দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পূর্ব নির্ধারিত তারিখ অনুযায়ী পিলখানা হত্যা মামলার রায়ের জন্য আজ দিন ধার্য থাকলেও রায় স্থগিত করে আগামী ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করা হবে।
গত ২০ অক্টোবর যুক্তিতর্ক শেষে আজ ৩০ অক্টোবর বুধবার রায়ের দিন ধার্য করেন ঢাকার তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক ড. মো. আখতারুজ্জামান। পরে নিরাপত্তা জনিত কারণ দেখিয়ে আজ রায় না দিয়ে ৫ নভেম্বর রায় দেওয়া হবে বলে জানানো হয়েছে।
এদিকে এই রায় উপলক্ষে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার ও আদালতকে কেন্দ্র করে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। নিরাপত্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, যাঁরা বিডিআরের নিজস্ব আইনে দায়ের করা বিদ্রোহ মামলায় সাজা ভোগ করে এখন গ্রামের বাড়িতে আছেন, তাঁদের ওপর সংশ্লিষ্ট থানা-পুলিশ ও গোয়েন্দারা নজর রাখছেন। বিজিবি মহাপরিচালক মেজর জেনারেল আজিজ আহমেদ গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে সংবাদ মাধ্যমকে বলেন, ‘এ রায়ের জন্য সবাই উদ্গ্রীব।’ গত ২০ অক্টোবর মামলার যুক্তিতর্ক শেষ হওয়ার পর বিচারক রায় লেখা শুরু করেন বলে জানা গেছে। অনেকে মনে করেন, এত অল্পসময়ে ৮৪৬ জন আসামির বিষয়ে রায় লেখা কষ্টসাধ্য।
পিলখানা হত্যাকাণ্ড ঘটনায় লালবাগ থানা-পুলিশ বাদী হয়ে পিলখানায় হত্যা, নির্যাতন, লুটপাট, অগ্নিসংযোগসহ বিভিন্ন অভিযোগে লালবাগ থানায় মামলা দায়ের করে। পরে মামলাটি নিউ মার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। মামলার তদন্তভার পায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। তদন্ত শেষে সিআইডি ২০১০ সালের ১২ জুলাই ৮২৪ জনকে অভিযুক্ত করে আদালতে চার্জশিট দেয়। পরে সম্পূরক চার্জশিটে আরো ২৬ জনকে যোগ করা হয়। এতে আসামির সংখ্যা দাঁড়ায় ৮৫০ জনে। তাঁদের মধ্যে ২০ জন পলাতক। চারজন মারা গেছেন। বর্তমানে ৮১৩ জন আসামি কারাগারে রয়েছেন। আর ১৩ জন জামিনে আছেন। আসামিদের মধ্যে চারজন মহিলাসহ ২৩ জন বিডিআরের বাইরের লোক। তাঁদের মধ্যে বিএনপি নেতা নাসির উদ্দিন আহমেদ পিন্টু এবং আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীও রয়েছেন। মামলা পরিচালনার জন্য বকশি বাজারের উমেশ দত্ত রোডের আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন মাঠে ভবন তৈরি করে আদালত বসানো হয়। সেখানে ২০১১ সালের ৫ জানুয়ারি বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। সূত্র জানায়, পিলখানা হত্যা মামলায় সাক্ষী ছিলেন এক হাজার ২৮৭ জন। সাক্ষীদের মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষে মামলা তদন্তকারী সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার আবদুল কাহার আকন্দসহ ৬৫৪ জন সাক্ষ্য দিয়েছেন।
এ মামলার বিচারিক কার্যক্রম শুরু করেছিলেন ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. জহুরুল হক। সংশ্লিষ্ট আইনজীবীরা জানান, গত সেপ্টেম্বরে জুডিশিয়াল অর্ডারে মামলাটি মহানগর দায়রা জজ আদালত থেকে তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ আদালতে পাঠানো হয়। তখন থেকে মামলার বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করছেন অতিরিক্ত দায়রা জজ ড. মো. আখতারুজ্জামান। মামলার শুরুর দিকে জহুরুল হকের ছুটির সময়ে তিনি কিছুদিন আদালতের কার্যক্রম চালিয়েছেন।
উল্লেখ্য, ২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি বিডিআর (বর্তমানে বিজিবি) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহের ঘটনায় ৫৭ জন সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন নিহত হন। বাংলাদেশের ইতিহাসে একসঙ্গে এতো সেনা কর্মকর্তা হত্যার ঘটনা দেশবাসীকে স্তম্ভিত করে।