দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বেশিরভাগ জার্মান নাগরিকরা অভিবাসন ও অর্থনৈতিক বিষয়াদিসহ নানা সমস্যার কারণে নিজ দেশ ছেড়ে চলে যেতে চান। সম্প্রতি ‘YouGov’-এর একটি নতুন জরিপে এই তথ্য উঠে এসেছে।

জরিপের বরাত দিয়ে জার্মান জাতীয় দৈনিক ডাই ওয়েল্ট জানিয়েছে যে, অর্ধেকেরও বেশি জার্মান নাগরিক বিদেশ চলে যাওয়ার কথাও বিবেচনা করে। তারা দেশ ছেড়ে যেতে চাওয়ার প্রধান কারণ হিসেবে উল্লেখ করেছেন অভিবাসন ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলোকে।
জরিপ অনুসারে জানা যায, জরিপে অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে ৩১% বলেছেন যে, তারা ‘অবশ্যই’ বিদেশে চলে যাবেন যদি তারা কাজ এবং ব্যক্তিগত জীবন কিংবা আর্থিক সীমাবদ্ধতা ছাড়াই সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে তাদের ইচ্ছা বেছে নিতে পারেন। ২৭% বলেছেন, তারা ‘সম্ভবত’ চলে যেতেন। এর বিপরীতে, ২২% বলেছেন তারা ‘সম্ভবত যেতেন না’ ও ১৫% বলেছেন, তারা নিশ্চিতভাবেই স্থানান্তরের কথা বিবেচনা করবেন না।
জরিপের তথ্য বলছে যে, যারা বলেছেন বিদেশে চলে যাওয়ার কথা ভাবতে পারেন, তাদের মধ্যে ৩৬% উল্লেখ করেছেন যে, সাম্প্রতিক মাসগুলোতে জার্মানি ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা তাদের মনে আরও ঘন ঘনই ঘুরপাক খাচ্ছে।
জার্মানি এখনও একমাত্র জি-৭ দেশ, যেখানে গত দুই বছরে কোনো অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধিই রেকর্ড করা হয়নি। যে কারণে চ্যান্সেলর ফ্রিডরিখ মের্জের নেতৃত্বে নতুন সরকারের জন্য অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার একটি মূল লক্ষ্য হয়ে দাঁড়িয়েছে। আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল অনুমান করেছে যে, জার্মানি ২০২৫ সালে জি-৭ সমকক্ষদের থেকেও পিছিয়ে থাকবে, প্রত্যাশিত প্রবৃদ্ধি মাত্র 0.1% থাকবে।
অর্থনৈতিক মন্দা সত্ত্বেও জার্মানি এখনও ইইউতে আশ্রয়প্রার্থীদের জন্য শীর্ষস্থানীয় গন্তব্য। ২০২৪ সালে, এই দেশটি ২,৩৭,০০০ এরও বেশি আবেদন পেয়েছে।
উল্লেখ্য, এই মাসের শুরুতে বার্লিন ২০১৫ সালে চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের গৃহীত উন্মুক্ত সীমান্ত নীতির বিপরীতে দেশে প্রবেশকারী আশ্রয়প্রার্থীদের সংখ্যা রোধ করতে কঠোরভাবে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বাস্তবায়ন করে থাকে।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org