দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চুল পড়া একটি বহুজাতিক সমস্যা। কারণগুলো জেনেটিক, হরমোনাল, পুষ্টিহীনতা, মেডিকেল সমস্যা কিংবা স্ট্রেস-সংক্রান্ত হতে পারে। প্রতিরোধ ও চিকিৎসায় দ্রুত পদক্ষেপ, সঠিক জীবনধারা এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের তত্ত্বাবধান জরুরি।

চুল পড়ার প্রধান প্রকার এবং কারণ
অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেশিয়া (pattern baldness) — পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ; ডিহাইড্রোটেস্টোস্টেরন (DHT) হরমোনের সংবেদনশীলতার ফলে ফলিকেলের আকার সঙ্কুচিত হয়।
টেলোজেন এফ্লুভিয়াম (telogen effluvium) — স্ট্রেস, তীব্র রোগ, ওষুধ বা হঠাৎ ডায়েট পরিবর্তনের পরে সাময়িকভাবে বেশি পরিমাণ চুল পড়া।
অলোপেসিয়া এরিয়া (alopecia areata) — ইমিউন-মধ্যস্থ একটি অ্যালোপেশিয়া, কোথাও কোথাও লম্বা-চাপানো অংশে চুল পড়ে যায়।
পুষ্টি ঘাটতি ও স্ক্যাল্প ইনফেকশন- আয়রণ, ভিটামিন-ডি, প্রোটিন, জিঙ্কের ঘাটতি চুল দুর্বল করে; অতিরিক্ত সেলেনিয়াম বা ভিটামিন-এও ক্ষতিকর হতে পারে।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা- জীবনধারা ও খাদ্য
সুষম পুষ্টি: পর্যাপ্ত প্রোটিন, আয়রন, ভিটামিন D, B-কমপ্লেক্স (প্রয়োজনে বায়োটিন), জিঙ্ক ও ওমেগা-৩ গ্রহণ চুলের বৃদ্ধি সমর্থন করে। তবে প্রয়োজন ছাড়া অতিরিক্ত সাপ্লিমেন্ট খাওয়া বিপরীত প্রভাব ফেলতে পারে — চিকিৎসকের নির্দেশ নিন।
স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট: নিয়মিত ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, ধ্যন-যত্ন স্ট্রেস-সম্পৃক্ত টেলোজেন সমস্যা কমাতে সাহায্য করে।
স্ক্যাল্প কেয়ার: খুব শক্ত ভ্যানিশিং, তীব্র হিট-স্টাইলিং বা রাসায়নিক প্রসেস কমান; অগভীর স্ত্রীক (tight) চুলের স্টাইল এড়ান। তেল-অতিরিক্ততা/সংক্রমণ থাকলে সঠিক শ্যাম্পু ও ডার্মাটোলজিস্ট পরামর্শ নিন।
প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা- চিকিৎসা ও চিকিৎসাগত হস্তক্ষেপ
টপিকাল মিনোক্সিডিল (Minoxidil): পুরুষ ও মহিলাদের জন্য বহুক্ষেত্রে কার্যকর; নিয়মিত প্রয়োগে ফলাফল দেখতে সাধারণত ৪–৬ মাস লাগে। পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ও শুরুতে সাময়িক শেডিং হতে পারে; ধারাবাহিক ব্যবহার প্রয়োজন।
ফিনাস্টারাইড (Finasteride): পুরুষদের অ্যান্ড্রোজেনেটিক অ্যালোপেশিয়ার ক্ষেত্রে কার্যকর; ডোজ ও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া (যেমন- যৌনগত পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া) বিবেচনা করে ডাক্তারের তত্ত্বাবধান জরুরি। মহিলাদের ক্ষেত্রে ডোজ ও ব্যবহার আলাদা নির্দেশের অধীন।
মিশ্র থেরাপি ও নতুন বিকল্প: টপিকাল বা মৌখিক মিনোক্সিডিলের সাথে 5α-রেডাকটেজ ইনহিবিটরদের সংমিশ্রণ, লেজার থেরাপি, PRP (platelet-rich plasma) ও উদ্ভাবনী ওষুধ-গবেষণা উত্থিত হচ্ছে- তবে প্রত্যেকের জন্য ফলাফল আলাদা এবং দীর্ঘ মেয়াদি ডাটা প্রয়োজন।
সতর্কতা এবং পরীক্ষার প্রয়োজনীয়তা
