দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ রাশিয়ার একেবারে পূর্বদিকে এক উপদ্বীপ কামচাটকা । আকারে দুই লক্ষ ৭০ হাজার বর্গ কিলোমিটার। মাঝারি আকারে উপদ্বীপটিতে তিন লাখ মানুষের বাস। সম্প্রতি দ্বীপটিতে জেগে ওঠা এক আগ্নেয়গিরি ক্রমাগত লাভা উদগিরণে গোটা দ্বীপটিই ঢেকে গেছে ছাইয়ে।
রাশিয়ার কামচাটকা উপদ্বীপের মধ্যে থাকা ১৬০টি আগ্নেয়গিরি দ্বীপটিকে বাইরের বিশ্বের কাছে আকর্ষণীয় করে তুলেছে। ১৬০টি আগ্নেয়গিরি ২৯টি বর্তমানে সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। এই সক্রিয় ২৯টি আগ্নেয়গিরির মধ্যে ১৯টিই ইউনেস্কোর ‘ওয়ার্ল্ড হেরিটেজ’ বা বিশ্ব ঐতিহ্যের তালিকার অন্তর্ভুক্ত।
কামচাটকা উপদ্বীপের সবচেয়ে উঁচু এবং সবচেয়ে বিখ্যাত আগ্নেয়গিরিটির নাম ক্লিউচেভোস্কোই আগ্নেয়গিরি। ১৫ হাজার ৫৮৪ ফিট উচ্চতার এই আগ্নেয়গিরিটিই সম্প্রতি লাগাতারভাবে লাভা উদগিরণ শুরু করেছে। চলতি বছরের আগস্ট মাসের মাঝামাঝি সময় থেকে এই লাভা উদগিরণ শুরু হয় যা ঐ মাসের ২১ তারিখ থামে। পরবর্তীতে অক্টোবরের ১২ তারিখ থেকে পুনরায় শুরু হয় লাভা উদগিরণ । ক্লিউচেভোস্কোইয়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অক্টোবরের ১১ তারিখ থেকে লাভার উদগিরণ শুরু করেছে ঐ অঞ্চলের ১০ হাজার ৭৭১ ফিট উঁচু শিভেলুচ আগ্নেয়গিরিও। আগ্নেয়গিরি বিষয়ক বার্তা সংস্থা ভলকানো ডিসকভারির কাছ থেকে পাওয়া শেষ খবর অনুযায়ী, ৩ নভেম্বরও আগ্নেয়গিরি দুইটি থেকে লাভা উদগিরণ চলছিল। ক্লিউচেভোস্কোই ও শিভেলুচের ভেতরের আগুন ক্রমাগত বাইরে ঠেলে দেয়ার এই প্রবণতা গোটা দ্বীপটিকেই ছাইয়ে ঢেকে ফেলেছে।
নাসার ল্যান্ডস্যাট ৮ স্যাটেলাইট থেকে তোলা ছবিতে সমুদ্রপৃষ্ঠের ৩২ হাজার ফিট উচ্চতায় ক্লিউচেভোস্কোইর ছুঁড়ে দেয়া লাভা ও ছাই পাওয়া গেছে। অক্টোবরের শেষ দিকেই ন্যালিচেভো ভ্যালি নামে কামচাটকার একটি ন্যাশনাল পার্ক আগ্নেয়গিরির ছুঁড়ে দেয়া ছাইয়ে অন্তত ১ মিলিমিটার পুরু ছাইয়ে ঢেকে যায়।
ক্লিউচেভোস্কোই আগ্নেয়গিরি ১৬৯৭ সালে প্রথম লাভা উদগিরণ শুরু করে বলে জানা যায়। আগ্নেয়গিরিটি জয় করতে গিয়ে লাভার উত্তাপে পড়ে অনেকেই প্রাণ হারিয়েছেন। ২০০৭ সাল থেকে এই আগ্নেয়গিরি নতুন করে একটি উদগিরণ চক্রে প্রবেশ করেছে। স্থানীয় আদিবাসীদের কয়েকটি গোষ্ঠী বিশ্বাস করে, ক্লিউচেভোস্কোই থেকে গোটা পৃথিবীর সৃষ্টি হয়েছে।
ভিডিওতে আগ্নেয়গিরি দেখুন:
ছবিতে আগ্নেয়গিরি দেখুন:
তথ্যসূত্র: ডেইলি মেইল, পপ সায়েন্স, ভলকানো ডিসকভারি