দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ প্রত্নতত্ত্ববিদেরা মিশরের দক্ষিণাঞ্চলে প্রাচীন এদফু শহরের নিকটে ৪৬০০ বছরের পুরনো একটি ধাপ পিরামিড খুঁজে পেয়েছে। গিজার বড় পিরামিডকে এতদিন যাবত সবচেয়ে প্রাচীন মনে করা হত। এটিকে গিজার বড় পিরামিডের আরো কয়েক দশক আগে তৈরি করা হয়েছিল বলে মনে করা হচ্ছে।
ধারণা করা হয় ফারাও রাজা ফারাও হুনি অথবা ফারাও নেফ্রুর রাজত্তে ধাপ পিরামিড গুলো প্রাদেশিক কাজে নির্মাণ করা হয়েছিল। এগুলো প্রায় ৪৩ ফুট (১৩ মিটার) উঁচু হয়ে থাকে। বিভিন্ন সময় ধাপ পিরামিডের পাথরের গুড়িগুলো লুঠ হয়ে গেছে এবং সৃতিস্থম্ভ গুলো তুষারপাতে ঢাকা পড়ে গেছে। ফলে এখন এটি দেখতে মাত্র ১৬ ফুট লম্বা।
মিশরের মধ্য ও দক্ষিণাঞ্চলে বিক্ষিপ্তভাবে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা এই পিরামিডগুলো প্রধান প্রধান অঞ্চল ঘিরে তৈরি করা হয়েছিল। এগুলোর ভেতরে নেই কোন গুপ্তকক্ষ এবং এগুলো মৃতদেহ সমাহিত করার জন্যও ব্যবহৃত হয়নি। সত্যিকার অর্থে সাতটি পিরামিডের তাৎপর্য আজও রহস্যময়। এগুলো হয়তো কোন রাজকীয় আর্চনায় প্রতীকী সৃতিস্থম্ভ হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল।
নতুন করে আবিষ্কৃত এই পিরামিডটিতে উৎসর্গের জন্য বিভিন্নরকম খাদ্য দেখতে পেয়েছেন প্রত্নতত্ত্ববিদেরা। তারা মনে করেন, এগুলো তাদের এই পিরামিডগুলো তৈরির উদ্দেশ্য বুঝতে সাহায্য করবে।
প্রত্নতত্ত্ববিদরা এর ভেতর খোদাই করা অনেকগুলো হায়ারোগ্লিফিক নকশা আবিস্কার করেছেন। এই গুপ্তসংকেত গুলো মূলত প্রকাশ করছে পিরামিডের পাদতলে রয়েছে শিশুদের সমাহিত করার স্থান। কিন্তু গবেষকরা মনে করেন, গুপ্ত সংকেত গুলো এই পিরামিড তৈরির অনেক পরে লেখা হয় এবং সংকেতগুলো মূল সমাধিস্থলকে নির্দেশ করছে না।
২০১০ সালে এই স্থানে খোঁড়াখুঁড়ির আগ পর্যন্ত গবেষকরা এই ধাপ পিরামিডের অস্তিত্ব সম্পর্কে জানতেনই না। একটি পুরু কাদামাটির স্তরে ঢাকা বেলেপাথরের গুড়ি থেকে এটি আবিষ্কৃত হয়। এটি দেখতে পিরামিডের মতো মনে হত না। এমনকি নিকটবর্তী গ্রামের লোকেরা একে স্থানীয় একজন বুজুর্গ মুসলিম ব্যক্তির কবর হিসেবে জানতো।
কাদামাটি আর বেলেপাথরের গুড়ি দ্বারা এটি নির্মিত। এর অবকাঠামো তিন ধাপের- কেন্দ্রস্থলটি উল্লম্বভাবে ঊর্ধ্বগামী আর বাকি দুটি ধাপ একটির উপর আরেকটি পাশাপাশি অবস্থিত। এটি দেখতে অনেকটা ফারাও জোসের তৈরি ধাপ পিরামিড গুলোর মতো। ফারাও জোসে মিশরে প্রথম পিরামিড নির্মাণ করেছিলেন। তিনি ছিলেন প্রাচীন মিশরের তৃতীয় রাজবংশের ফারাও। গবেষকরা মনে করেন এই ধাপ পিরামিডটি মাটি দ্বারা তৈরি নিরেট প্রস্তর এবং স্থানীয় কাঁচামাল দ্বারা নির্মিত। এই ধরনের বেলেপাথর গুলো এই পিরামিড থেকে ৮০০ মাইল উত্তরে ২০১১ সালে আবিষ্কৃত হয়।
মিশর আশ্চর্য এক দেশ। এদেশে আরো কত পিরামিড আর পিরামিডের অজানা তথ্য লুকিয়ে আছে তাই এখন দেখার বিষয়।
সুত্রঃ Discovery