দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বিএনপি তথা ১৮ দল নতুন কৌশল খুঁজছে। আন্দোলনকে বেগবান করতে ১৮ দলীয় জোটের প্রধান দল বিএনপি এমন উদ্যোগ নিয়েছে।
৫ জানুয়ারি আওয়ামীলীগ নতুন নির্বাচনের মাধ্যমে সরকার গঠন করেছে। যে কারণে আপাতত ধীরে চলো নীতিতে এগিয়ে যাচ্ছে ১৮ দল। হরতাল-অবরোধের মতো কঠিক কোন কর্মসূচি তারা আপাতত দিচ্ছে না। তবে আগামীতে নতুন করে আন্দোলনের চিন্তা-ভাবনা রয়েছে ১৮ দলের। আর সে জন্যেই নতুন কৌশল খোঁজা হচ্ছে।
আন্দোলনের নতুন চিন্তা-ধারাকে সামনে নিয়ে বিএনপির নীতি নির্ধারকদের মধ্যেও আলোচনা হচ্ছে। কিভাবে আগামীতে আন্দোলন বেগবান করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছে।
বিএনপির একটি সূত্র জানায়, যেনো-তেনোভাবে নির্বাচন করে সরকার ৫ বছর ক্ষমতায় থাকার চিন্তা-ভাবনা করছে। তবে বিএনপিও বসে নেই। সরকারের এমন নীতির বিরুদ্ধে জনমত সৃষ্টি করে আন্দোলনকে বেগবান করতে বেশ কিছু কৌশল নিয়ে চিন্তা-ভাবনা করা হচ্ছে। তবে কি ধরণের কৌশল তা এখনও বলা হয়নি। বিষয়গুলো পরে পরিষ্কার হবে বলে ওই সূত্র বলেছে।
এদিকে নতুন সরকার গঠন করার পর হরতাল-অবরোধ প্রত্যাহার করার কারণে দেশের সার্বিক পরিস্থিতি এখন স্বাভাবিক। জনমনে একটা স্বস্থি ফিরে এসেছে। তবে সে স্বস্থি কতদিন স্থায়ী হবে তা নিয়ে জনমনে নানা আশংকা রয়েছে।
এদিকে আন্তর্জাতিক মহল নিয়ে বিএনপি বেশ সমস্যায় রয়েছে। দশম নির্বাচনের আগে আন্তর্জাতিক মহল পুরোপুরিভাবে বিএনপিকে সমর্থন করেছে। কিন্তু হঠাৎ করেই আন্তর্জাতিক মহল কেনো সরকারের পক্ষ নিলো তা নিয়ে বিএনপির মধ্যে চিন্তার কারণ হয়ে দেখা দিয়েছে। যুক্তরাষ্ট্র, ইইউসহ বেশ কিছু আন্তর্জাতিক সংস্থা ও দেশ বর্তমান সরকারকে ইতিমধ্যেই সমর্থন দিয়েছে।
এ বিষয়ে একটি জাতীয় দৈনিকে বলা হয়েছে, “আন্তর্জাতিক মহলের কাছে খবর রয়েছে বিএনপি জামায়াত জোট ক্ষমতায় আসলে তারা হেফাজতের ১৩ দফা কর্মসূচি বাস্তবায়ন করবে। সেটা করতে গিয়ে তারা এই রাষ্ট্রকে একটি ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত করবে। এছাড়াও তাদের সরকারের আমলে জঙ্গিবাদ প্রসারিত হবে। এই খবরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য, ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ সব দেশই চিন্তিত। তারা এই দেশে কোনোভাবেই জঙ্গিবাদের প্রসার দেখতে চাইছে না। অন্যদিকে তারা এটাও মনে করছেন যে, বাংলাদেশে জঙ্গিবাদ প্রসারিত হলে ও ইসলামী রাষ্ট্রে পরিণত হলেও এটা নিয়ে সমস্যা হবে। এই কারণে তারা জামায়াতে ইসলামকে ত্যাগ করার জন্য বলেছে বিএনপিকে। বিএনপি কৌশলগত কারণেই জামায়াতকে দূরে রাখছে।”
এসব বক্তব্যের পক্ষে বেশ কিছু প্রমাণও মিলেছে। সোহরাওয়ার্দীর সমাবেশে জামায়াতকে দূরে রাখা এটিও একটি কারণ। সরাসরি বিএনপি বলে, ‘ওই গণসমাবেশ বিএনপির, জামায়াতে ইসলামী থাকবে না’ বলে ঘোষণা দেয় বিএনপি। সমাবেশেও জামায়াতের কোন ব্যানার দেখা যায়নি।
এমন নানা বিশ্লেষণ থেকে বোঝা যাচ্ছে বিএনপি নতুন পথে হাটার চেষ্টা করছে। কারণ বিগত আন্দোলন সফল হয়তি জামায়াতে ইসলামীর সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের কারণে। সন্ত্রাস যেই করুক না কেনো আন্দোলনকারীদের উপর তা বর্তায়। কারণ জনগণ কখনও সন্ত্রাসী আন্দোলনের বিপক্ষে। তত্ত্বাবধায়ক ইস্যুটির সঙ্গে জনগণ পুরোপুরি একমত। কিন্তু সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের জন্য আন্দোলনে জনসম্পৃক্ততা সেভাবে দেখা যায়নি।
এমন অবস্থায় আন্দোলনকে আবার চাঙ্গা করতে বিএনপি নতুনভাবে এগিয়ে যাওয়ার চিন্তা-ভাবনা করছে। ভবিষ্যতে যাতে আন্দোলন সঠিক পদ্ধতিতে চলে সে বিষয়ে নানা কৌশল নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার চিন্তা করছে বিএনপি। এ বিষয়গুলো নিয়ে একাধিক বৈঠক হয়েছে এবং সামনে আরও আলোচনা হবে বলে বিএনপির সূত্রগুলো উল্লেখ করেছে। তবে সামনের দিনগুলোতে সবকিছু পরিষ্কার হবে জনগণের সামনে। সে জন্য এখন অপেক্ষা করতে হবে।