হঠাৎ কিংবা অঞ্চলভিত্তিক চুল পড়া হলে ল্যাব টেস্ট: সম্পূর্ণ রক্ত পরীক্ষা, আয়রন/ফেরিটিন, ভিটামিন-D, থাইরয়েড ফাংশন ইত্যাদি পরীক্ষা সাহায্য করে কারণ চিকিৎসা লক্ষ্যভিত্তিক হওয়া উচিত। অতিরিক্ত ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট (বিশেষত সেলেনিয়াম, ভিটামিন A) সম্পর্কে সতর্কতা থাকা উচিত।
সিদ্ধান্ত এবং সুপারিশ
চুল পড়া রোধে প্রাথমিক পদক্ষেপ: খাদ্য, স্ট্রেস নিয়ন্ত্রণ, কোমল স্ক্যাল্প কেয়ার ও তীব্র স্টাইলিং পরিহার।
যদি দিনের মধ্যে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি শেডিং দেখেন বা খাঁজখাঁজ জায়গা দেখা যায় — ডার্মাটোলজিস্ট/ট্রাইকোলজিস্ট-এর মাধ্যমে কারণ নির্ণয় ও লক্ষ্যভিত্তিক চিকিৎসা নিন (মিনোক্সিডিল, ফিনাস্টারাইড বা অন্যান্য)।
সাপ্লিমেন্ট শুরু করার আগে রক্তপরীক্ষা করিয়ে ঘাটতি নিশ্চিত করুন; অযথা সাপ্লিমেন্ট নেওয়া বিপজ্জনক হতে পারে।
বি:দ্র: এই প্রতিবেদনটি সামগ্রিক বৈজ্ঞানিক বই, রিভিউ এবং নির্দেশিকা থেকে সংকলিত- ব্যক্তিগত চিকিৎসার বিকল্প নয়। নির্দিষ্ট চিকিৎসা কিংবা ওষুধ (যেমন ফিনাস্টারাইড/মিনোক্সিডিল) শুরু করার আগে দয়া করে আপনার চিকিৎসক কিংবা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ গ্রহণ করুন।
>>>>>>>>>>>>>>>>>>
করনা সম্পর্কে নতুন করে জরুরী সতর্কতা
আসুন আমরা আবার মাস্ক পরা শুরু করি। কারণ করোনা তথা COVID-Omicron XBB আগের ভ্যারিয়েন্টগুলোর তুলনায় ভিন্ন ও বিপজ্জনক। এটি সহজে শনাক্তও হয় না, তাই সবার মাস্ক পরা অত্যন্ত জরুরি।
১. COVID-Omicron XBB এর নতুন উপসর্গগুলো:
i) কাশি নেই।
ii) জ্বর নেই।
বেশিরভাগ উপসর্গ হলো—
iii) অস্থিসন্ধিতে ব্যথা।
iv) মাথাব্যথা।
v) গলাব্যথা।
vi) পিঠে ব্যথা।
vii) নিউমোনিয়া।
viii) ক্ষুধা উল্লেখযোগ্যভাবে কমে যাওয়া।
২. এই ভ্যারিয়েন্টটি ডেল্টার চেয়ে ৫ গুণ বেশি বিষাক্ত এবং মৃত্যুহারও বেশি।
৩. উপসর্গগুলো খুব অল্প সময়েই মারাত্মক আকার ধারণ করে এবং কখনও কখনও কোনো স্পষ্ট উপসর্গ না দেখিয়েই অবস্থা খারাপ হতে শুরু করে।
৪. তাই আরও বেশি সতর্ক থাকা প্রয়োজন।
এই ভ্যারিয়েন্টটি নাসোফ্যারেঞ্জিয়াল (নাকের গভীর অংশ) অঞ্চলে পাওয়া যায় না, বরং সরাসরি ফুসফুসের “উইন্ডো” অংশে আঘাত করে এবং নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা দেয়।
৫. কিছু রোগীর মধ্যে জ্বর বা ব্যথা না থাকলেও এক্স-রে করলে মৃদু নিউমোনিয়ার লক্ষণ দেখা যাচ্ছে। এছাড়া নাক দিয়ে নেয়া স্যাম্পলে (সোয়াব) পরীক্ষায় নেগেটিভ ফল আসছে, যা পরীক্ষায় ভুল রিপোর্ট (ফলস নেগেটিভ) এর সংখ্যা বাড়াচ্ছে। এ কারণে এই ভাইরাসকে ‘ধূর্ত’ বলা হচ্ছে।
এর মানে হলো— এটি সহজেই ছড়িয়ে পড়ে, সরাসরি ফুসফুসে সংক্রমণ ঘটায়, ভাইরাল নিউমোনিয়া সৃষ্টি করে এবং তীব্র শ্বাসকষ্ট তৈরি করে। এই কারণে COVID-Omicron XBB এত বেশি ছোঁয়াচে ও প্রাণঘাতী হয়ে উঠেছে।
৬. যতটা সম্ভব ভিড় এড়িয়ে চলুন, খোলা জায়গাতেও অন্তত ১.৫ মিটার দূরত্ব বজায় রাখুন, সঠিকভাবে মাস্ক পরুন, এবং নিয়মিত হাত ধুয়ে ফেলুন—even যদি কাশি বা হাঁচি না থাকে।
এই COVID-Omicron XBB “ওয়েভ” প্রথম COVID-19 মহামারির চেয়েও ভয়াবহ।
সতর্কতা, সচেতনতা ও বৈচিত্র্যময় সুরক্ষা ব্যবস্থাই আমাদের রক্ষা করতে পারে।
✅ দয়া করে এই বার্তাটি বন্ধু ও পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে শেয়ার করুন।
