দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরমের এই সময় বাঙালিরা খুঁজছে বৃষ্টি আর পাকা আম। গরমের মৌসুমেই দেখা মেলে রকমারি আমের। এখন বাজারও ছেয়ে গেছে কাঁচা-মিঠে আমে। কয়েক দিন পরই বাজারে উঁকি দেবে পাকা হিমসাগর, ল্যাংড়া, আম্রোপালি ইত্যাদি আম। তবে প্রশ্ন হলো ডায়াবেটিস থাকলে কী পাকা আম খাওয়া যাবে?

আমরা সবাই জানি আম পুষ্টিকর ফল। এই ফলের মধ্যে ভিটামিন সি, এ, ম্যাঙ্গানিজ়, জ়িঙ্ক, পটাশিয়াম প্রায় সব ধরনের ভিটামিন এবং মিনারেল রয়েছে। এ ছাড়াও রয়েছে প্রচুর পরিমাণে শর্করা এবং ক্যালোরি। তাই ডায়াবেটিসের রোগীরা পাকা আম খাবেন কি না, তা নিয়ে দ্বন্দ্বেই থাকেন।
এই বিষয়ে ডায়েটেশিয়ান অনুশ্রী মিত্র বলেছেন, ডায়াবেটিসের রোগীরাও পাকা আম খেতে পারেন। তবে কয়েকটি নিয়ম মেনেই খেতে হবে। এই ডায়েটেশিয়ান বলেছেন, ‘উচ্চ পরিমাণে ফ্রুটোজ় থাকলেও আমে অনেক প্রয়োজনীয় পুষ্টিও রয়েছে। এগুলো স্বাস্থ্যের জন্যও ভীষণ উপকারী।’
তাহলে ডায়াবেটিসের রোগীরা কীভাবে আম খাবেন
# ডায়াবেটিসের রোগী না হলেও ইচ্ছে মতো পাকা আম খাওয়া কিন্তু চলবে না। এতে রক্তে শর্করার মাত্রা ও ওজন বৃদ্ধির ভয়ও থাকে। একটা বড় সাইজ়ের আম গোটা না খেয়ে, তা সকাল-বিকাল ভাগ করে খেতে হবে। একটা আম সারাদিন ধরে খেলে সুগার লেভেল বৃদ্ধির আশঙ্কাও নেই।
# বড় সাইজের গোটা আম খাবেন না। আম ছোট ছোট টুকরো করে খাবেন। এতে মনে হবে যে, অনেকটা পাকা আমই আপনি খেয়ে ফেলেছেন।
# পাকা আমের গ্লাইসেমিক ইনডেক্স বেশি। তাই ভারি খাবারের সঙ্গে পাকা আম খাওয়া এড়িয়ে চলুন। বিশেষত: রাতে খাবার খাওয়ার পর কখনও পাকা আম খাবেন না।
# ব্রেকফাস্ট এবং লাঞ্চের মধ্যবর্তী সময় পাকা আম খেতে পারেন। আবার ব্রেকফাস্টে দু’টো রুটির সঙ্গে এক টুকরো আম খেতেই পারেন। তবে ভরপেট খাবার খাওয়ার সঙ্গে পাকা আম না খাওয়াই উত্তম।
# ফল হিসেবে পাকা আম খান। পাকা আমের জুস, পুডিং কিংবা অন্য কোনও ডেজ়ার্ট বানিয়েও খাবেন না। এতে আমের পরিমাণ বোঝা যায় না ও রক্তে শর্করার মাত্রা তখন বাড়তে পারে।
# ইচ্ছে করলে পাকা আমের সঙ্গে বাদাম, স্প্রাউট অথবা শসার মতো খাবারও রাখতে পারেন। এতে করে রক্তে গ্লুকোজ নিঃসরণ ধীর গতিতে হবে। এই টোটকায় পাকা আম খেলে রক্তে শর্করার মাত্রা চট করে বেড়ে যাবে না।
সুগার লেভেল যাচাই করে করুন
প্রত্যেকের শরীরই সমান নয় ও শারীরিক জটিলতাও একে-অন্যের থেকে একেবারেই আলাদা। তাই আপনার স্বাস্থ্যের জন্য পাকা আম উপযুক্ত কি-না, অথবা দিনে কতোটা পাকা আম খেলে ক্ষতির সম্ভাবনা কম থাকবে, সে সম্পর্কে চিকিৎসক কিংবা পুষ্টিবিদের পরামর্শ গ্রহণ করুন। সেইসঙ্গে নিয়মিত রক্তে শর্করার মাত্রা যাচাই করুন। তথ্যসূত্র: এই সময়।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org