দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রথম দিনের শেষ হাসিটা বাংলাদেশেরই ছিলো, দ্বিতীয় দিনের শুরুটাও চমৎকার ছিলো বাংলাদেশের। কিন্তু লোয়ার অর্ডারে ওয়াটলিংয়ের দারূণ সেঞ্চুরি বাংলাদেশকে ব্যাকফুটে ঠেলে দেয়। সবকটি উইকেট হারিয়ে প্রথম ইনিংসে ৪৬৯ রান তোলে কিউইরা। জবাবে শুরুতে হোঁচট খেলেও খেলায় উভয় দলের জন্য চমক নিয়ে হাজির হন মমিনুল হক। তাঁর ঝড়ো ব্যাটিংয়ে দিনশেষে ২ উইকেট হারিয়ে ১০৩ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ।
দ্বিতীয় দিনের শুরুতে আব্দুর রাজ্জাক এবং সোহাগ গাজী চমৎকার ব্রেক থ্রু এনে দেন বাংলাদেশকে। আগের দিনের ২৮০ রানের সাথে আর ২ রান যোগ করে ২৮২ রান তুলতেই কিউইরা হারিয়ে ফেলে ২ উইকেট। ফলে ২৮২ রানে ৭ উইকেটে পরিণত হয় তাঁরা। তবে সপ্তম উইকেটে ওয়াটলিং এবং ব্রেসওয়েল ৫৭ রানের জুটি গড়ে নিউজিল্যান্ডের ধ্বস সামাল দেন। এরপরই আবার সাকিব আল হাসান এবং সোহাগ গাজী মিলিত আক্রমণ চালান কিউই শিবিরে। ৩৩৯ থেকে ৩৪২ রানের ব্যবধানে ৯ উইকেটে পরিণত হয় নিউজিল্যাণ্ড। ব্যক্তিগত ২৯ রানে ব্রেসওয়েল বোল্ড হন সোহাগ গাজীর বলে। কিছুক্ষণ পর ১ রান করা সোধিকে এলবিডব্লিউ এর শিকারে পরিণত করেন সাকিব আল হাসান।
নবম উইকেটে বোল্টকে নিয়ে ওয়াটলিং গড়ে তোলেন ১২৭ রানের জুটি। ১৮২ বল মোকাবেলায় ১০৩ রান করে নিউজিল্যাণ্ডকে ওয়াটলিং এনে দেন ৪৬৯ রানের বড় সংগ্রহ। মমিনুলের আউটে পরিণত হবার সময় অপর প্রান্তে বোল্ট অপরাজিত ছিলেন ৫২ রানে। সর্বোচ্চ ৩ উইকেট পেয়েছেন আব্দুর রাজ্জাক, সাকিব এবং গাজী ২টি করে উইকেট। এছাড়া রুবেল, নাসির এবং মমিনুল ১টি করে উইকেট লাভ করেন।
ব্যাটিংয়ে নেমে বাংলাদেশের টপঅর্ডার চিরাচরিত ব্যর্থতার পরিচয় দেয়। ওপেনার তামিম ইকবাল কথা দিয়েছিলেন ঘরের মাঠে বড় কিছু করে দেখাবেন, কিন্তু প্রতিজ্ঞায় গুড়েবালি, উল্টো ক্যারিয়ারের প্রথম ডাক মেরে ক্রিজে চলে আসেন তিনি! প্রথম ইনিংসের লোয়ার অর্ডারে নেমে ফিফটি করা বোল্টের বলে অফ স্ট্যাম্পে দাঁড়িয়ে থাকা আরেক কিউই সেঞ্চুরিয়ান উইলিয়ামসনের হাতে ক্যাচ তুলে দেন তামিম ইকবাল। কিছুক্ষণ পরেই আবার ছন্দ পতন বাংলাদেশের! কিউই লোয়ার অর্ডারে প্রয়োজনীয় রান তোলা আরেক বোলার ব্রেসওয়েলের বোলিংয়ে বিভ্রান্ত হয়ে এলবিডব্লিউয়ের ফাঁদে পড়ে মাত্র ৩ রান করে বিদায় নেন আনামুল হক।
৮ রানে ২ উইকেট হারিয়ে তথৈবচ অবস্থা তখন বাংলাদেশের। ক্রিজে আছেন অভিষিক্ত মার্শাল আইয়ুব এবং সদ্যই ২২ পেরুনো তরুণ খেলোয়াড় মমিনুল। ধুঁকতে থাকা বাংলাদেশের হয়ে খোলসে না ঢুকে পাল্টা আক্রমণ চালিয়ে কিউই বোলিং আক্রমণ ছত্রখান করে দেন মমিনুল। সাথে অভিষেক ম্যাচেই ধৈর্য্যের পরাকাষ্ঠা দেখিয়ে মমিনুলকে যোগ্য সঙ্গ দেন আইয়ুব। মাত্র ৩৬ বলে দশটি চার মেরে ফিফটিতে পৌঁছে যান মমিনুল হক। অবশ্য পরিস্থির দাবি মেনে শান্ত হয়ে গিয়েছেন সময়মতোই। একদিকে যখন মমিনুল ব্যাটে ঝড় তুলেছেন অন্যদিকে খাঁটি ক্রিকেটীয় ব্যাকরণ মেনে টেস্ট খেলছিলেন আইয়ুব।
দিনশেষে মার্শাল আইয়ুবের সাথে ৯৫ রানের জুটি গড়ে খেলা শেষ করেছেন মমিনুল। মমিনুল করেছেন ৭১ বলে ৭৭ এবং মার্শাল আইয়ুব ৭৪ বলে ২১ রান। আগামীকাল ছোট্ট মমিনুলের ব্যাটে সেঞ্চুরির ছোঁয়া দেখার অপেক্ষায় বাংলাদেশ।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
নিউজিল্যান্ডঃ ৪৬৯ (ফুলটন ৭৩, রাদারফোর্ড ৩৪, উইলিয়ামসন ১১৪, টেইলর ২৮, ম্যাককালাম ২১, মার্টিন ১, অ্যান্ডারসন ১, ওয়াটলিং ১০৩, ব্রেসওয়েল ২৯, সোধি ১, বোল্ট ৫২*; রাজ্জাক ৩/১৪৭, সোহাগ ২/৭৯, সাকিব ২/৮৯, মমিনুল ১/১০, নাসির ১/১৯, রুবেল ১/৭৭)
বাংলাদেশঃ ১০৩/২ (তামিম ০, এনামুল ৩, মার্শাল ২১*, মমিনুল ৭৭*; বোল্ট ১/৫, ব্রেসওয়েল ১/২৫)