দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ দেশের জন্য এ বছরের নভেম্বর এক ক্রান্তিকাল। এ কঠিন সময় পার হবে কিভাবে তা কেওই জানে না। এদিকে বিএনপি নির্দলীয় সরকারের ইস্যু নিয়ে রাষ্ট্রপতির কাছে যাবে এমন খবর বেরিয়েছে।
দেশ পার করছে এক ক্রান্তিকাল। প্রতি সপ্তাহেই হরতাল-ধর্মঘটে সাধারণ মানুষ আজ দিশেহারা। পরীক্ষার তারিখ পেছাচ্ছে- উদ্বিগ্ন অভিভাবকরা। মিল, কল-কারখানায় উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে। সারাদেশের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থা বিকল হয়ে পড়ায় জিনিসপত্রের দাম বাড়ছে হু হু করে। এমন এক পরিস্থিতিতে দেশের মানুষ দিশেহারা।
প্রধানমন্ত্রীর টেলিফোন সংলাপের পর সবাই ভেবেছিলেন অন্তত কিছু একটা আলোচনা হবে- ফলাফল যায়ই হোক। কিন্তু সে সংলাপও পরে ভেস্তে গেলো। এমন পরিস্থিতিতে দেশে কি হবে। সহিংস আন্দোলন চলবে আর সরকার এক তরফা নির্বাচন করবে নাকি অন্য কিছু হবে এমন নানা জটিলতা মানুষের ঘুম হারাম করে দিয়েছে। হাজার হাজার কোটি টাকা প্রতিদিন লোকসান গুনতে হচ্ছে হরতালের কারণে। এ দায়িত্ব কে নেবেন- সরকারি দল না বিএনপি’র নেতৃত্বাধীন ১৮ জোট? এ প্রশ্ন এখন জনমনে।
এমন এক পরিস্থিতিতে বিএনপি নতুন করে রাষ্ট্রপতির স্মরণপন্ন হওয়ার কথা চিন্তা করছে। নির্বাচনকালীন সরকার গঠনে সমান সুযোগ চায় প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। তাই এ নিয়ে সংলাপের ব্যাপারে রাষ্ট্রপতি কিংবা স্পিকারের হস্তক্ষেপ চাইতে পারে দলটি। তবে এ ক্ষেত্রে স্পিকারের চেয়ে রাষ্ট্রপতির ওপর বেশি আস্থা বিএনপির। দলের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ের কয়েকজন নেতার সঙ্গে কথা বলে তাঁদের এমন মনোভাব জানা গেছে- এমন খবর দিয়েছে সংবাদ মাধ্যম।
অপরদিকে এ অচলাবস্থা নিরসনের লক্ষ্যে ব্যবসায়ী নেতারা উদ্যোগ নিলেও তা সফল হবে কি না সেটি নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। এ অবস্থায় সংকট নিরসনের জন্য রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাওয়ার কথা ভাবছে বিএনপি। দলের একাধিক নেতা জানান, বর্তমান পরিস্থিতিতে রাষ্ট্রপতি কোনো উদ্যোগ নিলে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়া হতে পারে।বিএনপির এক সিনিয়র নেতা বলেন, সরকার বিএনপির আন্দোলনকে গুরুত্ব দিচ্ছে না। একতরফা নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে। সরকারের এই একগুঁয়েমি নিয়ে বিএনপি ও ১৮ দলীয় জোটের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে। দলের অনেকেই মনে করছেন, প্রধানমন্ত্রী কোনো কথা শুনবেন না। এ অবস্থায় রাষ্ট্রপতি কিংবা স্পিকারের হস্তক্ষেপ চাওয়া যেতে পারে। রাষ্ট্রপতি ও স্পিকার দুজনই আওয়ামী লীগের লোক হলেও স্পিকারের চেয়ে তুলনামূলকভাবে রাষ্ট্রপতির প্রতি অনেক বিষয়ে নির্ভর করা যায়। রাষ্ট্রপতি দেশের অভিভাবক। সাংবিধানিক সংকট দেখা দিলে রাষ্ট্রপতির মাধ্যমে সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হয়ে থাকে। এ অবস্থায় শেষ মুহূর্তে রাষ্ট্রপতির হস্তক্ষেপ চাইতে পারে বিএনপি এমন ধারণা থেকেই উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে বলে সংবাদ মাধ্যম বলেছে।
সব মিলিয়ে বলা যায় এই নভেম্বরেই স্পষ্ট হবে, দেশ আসলে কোন দিকে যাচ্ছে। সংলাপের মাধ্যমে সমঝোতার দিকে, নাকি সংঘাতের পথে নির্বাচন। কেবল আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন জোট ও তাদের সমর্থকদের অংশগ্রহণে একতরফা হবে, নাকি সব দলের অংশগ্রহণে হবে তাও জানা যাবে এ সময়। নির্বাচনের তফসিলও এ মাসেই ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের আগে রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে চূড়ান্ত মেরুকরণও এ মাসের মধ্যেই হতে পারে।
সব মিলিয়ে এই নভেম্বর দেশের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়। এই সময় কিভাবে কিহবে তা নিয়ে শুধু দেশবাসী নয় বিশ্বের বন্ধু রাষ্ট্রগুলোও বেশ উদ্বিগ্ন। তারাও চান একটি শান্তিপূর্ণ সমাধানের মাধ্যমে সুষ্ঠু অবাধ গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে দেশ গণতন্ত্রের পথে চালিত হোক। এখন সময়ই বলে দেবে কি ঘটতে যাচ্ছে। আর দেশের মানুষের ভাগ্যে আসলে কি লেখা আছে তা সময়ই বলে দেবে।