✅ শুধুমাত্র নিজের কাছে রেখে দেবেন না।
✅ যত বেশি সম্ভব লোককে জানিয়ে দিন।
ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই মাস্ক পরুন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন।
>>>>>>>>>>>>>>
ডেঙ্গু প্রতিরোধ করবেন যেভাবে
মশা বাহিত একপ্রকার ভাইরাস জ্বর হলো ডেঙ্গু। এই জ্বর অন্যান্য ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়াজনিত জ্বর থেকে ভিন্ন। অবশ্য এই জ্বর কোনোভাবেই ছোঁয়াচে নয়। এই ভাইরাস জ্বর এককভাবে বা অন্যান্য ভাইরাস (চিকুনগুনিয়া, ইয়েলো ফিভার, বার্মা ফরেস্ট, ফ্লু, রেসপাইরেটরি সিনসাইটিয়াল) এবং ব্যাকটেরিয়া (নিউমোক্কাস)-এর সঙ্গেও হতে পারে।
লক্ষণ ও জ্বরের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে ডেঙ্গুজ্বরকে দুই ভাগে ভাগ করা হয়েছে-
১. সাধারণ ডেঙ্গুজ্বর
২. রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বর।
সাধারণ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে চোখে পড়ে মূলত নিচের এই লক্ষণগুলো-
১. হঠাৎ করে তীব্র জ্বর ও তা ২ থেকে ৭ দিন স্থায়ী হওয়া।
২. তীব্র মাথাব্যথা হওয়া।
৩. চোখের পেছনের অংশে ব্যথা হওয়া।
৪. জ্বরের সঙ্গে সঙ্গে সারা শরীরে লালচে ফুসকুড়ি চোখে পড়া।
৫. সম্পূর্ণ শরীরে তীব্র ব্যথা ও সেইসঙ্গে কোমরে ব্যথা।
৬. বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া।
৭. ত্বকে র্যাশ বা লাল দানা দানা দেখা দেওয়া।
রক্তপাতসহ ডেঙ্গুজ্বরের ক্ষেত্রে :
১. ২ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে তীব্র জ্বর সঙ্গে নাক, মুখ বা বমির সঙ্গে রক্ত যাওয়া।
২. জ্বরের পাশাপাশি বুকে বা পেটে পানি জমে যাওয়া।
এইসব লক্ষণের যে কোনো একটি লক্ষণ দেখা দিলেই দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে।
অপরদিকে
জ্বরের প্রথম ৩ দিন বাড়িতে অপেক্ষা করুন। অপরদিকে সারা শরীর পানি দিয়ে স্পঞ্জ করুন কিছুক্ষণ পরপর। এতে করে জ্বরের মাত্রা কমে আসবে। পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান ও বিশ্রাম নিতে হবে। এরপরেও জ্বর না কমলে বা কিছু সময় পরপর বাড়তে থাকলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন।
ডেঙ্গু প্রতিরোধে করণীয় বিষয়:
১. বাড়ির আশপাশ যতোটা সম্ভব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে চেষ্টা করুন।
২. ঘরের ভেতরে থাকা ফুলের টব বা ভাঙা প্লাস্টিকের বোতল, ডাবের খোসা, টায়ার অথবা পলিথিন থাকলে তা দ্রুত পরিষ্কার করে ফেলুন ও ফুলের টব থেকে জমে থাকা পানি নিষ্কাশন করুন।
৩. মশা নিধনের জন্য সপ্তাহে অন্তত ৩ বার স্প্রে বা ফগিং করুন।
৪. বাড়ির বাইরে যাওয়ার সময় মশা নিধনে ব্যবহৃত ক্রিম সঙ্গে রাখতে পারেন।
৫. সন্ধ্যার পর বাড়ির ছোট থেকে বড় সদস্যরা মশারি ব্যবহার করুন।
৬. যেখানে-সেখানে জমে থাকা বৃষ্টির পানি পরিষ্কার করে ফেলুন, কারণ এতে এডিস মশা ডিম পেড়ে থাকে এই সময়।
৭. অপরদিকে মশার প্রকোপ থেকে বাঁচতে মশারির সঙ্গে সঙ্গে ম্যাট ব্যবহার করতে পারেন।
৮. এডিস মশা যেহেতু দিনের বেলা কামড়ায় তাই দিনের বেলায় ঘুমানোর সময় অবশ্যই মশারি টানিয়ে ঘুমানোর দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে। সূত্র: https://dmpnews.org