দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের মানুষ যে প্রতীক্ষায় দিন গুনছিলেন সেই কাঙ্খিত ফোনালাপে আসলে কি ছিল। সেদিন সংবাদ মাধ্যমে সংক্ষিপ্ত বিবরণী এসেছিল। আজ সব মিডিয়াতে বিস্তারিত অর্থাৎ পুরো আলাপচারিতা এসেছে (অডিও / ভিডিও)।
ওই ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী বার বার হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। খালেদা জিয়া হরতাল প্রত্যাহার করে আলোচনায় সাড়া দেননি। দুই নেত্রীর ফোনালাপের যে টেপটি প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে জানা গেছে এসব তথ্য।
বারবার প্রধানমন্ত্রী হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি কাল বক্তৃতায় কী বললেন, আর আজ কী বলছেন। আপনি রেকর্ড শুনে দেখেন। আপনি কাল আলটিমেটাম দিলেন। আমি সময়ের মধ্যে ফোন করলাম।’
ভিডিও
অডিও
[soundcloud url=”https://api.soundcloud.com/tracks/117506767″ width=”100%” height=”166″ iframe=”true” /]
প্রতি উত্তরে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘রেকর্ড শুনলেও’ তাঁর পক্ষে হরতাল প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়। ৩০ তারিখের আগে আলোচনা হবে না বলে তিনি জানান। বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বলেন, ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন, আপনি “স্টেপ ডাউন” (পদত্যাগ) করুন, তাহলে হরতাল প্রত্যাহার হবে।’
বেগম খালেদা জিয়া ফোনে আরও বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে ১৮-দলীয় জোটের নেতাদের পেছনে লাগিয়ে রেখেছেন। তাঁরা ঘর থেকে বেরোতে পারেন না। তাঁদের একত্রিত করে হরতাল প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা সম্ভব না। এ ছাড়া তিনি আলোচনা ও আন্দোলন একসঙ্গে চলবে বলে বক্তৃতায় জানিয়েছেন। ফলে হরতাল প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে না।’
ওই ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন খুব কম। বিরোধীদলীয় নেতা অনেকটা একতরফা কথা বলে গেছেন। খালেদা জিয়াকে একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনি তো আমার কথাই শুনছেন না।’ হরতাল প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার সময় ১৭৩ দিন হরতাল দিয়েছে। উত্তরে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জানান, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বিএনপি হরতাল দিয়েছিল ৩৭৩ দিন।
হরতালে সহিংসতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জ্বালাও-পোড়াও করার অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলের বিরুদ্ধে। উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে বাসে গানপাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, বিশ্বজিতকে হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা যখন ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার কথা তোলেন, তখন খালেদা জিয়া বলেন, তাঁর দল এ কাজ করেনি। হাসিনা আরও বলেন, বিশ্বজিতকে যারা কুপিয়েছিল, তাদের গ্রেফতার করা হয়েছে, তারা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সম্পৃক্ততা আছে।
এভাবে ৩৭ মিনিটের ফোনালাপে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া একে অপরকে শুধু দোষারোপ করে গেছেন। খালেদা জিয়া শেখ হাসিনাকে কোন কথা বলার সুযোগ দেননি। এভাবেই চলেছে পুরো ফোনালাপ। (বিস্তারিত জানার জন্য অডিও রেকর্ডিং সংযুক্ত করা হলো)।