দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক॥ গত শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের উদ্বোধন ঘোষণা করেন, আয়তন এবং জীব বৈচিত্র্য দিক দিয়ে এটি এশিয়ার সর্ব বৃহৎ সাফারি পার্ক।
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের আয়তন ৩ হাজার ৬৯০ একর জমির উপর নির্মিত হয়েছে। এ পার্কের জমির সিংহভাগ সরকারী খাস জমি তবে ৫৫০ একর ব্যাক্তি মালিকানধীন ভূমি রয়েছে যার অধিকাংশ অধিগ্রহণ করা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকারের সর্বমোট ২৬৩ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়ছে। পার্কের প্রাথমিক কাজ শুরু হয়েছিল ২০১০ সালেই। এই সাফারি পার্ক ঘিরে বনও পরিবেশ মন্ত্রণালয় এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের বিশেষ মাস্টার প্ল্যান রয়েছে। প্রাথমিক ভাবে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক থাইল্যান্ডের সাফারি ওয়ার্ল্ড নামের সাফারি পার্ক’এর আদলে তৈরি করার পরিকল্পনা নিলেও বর্তমানে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্ক আয়তনে এশিয়ার সর্ববৃহৎ সাফারি পার্কের মর্যাদা পেয়েছে।
গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে নানান জীব বৈচিত্র্য দিয়ে পরিপূর্ণ থাকবে বলে কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন। এখানে নানান প্রাণীর মাঝে বাঘ, সিংহ, সাদা সিংহ, ভল্লুক, চিত্রা হরিণ, মায়া হরিণ, সাম্বার হরিণ, জেব্রা, জিরাফ, ওয়াইল্ডিবিস্ট, ব্লেসবক উটপাখি, ইমু প্রভৃতি ইতোমধ্যে মুক্ত পরিবেশে বিচরণ করছে।
পশুপাখির আলাদা আলাদা পার্কও স্থাপন করা হচ্ছে এই সাফারি পার্কে, যেমন বাটারফ্লাই পার্ক, মেরিন একোয়ারিয়াম, কুমির পার্ক, লিজার্ড পার্ক, ফেনসি ডাক গার্ডেন, ক্রাউন ফিজেন্ট এভিয়ারি, প্যারট এভিয়ারি, ধনেশ পাখিশালা, ম্যাকাউ ল্যান্ড, এলিফ্যান্ট শো গ্যালারি, বার্ড শো গ্যালারি ইত্যাদি।
এছাড়া বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে থাকছে আলাদা পশু হাসপাতাল! সেখানে সকল প্রাণীর চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। এখানে আলাদা প্রাণী গবেষণা কেন্দ্রও স্থাপন করা হবে এবং এখান থাকে পাখি সহ দেশের নানান প্রাণী নিয়ে বিস্তারিত গবেষণা এবং বংশ বিস্তারের বিষয়ে বিস্তারিত পদক্ষেপ নেয়া হবে।
দর্শনার্থীদের জন্য থাকছে এখানে আলাদা রিসোর্ট, হোটেল রেস্তরাঁ এবং প্রাণী পর্যবেক্ষণ টাওয়ার। বাঘ, সিংহ সহ ভয়ংকর প্রাণী পর্যবেক্ষণে রয়েছে বিশেষ পর্যবেক্ষণ টাওয়ার সহ নানান সুবিধা। এছাড়া বেড়াতে আসা শিশুদের জন্য থাকবে শিশু পার্ক। সম্পূর্ণ সাফারি পার্কের উম্মুক্ত জীব বৈচিত্র্য ঘুরে দেখার জন্য থাকছে মিনি কোচ সার্ভিস। অর্থাৎ ডিসকভারি চ্যানেলে যেমন সাফারি জিপ দেখা যায় ঠিক তেমন সাফারি জিপে করে পার্ক ভ্রমণের সু-ব্যবস্থা
এবার চলুন জেনে নি সাফারি পার্কের প্রবেশ ফি কেমন রাখা হয়ছেঃ
- প্রতিজন বয়স্কঃ ৫০টাকা
- অপ্রাপ্ত বয়স্কঃ ২০ টাকা
- শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিজনঃ ১০ টাকা
- শিক্ষা সফরে আসা শিক্ষার্থী গ্রুপ ৪০-১০০ জনঃ ৪০০ টাকা
- শিক্ষা সফরে আগত শিক্ষার্থী গ্রুপ ১০০ জনের বেশি হলেঃ ৮০০ টাকা
- বিদেশি পর্যটক প্রতিজনঃ ৫ ডলার
এবার চলুন পার্কে প্রবেশের পর সাথে নিয়ে যাওয়া কিংবা ভাড়াতে বিভিন্ন গাড়িতে করে পার্কে ঘুরে বেড়াতে যে ফি আপনাকে দিতে হবেঃ
- প্রতিটি বাস/কোচ/ট্রাকঃ ২০০ টাকা
- মিনিবাস/ মাইক্রোবাসঃ ১০০ টাকা
- কার/জিপঃ ৬০ টাকা,
- অটোরিকশাঃ ২০ টাকা
আপনার সাথে যদি গাড়ি না থাকে আপনি যদি একা হন তবে পার্কের গাড়িতে অর্থাৎ সাফারি জিপে করে পার্ক ঘুরে দেখতে আপনার যে ফি লাগবেঃ
- অপ্রাপ্ত বয়স্ক প্রতিজনঃ ৫০ টাকা
- বয়স্ক প্রতিজনঃ ১০০ টাকা
এবার চলুন জেনে নিই যেভাবে আপনি গাজীপুরের বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে যেতে পারবেনঃ
ঢাকা থেকে বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কের দূরত্ব মাত্র ৪০ কিলোমিটার। আপনি দেশের যেকোনো বিভাগ থেকে প্রথমে ঢাকা গিয়ে সেখান থেকে গাজীপুরের বাসে করে গাজীপুরের শ্রীপুরের ইন্দ্রপুর (বাঘেরবাজার) এলাকায় বঙ্গবন্ধু সাফারি পার্কে চলে আসতে পারেন। আর শিক্ষা সফর সহ পিকনিক সংঘ হিসেবে আসতে চাইলে তো কোন সমস্যাই নেই সেক্ষেত্রে আপনি বাস মিনিবাস ভারা নিয়ে দেশের যেকোনো প্রান্ত থেকেই চলে আসতে পারেন এশিয়ার বৃহত্তম এই সাফারি পার্ক দর্শনে।
পার্ক বন্ধের সময়ঃ সরকারী ছুটির দিন ছাড়া যেকোনো দিন আপনি পার্ক ভ্রমণ করতে পারেন।
প্রধান ছবির জন্য বিশেষ ধন্যবাদঃ বাংলা পিক্স