দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বৃহস্পতি গ্রহের মাধ্যাকর্ষণ শক্তি পুরো সৌরজগতের জন্যই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। নতুন এক গবেষণায় বলা হয়েছে, প্রায় ৪৫০ কোটি বছর পূর্বে বৃহস্পতি গ্রহ তার প্রাথমিক অবস্থায় ছিল।

বলা হয়েছে, পূর্বে বর্তমানের চেয়ে প্রায় দ্বিগুণ বড় ছিল বৃহস্পতি গ্রহ। শুধু আকারে বড়ই নয়, বৃহস্পতি গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্রও ছিল খুবই শক্তিশালী। ‘নেচার অ্যাস্ট্রোনমি’ সাময়িকীতে নতুন এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশ করা হয়।
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালটেকের গ্রহবিজ্ঞানের অধ্যাপক কনস্টান্টিন ব্যাটিগিন এবং মিশিগান বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ ফ্রেড সি অ্যাডামস বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক অবস্থার বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করেন। গবেষকদের তথ্যমতে, সৌরজগতের প্রথম কঠিন পদার্থ তৈরির প্রায় ৩৮০ কোটি বছর পর বৃহস্পতি গ্রহের আকার আরও বড় হতে থাকে। সেই সময় সূর্যের চারপাশে পদার্থের ডিস্ক প্রোটোপ্ল্যানেটারি নীহারিকা ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছিল। সেই সময় বৃহস্পতি গ্রহের চৌম্বক ক্ষেত্র ছিল খুব শক্তিশালী।
এই বিষয়ে বিজ্ঞানী ব্যাটিগিন বলেছেন, ‘আমাদের চূড়ান্ত লক্ষ্য আমরা কোথায় থেকে এসেছি, সেটি জানা। বিভিন্ন ধাঁধা সমাধানের জন্য বিভিন্ন গ্রহ গঠনের প্রাথমিক পর্যায় নির্ধারণ করাও অপরিহার্য।’ নতুন তথ্য শুধু বৃহস্পতি গ্রহই নয়, সমগ্র সৌরজগৎ শুরুতে আসলে কেমন ছিল, সে সম্পর্কেও জানতে সহায়তা করছে বলে জানান তিনি।
বৃহস্পতি গ্রহের চাঁদ আমালথিয়া এবং থিব পর্যবেক্ষণ করে বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে, এই দুটি চাঁদ গ্রহের ৪টি বৃহৎ গ্যালিলিয়ান উপগ্রহের মধ্যে সবচেয়ে ছোট এবং নিকটতম। আমালথিয়া এবং থিবের কক্ষপথ সামান্য হেলে থাকার কারণে আরেক চাঁদ আইওর চেয়েও বৃহস্পতি গ্রহকে খুব কাছ থেকে প্রদক্ষিণ করছে। তথ্যসূত্র : এনডিটিভি।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে।
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org