দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্বাস্থ্য বিশেষ করে চোখ নিয়ে আমরা অধিকাংশ সময় চিন্তিত থাকি। দু’মুঠো পেস্তা নিয়মিত খেলেই নাকি ভালো থাকবে চোখ! বয়স হলেও নাকি ধারেকাছে ঘেঁষতে পারবে না চোখের অসুখ। সাম্প্রতিক গবেষণায় উঠে এসেছে এমনই চমকপ্রদ এক তথ্য।
আমরা অনেকেই জানি গাজর খেলে চোখ ভালো থাকে, অভিভাবকরাও ছোটদের সব্জিটি খেতে উৎসাহ দেন। কথাটি ঠিক। গাজরে থাকা ভিটামিন এ এবং অন্যান্য খনিজ শরীরের জন্যও অত্যন্ত কার্যকর। দৃষ্টিশক্তি বৃদ্ধিতেও এটি সাহায্য করে।
তবে শুধু গাজরই নয়, দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতে খাওয়া যায় পেস্তা বাদামও। বাদাম হিসাবে তা শুধু সুস্বাদুই নয়, পুষ্টিগুণেও এটি ভরপুর। পেস্তা বাদামের গুণে বয়সকালেও চোখের জ্যোতি কমবে না, বলেছে সাম্প্রতিক এক গবেষণা।
আমেরিকার টাফ্টস বিশ্ববিদ্যালয়ে বিষয়টি নিয়ে গবেষণা হয়। দেখা গেছে, ‘ম্যাকিউলার ডিজেনেরশন’-এর মতো চোখের অসুখও ঠেকাতে পারে এই পেস্তা বাদাম। বয়স হলে মানুষের এই অসুখের ঝুঁকি বেড়ে যায়। যে কারণে আবছা দেখতে শুরু করেন কিংবা দৃষ্টিশক্তিও হারিয়ে ফেলেন অনেকেই। মূলত রেটিনায় থাকে ম্যাকিউলা। তার কর্মক্ষমতা কমে গেলে এই সমস্যা দেখা দিতেই পারে।
গবেষণার উদ্দেশ্যই ছিল, প্রতিদিন দু’মুঠো পেস্তা খেলে বয়সকালেও দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখা সম্ভব কি-না, সেটি দেখা। দেখা গেছে, এই বাদামে থাকা লুটেন ম্যাজিকের মতোই কাজ করে। ‘এজ-রিলেটেড ম্যাকিউলার ডিজেনারেশন’ কিংবা এএমডি-র মতো অসুখ প্রতিরোধেও তা সক্ষম। ম্যাকুলায় থাকা লুটিন চোখের কোষকলাকে সূর্যের ক্ষতিকর রশ্মির হাত থাকে বাঁচাতেও সাহায্য করে। সহজভাবে বললে, এটি চোখের ফিল্টার হিসাবে কাজ করে। কোনও কারণে সেই উপাদানের ঘনত্ব কমলেই তা দৃষ্টিশক্তিতে প্রভাব ফেলে।
গবেষকরা পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে দেখেছেন যে, দু’মুঠো পেস্তা বাদাম নিয়মিত খেলে ম্যাকিউলার পিগমেন্ট অপটিক্যাল ডেনসিটি (এমপিওডি) আরও বাড়ে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে এমপিওডিও কমে যায়। তাতেই দৃষ্টিশক্তি ক্ষয়ের ঝুঁকি সৃষ্টি হয়। পেস্তায় থাকা লুটিন চোখের প্রয়োজনীয় উপাদানটিও জোগান দেয়। দেখা গেছে, বয়স্কদের দৃষ্টিশক্তি ভালো রাখতেও পেস্তা বাদাম বিশেষ কার্যকর।
মুখ্য গবেষক ট্যামি স্কট বলেছেন, ‘‘ গবেষণালব্ধ ফল বলছে যে, পেস্তা বাদাম শুধু সুস্বাদু খাবারই নয় বরং দৃষ্টিশক্তি ভাল রাখতে তার বিশেষ ভূমিকাও রয়েছে। চোখের জন্য অত্যন্ত উপকারী লুটিনের জোগানদাতাও এই বাদাম।’’ অপর এক গবেষক এলিজ়াবেথ জনসন বলেছেন, ‘‘এই উপাদানটি প্রদাহ ও অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমাতেও সাহায্য করে থাকে।’’ তথ্যসূত্র: আনন্দবাজার পত্রিকা অনলাইন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org