দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল আবদুল কাদের মোল্লাকে ফাঁসির দণ্ড দিয়ে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পূর্ণাঙ্গ রায় লেখা শেষ হয়েছে। পূর্ণাঙ্গ রায় দেয়া হবে যে কোন দিন।
রায় লেখা শেষ হলেও এখনো খসড়া পর্যায়ে রয়েছে। এই খসড়া চূড়ান্ত করে তাতে ৫ বিচারপতি স্বাক্ষর করার পর তা প্রকাশ করা হবে। অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান গতকাল রবিবার সাংবাদিকদের বলেন, ‘কাদের মোল্লার ফাঁসির পূর্ণাঙ্গ রায় লেখা সম্পন্ন হয়েছে। আশা করি, দু-এক দিনের মধ্যে এ রায় প্রকাশিত হবে।’
ওই রায়ে মৃত্যুদণ্ডাদেশের সঙ্গে দ্বিমত পোষণকারী আপিল বিভাগের বিচারপতি মোঃ আব্দুল ওয়াহাব মিঞা তার রায় গতকাল রোববার জমা দিয়েছেন বলে আদালত সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন। যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে প্রসিকিউটরদের সমন্বয়ক অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল এম কে রহমান বলেছেন, পূর্ণাঙ্গ রায় লেখা শেষ হয়েছে। উন্মুক্ত আদালতে রায় ঘোষণার ৬৮ দিন পর এই রায় লেখা শেষ হলো।
কাদের মোল্লার রায় প্রদানকারী ৫ বিচারপতির বেঞ্চে প্রধান বিচারপতি নেতৃত্ব দিলেও মূল রায়টি লিখেছেন বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। অপরদিকে এই রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করলেও আলাদা মতামত দিয়েছেন বিচারপতি এস কে সিনহা। প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন এবং বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন মূল রায়ের সঙ্গে একমত পোষণ করেন। একাধিক বিচারক রায় লিখলে লেখা শেষ হওয়ার পর নিয়ম অনুসারে প্রধান বিচারপতি তা একত্রিত করেন। এরপর চূড়ান্ত অনুলিপিতে সব বিচারকের স্বাক্ষর নিয়ে তা প্রকাশ করা হয়।
এর আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর প্রধান বিচারপতি মোজাম্মেল হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির বেঞ্চ এই মামলার রায় ঘোষণা করেন। সংখ্যাগরিষ্ঠতার ভিত্তিতে দেয়া এই রায়ে কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ডাদেশের পক্ষে ছিলেন প্রধান বিচারপতি মোঃ মোজাম্মেল হোসেন, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন, বিচারপতি এস কে সিনহা, বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী। অন্যদিকে বিচারপতি মোঃ আবদুল ওয়াহহাব মিঞা এই রায়ের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করেন। শুরম্নর দিকে বিচারপতি ছিদ্দিকুর রহমান মিয়া এই বেঞ্চে থাকলেও শুনানি চলাকালে তিনি অবসরে চলে যান।
উল্লেখ্য, ৫ ফেব্রুয়ারি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের রায়ে জামায়াতে ইসলামী নেতা কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হয়েছিল। এর প্রতিবাদে শাহবাগে গণজাগরণ মঞ্চ লাগাতার আন্দোলন শুরু হয়। আন্দোলন ছড়িয়ে পড়ে সারা দেশব্যাপী। এ অবস্থায় সরকার আইন সংশোধনের মাধ্যমে অপর্যাপ্ত সাজার বিরুদ্ধে সরকারের আপিল করার সুযোগ সৃষ্টি করে। প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ৫ বিচারপতির মধ্যে ৪ বিচারপতি কাদের মোল্লার মৃত্যুদণ্ড দিয়ে রায় দেন। একজন তাঁদের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড বহাল রাখেন।