দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে বহু দ্বীপ রয়েছে তবে সব দ্বীপের কাহিনী অবশ্য আমাদের জানা নেই। আজ নতুন একটি দ্বীপের কাহিনী আপনাদের সামনে তুলে ধরা হবে। নতুন এই দ্বীপের নাম নিজিমা দ্বীপ।
এই নিজিমা দ্বীপ পৃথিবীর সবচেয়ে নতুন প্রাকৃতিক দ্বীপ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছে। প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে পৃথিবী। হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর এই পরিবর্তন ঘটে চলেছে। এমন একসময় ছিল যখন পৃথিবীর কোথায় কি ঘটছে তা মানুষের পক্ষে জানা সম্ভব ছিল না। বর্তমানে আধুনিক প্রযুক্তির উৎকর্ষে পৃথিবীর কোন কিছুই মানুষের কাছে অজানা থাকে না। ঠিক তেমনিভাবে এড়িয়ে যায়নি নিজিমা দ্বীপও। নতুন এই দ্বীপের কাহিনী উঠে এসেছে মানুষের হাতের নাগালে।
গত বছর নভেম্বরের শেষের দিকে একটি অগ্ন্যুৎপাত শুরু হয়। এই অগ্ন্যুৎপাতের জায়গাটা জাপানের রাজধানী টোকিও থেকে ৬শ’ মাইল দক্ষিণে, ওগাসাওয়ারা দ্বীপপুঞ্জের মাঝে। এটি প্রশান্ত মহাসাগরে। প্রশান্ত মহাসাগরের ওই জায়গাটা আগুনের গোলক নামেও পরিচিত। সেখানে পৃথিবীর সবচেয়ে বেশি অগ্ন্যুৎপাত ও ভূমিকম্প হয়ে থাকে। প্রশান্ত মহাসাগরের একটা বিশেষ এলাকা এটি। অগ্ন্যুৎপাতের পর ২০ নভেম্বর ওই এলাকায় সাগরের বুক চিরে জন্ম নিয়েছে একেবারে নতুন একটি স্থলভাগ। স্থানীয়রা এর নাম রেখেছেন নিজিমা দ্বীপ।
জন্মের সময় নিজিমার আকার বেশ ছোট ছিল। কিন্তু দিন দিন সে আকার বেড়েই চলেছে। শুরুতে এটি ছিল ১৪ একর আয়তনের একটা দ্বীপ। এখন আরো বেড়ে গেছে। আরো তিন গুণ বড় হয়ে গেছে খুব অল্প সময়ের মধ্যে।
এই দ্বীপ সম্পর্কে জানা যায়, সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ২৫ মিটার। নাসার আর্থ অবজারভেটরি থেকে এবং জাপানের কোস্ট গার্ডদের তোলা এই দ্বীপের ছবি সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে। নাসার বলেছে, অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্টি হওয়া খনিজ, গ্যাস এবং সাগরের পলিমাটির কারণে এই দ্বীপের আশপাশের পানির রং নাকি পরিবর্তিত হয়ে গেছে। আর এই দ্বীপের মধ্য এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের ওপরে সাদা ধোঁয়ার কারণও সম্ভবত আগ্নেয়গিরি থেকে উঠে আসা বিভিন্ন গ্যাস এবং বাষ্পর কারণে।
দ্বীপের জন্ম হবার ঘটনা হয়তো নতুন কিছু নয়। নিজিমা যেখানে সাগরের বুক থেকে উঠে এসেছে, তার কাছেই রয়েছে নিশিনো-শিমা নামের আরেকটি দ্বীপ যার উৎপত্তি হয় ১৯৭৩ সালে। কিন্তু একটি ঘটনা হলো, এমনভাবে তৈরি হওয়া দ্বীপগুলো অনেক সময়েই বিলীন হয়ে যায়। এসব দ্বীপ সাগরের জলের আঘাতে ক্ষয় হয়ে যায় কিন্বা এই দ্বীপের ভারে সাগরতল ডেবে যায় এবং তখন দ্বীপ ডুবে যায়। তবে নিজিমাকে দেখে জাপান মিটিওরলজি এজেন্সির বিজ্ঞানীরা বলছেন, এই দ্বীপ হয়তো টিকে থাকতেও পারে। তারা বলেছেন, কমপক্ষে দুই বছর হবে এর আয়ু।
পৃথিবীকে স্থবির হিসেবে ভাবলেও পৃথিবীটা মোটেও স্থবির নয়। পৃথিবীকে বলা যায়, প্রাণীর মতোই সজীব ও সচল এবং ভীষণ গতিশীলও। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন সময় যত গবেষণা করেছেন, তার ফল কখনও বৃথা যায়নি। বিজ্ঞানীদের মত অনুযায়ী নিজিমা দ্বীপ যদি সত্যিই দীর্ঘস্থায়ী হয় তাহলে আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। তথ্যসূত্র: দৈনিক যুগান্তর অনলাইন।