দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ‘ডুমস্ক্রোলিং’ শব্দটি সম্পর্কে অনেকের ধারণাই নেই। এটি ২০২০ সালে জনপ্রিয় হয়। বিশেষত লকডাউনের সময়। ‘ডুমস্ক্রোলিং’ অনেকটা নেশার মতো। ক্রমাগত নেগেটিভ কনটেন্টই দেখতে ইচ্ছে করে।
সোশ্যাল মিডিয়ার ফিডে অনেক ধরনের কনটেন্টও আসে। কখনও মজার ভিডিও আসে, আবার কোনওটা ভীষণই ইমোশনাল, মনকে ছুঁয়ে যাওয়ার মতো পোস্ট দেওয়া হয়। তবে আপনি যদি সারাক্ষণই নেগেটিভ কনটেন্ট দেখে সময় কাটান, তাহলে কিন্তু বিপদ। নেগেটিভ ভিডিও, নিউজ়ের মতো কনটেন্ট সরাসরি আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের উপর প্রভাবও ফেলতে পারে। এটি এক নেশার মতোই। ক্রমাগত নেগেটিভ কনটেন্টই দেখতে ইচ্ছে করবে আপনার। এই নেশাকেই বলা হয় ‘ডুমস্ক্রোলিং’।
‘ডুমস্ক্রোলিং’ শব্দটি সম্পর্কে অনেকের ধারণাই নেই। এটি ২০২০ সালে জনপ্রিয় হয়। বিশেষত লকডাউনের সময়। তখন সময় কাটানো হোক কিংবা খবর জানা- মাধ্যম ছিল একমাত্র সোশ্যাল মিডিয়া। তবে ‘ডুমস্ক্রোলিং’ শুধুমাত্র নেতিবাচক কনটেন্ট দেখাকেই বলা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ার সঙ্গে স্ক্রোলিং ওতপ্রোতভাবে জড়িত। সেখানে আপনি যদি ক্রমাগত নেগেটিভ কনটেন্ট দেখে থাকেন বা নেতিবাচক খবরই খুঁজতে থাকেন, তাতে আপনার জন্য ক্ষতিকর। ডুমস্ক্রোল করার সময় আপনার হয়তো মনে হতে পারে যে, দুনিয়ায় কোথায় কী ঘটছে তা সম্পর্কে অবগত থাকার জন্য এমনটি করছেন। তবে এই ‘নেগেটিভ’ স্ক্রোলিংই আপনার মনে নেতিবাচক প্রভাবও ফেলতে পারে।
এই বিষয়ে মনোরোগ বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, নেগেটিভ কনটেন্ট দেখার কারণে কিংবা ‘ডুমস্ক্রোলিং’-এর জেরে অ্যাংজ়াইটি, ডিপ্রেশন আরও বাড়তে থাকে। যতো বেশি নেগেটিভ স্টোরি দেখবেন, হতাশাও বাড়বে। প্রকৃতপক্ষে, যখন আপনি নিউজ় ফিডে স্ক্রল করতে থাকেন- লুপে পড়ে যান। তখন অবিরাম বুড়ো আঙুল চলতে থাকে। এটাও একধরনের ওসিডি কিংবা অবসেসিভ-কম্পালসিভ ডিজ়অর্ডার। এই সমস্যা স্ট্রেস আরও বাড়ায়। মাথার ভিতরে তখন নেগেটিভ চিন্তা চলতে থাকে। এখান থেকে অনেক সময় প্যানিক অ্যাটাকও হতে পারে। এমনকী রাতে ঘুমোতে যাওয়ার সময়ও যদি স্মার্টফোনকে সঙ্গী করেন এবং শুয়ে শুয়ে নিউজ় ফিড স্ক্রল করতে থাকেন, তখন বাড়ে অনিদ্রার সমস্যাও।
মানসিক চাপ, অবসাদ কমাতে ও ডুমস্ক্রোলিং এড়াতে কী করবেন? আজ জেনে নিন:
# ডিজিটাল ডিটক্স ‘ডুমস্ক্রোলিং’ এড়ানোর সহজ এবং কার্যকর একটি উপায়। সহজ কথায় বললে, ফোন, বিশেষত সোশ্যাল মিডিয়া হতে যতটা সম্ভব দূরে থাকা যায়, ততোই আপনার জন্য ভালো। যেমন- সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাপগুলোর পুশ নোটিফিকেশনও বন্ধ করে রাখতে পারেন।
# স্ক্রিন টাইম ‘লিমিটেড’ রাখতে পারে। আপনি কতোক্ষণ ফোন ঘাঁটবেন, সেটি আপনার হাতেই কিন্তু রয়েছে। একটা সময় নির্ধারণ করুন, তার বেশি সময় আপনি সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করবেন না।
# ডুমস্ক্রোলিং যেহেতু নেগেটিভ কনটেন্টকে ঘিরেই, তাই চেষ্টা করুন এই ধরনের কনটেন্টকে এড়িয়ে চলার জন্য। সেইসব পেজ, চ্যানেল ফলো করুন, যেখানে পজ়িটিভ কনটেন্ট থাকে।
# আপনি যখনই বুঝতে পারবেন ডুমস্ক্রোলিংয়ের জেরে আপনার স্ট্রেস বাড়ছে, অতিরিক্ত ভাবছেন বা মন খারাপও থাকছে, তখন ফোন থেকে দূরে সরে আসুন। তখন সোশ্যাল মিডিয়া স্ক্রল করা বন্ধ করে দিন। সেইসঙ্গ স্ট্রেস কমানোর জন্য ব্রিদিং এক্সারসাইজ় করতে পারেন।
# খাবার টেবিলে এবং ঘুমোতে যাওয়ার সময় ফোনকে কখনও সঙ্গী করবেন না। সেইসঙ্গে অনলাইনে গেম খেলা, ই-বুক পড়ার মতো অভ্যাসও এড়িয়ে চলতে পারেন ইচ্ছে করলেই। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org