বুধবার হতে পুরোদমে অব্যাহত রয়েছে। উভয় পক্ষই কামানের গোলা দিয়ে একে অপরকে আঘাতও করছে। শহরের বিভিন্ন গ্রাম লক্ষ্য করে জান্তা বিমানগুলো হামলা চালিয়ে বাসিন্দাদের বাস্তুচ্যুত করেছে।
তাউংগুপ টাউনশিপের মা-ই শহরে আশ্রয় নেওয়া সি মাও গ্রামের ৫২ বছর বয়সী উ নিয়ো বলেছেন, ২০ ফেব্রুয়ারি আমরা অন্যদের সঙ্গে গ্রাম হতে পালিয়ে আসি। শহরে আশ্রয় নেওয়ার মতো আমাদের কোনো আত্মীয় কিংবা বন্ধুবান্ধবও নেই। আমরা আশঙ্কা করছি যে, লড়াই আরও তীব্রতর হবে।
রাখাইনের স্থানীয় গণমাধ্যম জানিয়েছে যে, নৌঘাঁটির নিকটবর্তী উ কিন, কিয়ান চাই, সাইং চং, সাইং চং ডন, শাউক চাউং, সি মাও, কাত থাবায় এবং পিয়া তাই গ্রামে জান্তার বিমান হামলা চালানো হয়।
বৃহস্পতিবার জান্তা বাহিনী যুদ্ধবিমান ও ওয়াই-১২ বিমান ব্যবহার করে গ্রামগুলোতে ৫০০ পাউন্ড বোমা ফেলেছে বলে জানা যায়। গোলাবর্ষণ এবং বিমান হামলায় বেসামরিক ভবনগুলোর ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতির খবরও দিয়েছে রাখাইনের গণমাধ্যম।
ইরাবতি জানিয়েছে, মিয়ানমারে সশস্ত্র চীনা নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠানগুলোকে কার্যক্রম পরিচালনার অনুমতি দিয়ে জান্তা বাহিনীর একটি আইন পাস করার পরই মূলত কিয়াউকফিউ শহরে নতুন করে সংঘর্ষ শুরু হয়। প্রাইভেট সিকিউরিটি সার্ভিসেস আইনের আওতায় বেইজিং তাদের স্বার্থ রক্ষা করার জন্য বেসরকারি সুরক্ষা সংস্থাগুলোকেও মিয়ানমারে মোতায়েন করবে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org