দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চেয়ারে আমরা সবাই বসে থাকি। কিন্তু সেই চেয়ার যদি হয় মৃত্যুচেয়ার তাহলে কেমন লাগবে? এমনই এক মৃত্যুচেয়ার কাহিনী এটি।
আমরা চেয়ারের এমন কাহিনী হয়তো কোন দিন শুনিনি বা কল্পনাও করতে পারিনি। ঠিক এমনই এক অভিশপ্ত চেয়ারের কাহিনী আজ তুলে ধরবো। হয়তো মনে হতে পারে এমনি অভিশপ্ত চেয়ার আছে দুনিয়ায়। চেয়ারটা কেমন করে অভিশপ্ত হল, তা নিয়েও রয়েছে এক গল্প।
১৬৬৯ সালের কথা। থমাস বাসবি নামে এক লোক তার অপরাধের জন্য মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ড কার্যকরের আগে তার শেষ ইচ্ছা জানতে চাওয়া হয়। সে তার অতিপ্রিয় পানশালাতে গিয়ে নিজের প্রিয় চেয়ারে বসে জীবনের শেষ খাবার খাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করে। খাবার শেষ করে সে চেয়ার ছেড়ে উঠে দাঁড়ায় এবং বলে ওঠে, ‘এই চেয়ারে যে বসবে সে হঠাৎ করেই মারা যাবে।’ এরপরের দুইশ বছর পার হয়ে গেলেও চেয়ারটি সেই পানশালাতেই রয়ে যায়। কেও তাতে বসত না। কারো কখনও সাহস হয়নি ওই চেয়ারে বসার।
এরপর ঘটনা ঘটলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়। একজন বৈমানিক সেই পানশালাতে এসে সেই অভিশপ্ত চেয়ারে বসলেন। এরপর তিনি আর যুদ্ধ থেকে ফিরে আসেননি। এছাড়া যে সৈন্যই এই চেয়ারে বসেছে তাদের সবার পরিণতিই একই হয়েছিল। ১৯৬৭ সালে ব্রিটিশ রাজকীয় বিমান বাহিনীর দুইজন পাইলট ওই চেয়ারে বসেছিলেন। খাওয়া-দাওয়া শেষে পানশালা থেকে বের হয়েই তারা এক ট্রাক দুর্ঘটনায় মারা যান। ১৯৭০ সালে একজন স্থপতি এই চেয়ারে বসে এই অভিশাপ ভুল প্রমাণ করতে চেষ্টা করেন। সেদিন বিকেলে তিনি এক গর্তে পড়ে মারা যান। এরপর আরেক ছাদ ঢালাইকারী ওই চেয়ারে বসেন, আর ছাদ থেকে পড়ে মারা যান। আরেক মহিলা মারা যান মস্তিষ্কের টিউমারে ওই চেয়ারে বসার পর। এমন ঘটনা একের পর এক ঘটতেই থাকে।
একের পর এক এমনসব ভয়াবহ ঘটনা দেখে পানশালার মালিক চেয়ারটি বেসমেন্টে রেখে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যে লোকটি চেয়ার বহন করছিল সে বেসমেন্টে গিয়ে বিশ্রাম নিতে চেয়ারের উপর বসে। সেদিনই এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যায় সে। ১৯৭২ সালে চেয়ারটি নিয়ে যাওয়া হয় ইংল্যান্ডের উত্তর ইয়র্কশায়ারের স্থানীয় জাদুঘরে। ওটা জাদুঘরও নয়, বাসবি স্টপ ইন নামের সরাইখানা। যাতে সেটিতে কেও বসতে না পারে সেজন্য চেয়ারটি মাটি থেকে ৫ ফুট উপরে ঝুলিয়ে রেখে প্রদর্শন করা হচ্ছে।
তিনশো বছরেরও বেশি সময় ধরে অভিশপ্ত এই চেয়ারটি নিয়ে কতনা কাহিনীই হয়েছে। কিন্তু রহস্য আজও রয়ে গেছে। কারণ এতগুলো মৃত্যুকে কি কাকতালীয় বা স্বাভাবিক মৃত্যু বলা যাবে? হয়তো হাজার হাজার বছর ধরে এটি শুধু ইতিহাসের এক কাহিনী হয়ে থাকবে। তথ্যসূত্র: যুগান্তর অনলাইন।