দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা এতোদিন ভেবে আসছিলাম যে, মানুষের মস্তিষ্ক অনেক গতিশীল। কিন্তু আসলে তা নয় বলে জানিয়েছেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানীরা।

সম্প্রতি এক গবেষণা চালিয়ে প্রথমবারের মতো মানুষের মস্তিষ্কের কাজ করার গতি পরিমাপের দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। ওই গবেষণায় দেখা গেছে, আগে যতোটা মনে করা হতো মানুষের মস্তিষ্ক আসলে ততোটা গতিশীল নয়। মানুষের চোখ, কান, ত্বক এবং নাকসহ বিভিন্ন ইন্দ্রিয় নিয়মিত তথ্য সংগ্রহ করে থাকে। বিভিন্ন ইন্দ্রিয়ের তথ্য পাওয়ার পরই মানুষের মস্তিষ্ক প্রতি সেকেন্ডে মাত্র ১০ বিট গতিতে তথ্য প্রক্রিয়া করে থাকে।
এই এক বিট হচ্ছে তথ্যের মৌলিক একক। একটি সাধারণ ওয়াই-ফাই সংযোগে প্রতি সেকেন্ডে প্রায় ৫০ মিলিয়ন বিট প্রক্রিয়াকরণ করা হয়ে থাকে। বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, পড়া, লেখা, ভিডিও গেম খেলা এবং রুবিকস কিউব সমাধান করার সময় মানুষের মস্তিষ্ক প্রতি সেকেন্ডে ১০ বিট গতিতে চিন্তাগুলো করতে পারে। তাই এই গতি অত্যন্ত ধীর। নিউরন সাময়িকীতে এই গবেষণার ফলাফল সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে।
নতুন গবেষণার বিষয়ে নিউরোবায়োলজিস্ট মার্কাস মেইস্টার বলেছেন, ‘এটি অত্যন্ত কম সংখ্যা। প্রতি মুহূর্তে আমরা ট্রিলিয়ন হতে মাত্র ১০ বিট তথ্য বের করছি, যা আমাদের ইন্দ্রিয় গ্রহণ করে থাকে। সেই ১০ বিট ব্যবহার করেই আমাদের চারপাশের বিশ্বকে আমরা উপলব্ধি করছি। নানা ধরনের সিদ্ধান্তও নিচ্ছি। এই গতি নতুন এক প্রশ্নও তৈরি করছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, মস্তিষ্ক কীভাবে এই সমস্ত তথ্য ফিল্টার করে?’
মানুষের মস্তিষ্ক কেনো ধীরগতিতে কাজ করে, সেটি বিজ্ঞানীদের কাছে এখনও স্পষ্ট নয়। তাদের দাবি, মানুষের মস্তিষ্কের তথ্য প্রক্রিয়াকরণ কার্যক্রম প্রয়োজনের তুলনায় হয়তো ধীরে কাজ করে কিংবা এর চেয়েও বেশি গতির কাজ করার ক্ষমতাও নেই। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org