আবারও বাংলাওয়াশ, আবারও নিউজিল্যান্ড, ইতিহাস গড়লো টাইগাররা। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে ৩০৭ রান তাড়া করতে নেমে নাইমের ৬৩, শামসুরের ৯৬ এবং শেষ মুহুর্তে নাসিরের ৪৪ রানে ৪ বল বাকী থাকতেই বাংলাদেশ করে ফেলে ৩০৯ রান।
সকালে টসে জিতে নতুন বলের মাশরাফি আর রুবেলকে খুব সহজে খেলে নিজেদের ভিত মজবুত করতে থাকেন নিউজিল্যান্ডের দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান অ্যালটন ডেভচিচ আর টম লাথাম। উদ্বোধনী জুটিতে ৬৬ রান যোগ করেন তাঁরা। ডেভচিচকে রাজ্জাকের ক্যাচে পরিণত করে দলকে ব্রেক থ্রু এনে দেন মাহমুদউল্লাহ। এরপর ১০১ রানে দ্রুত ৩ উইকেট পড়ে গেলেও রস টেলর আর কলিন মুনরো নিজেদের মধ্যে ১৩০ রানের জুটি গড়ে নিজিল্যান্ডকে শক্ত ভিত্তি এনে দেন।
৭৭ বলে ৭টি চার ও ২টি ছয়ে মুনরো খেলেন ৮৫ রানের দারুণ এক ইনিংস। তাকে মুশফিকের ক্যাচে পরিণত করে আবারও ব্রেকথ্রু এনে দেন মাহমুদুল্লাহ। যদিও অপরপ্রান্তে দাঁড়িয়ে টেলর শেষ মুহুর্তে ক্ষেপে ওঠেন। সোহাগ গাজীর এক ওভারে পরপর তিনটি ছক্কা মেরে করেন ৯৩ বলে অপরাজিত ১০৭ রান। দলকে ৩০৭ রানের বিশাল সংগ্রহ এনে দেন।
রুবেল, গাজী এবং রাজ্জাক একটি করে উইকেট লাভ করেন এবং মাহমুদুল্লাহ দুটি উইকেট পান।
ব্যাট করতে নেমে রান রেটের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ব্যাট চালাতে থাকেন জিয়াউর রহমান এবং শামসুর রহমান। মাত্র আট ওভারেই দুই উদ্বোধনী ব্যাটসম্যান দলকে এনে দেন ৬১ রানের ঝড়ো সংগ্রহ। ২০ বলে ২২ রান করে জিয়া আউট হলেও অপর প্রান্তে শামসুর রহমান শাসন করে যাচ্ছিলেন কিউই বোলারদের। ৩৩ বলে ৩২ রান করে তাঁকে যোগ্য সঙ্গ দেন মমিনুল। মমিনুলের পর অধিনায়ক মুশফিক দ্রুত ফিরে গেলেও প্রথম ম্যাচের মতো আবারও ব্যাট হাতে জ্বলে ওঠেন নাইম ইসলাম।
শামসুরের সাথে নাইম ৭৫ রানের কার্যকর জুটি গড়ে তোলেন যা কিউইদের ম্যাচ থেকে ছিটকে দেয়। সেঞ্চুরির আশায় থাকা শামসুর নার্ভাস নাইন্টিনের ফাঁদে পরে বিদায় নেন ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় ম্যাচেই ৯৬ রানের অসাধারণ ইনিংস খেলে। শামসুর বিদায় নিলেও নাইমের ঠান্ডা মাথার ৬৩ রান এবং নাসিরের যথাসময়ে ৪৪ রান বাংলাদেশকে ৪৯.২ ওভারেই তুলে নেয় ৩০৯ রানে জয়ের চূড়ায়। জয়সূচক রানটি অবশ্য এসেছে এবারের টেস্ট সিরিজের বিস্ময় সোহাগ গাজীর কাছ থেকে। ৪৯.২ তম বলে ৪ মেরে নিউজিল্যান্ডকে বাংলাদেশের জন্য রহস্য বানিয়ে ফেলেন! সেই ২০১০ থেকে নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে অপরাজিত বাংলাদেশ!
৯৬ রানের জয়ী ইনিংস খেলার জন্য ম্যান অব দ্য ম্যাচ নির্বাচিত হয়েছেন শামসুর রহমান। ম্যান অব দ্য সিরিজ হয়েছেন অধিনায়ক মুশফিকুর রহিম।
সংক্ষিপ্ত স্কোরঃ
নিউজিল্যান্ডঃ ৫০ ওভারে ৩০৭/৫ (ডেভসিচ ৪৬, ল্যাথাম ৪৩, এলিয়ট ৩, টেইলর ১০৭*, মানরো ৮৫, অ্যান্ডারসন ১, রঞ্চি ১৩*; মাহমুদুল্লাহ ২/৩৬, রুবেল ১/৩৮, রাজ্জাক ১/৫৭ সোহাগ ১/৬৭)
বাংলাদেশঃ ৪৯.২ ওভারে ওভারে ৩০৯/৬ (শামসুর ৯৬, জিয়া ২২, মুমিনুল ৩২, মুশফিকুর ২, নাঈম ৬৩, নাসির ৪৪*, মাহমুদুল্লাহ ১৬, সোহাগ ১১*; ম্যাকক্লেনাগান ২/৬৯, ডেভিসিচ ১/৩৬, নাথান ১/৪৪, কোরি ১/৫৬)