দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে মৃত্যু মানুষের জন্য অবধারিত একটি বিষয়। কিন্তু মাঝে-মধ্যে এমন কিছু মৃত্যুর ঘটনা আমাদের সামনে আসে যেগুলোকে কেওই মেনে নিতে পারেন না। বেনাপোলের ৭ স্কুল শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনাও ঠিক তেমনই একটি ঘটনা। যা শুধু বেনাপোল নয় সমগ্র দেশবাসীকে নাড়া দিয়েছে।
বেনাপোলে ৭ ছাত্রের মৃত্যু ঘটনা এবং আত্মীয়স্বজন এবং এলাকাবাসীর আর্তনাদ টিভিতে দেখে দেশের প্রতিটি মানুষের মনেই দাগ কেটেছে। কেওই যেনো এমন মৃত্যুকে মেনে নিতে পারেন নি। সবার মনেই আঘাত হেনেছে বিষয়টি। জন্ম হলেই মানুষকে মরতে হয় সেটি সকলেই জানেন। কিন্তু সেই মৃত্যু যদি স্বাভাবিক হয় তাহলে সেটি নিয়ে কারও কোনও আক্ষেপ থাকে না। কিন্তু কিছু কিছু মৃত্যু সমাজকে, দেশকে, দেশের মানুষকে নাড়া দেয়। এমনই ঘটনা বেনাপোলের এই ঘটনা।
যশোরের চৌগাছায় সড়ক দুর্ঘটনায় নিহতদের জন্য কাঁদছে বেনাপোল, কাঁদছে পুরো বাংলাদেশ। বেনাপোলের ছোটআচড়া এবং গাজীপুরে চলছে স্বজনহারাদের বুক ফাটা আর্তনাদ। এদের সান্ত্বনা দেওয়ার ভাষা কারও নেই। যে বা যারাই চেষ্টা করছেন তারাই নিজের চোখের পানি সামলাতে পারছেন না। অঝোরে কাঁদছেন সকলেই। বাসাবাড়ির মতো স্কুলগুলোতেও চলছে একইভাবে শোকের মাতম। সহপাঠীকে হারিয়ে বেদনার্ত বেনাপোল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। নির্বাক ওই স্কুলের শিক্ষকরা। শোকের এক জনপদে পরিণত হয়েছে বেনাপোল। চলছে ঘরে ঘরে কান্না। মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় ৭ শিশুকে হারিয়ে এবং আহত ৪২ জন সঙ্গীর ব্যথায় শোকে হত বিহ্বল বন্দর নগরী বেনাপোলের মানুষ। কিছুতেই যেনো সতীর্থ ও স্বজনদের আহাজারি থামছে না।
বেনাপোল সহ শার্শা উপজেলার ১২৬টি স্কুলে দোয়া মাহফিল, আলোচনা ও নিহতের স্মরণে ১ মিনিট নীরবতা পালন করা হয়েছে। বেনাপোলে চলছে ৩ দিনের শোক। গতকাল সোমবার সকাল ১০টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় দ্বিতীয় দিনের কর্মসূচি। এ্যাসেম্বলির পর এক মিনিট নীরবতা পালন করে দোয়া অনুষ্ঠান শুরু হয়। অনুষ্ঠানে দুর্ঘটনায় আহত শিক্ষার্থী, অভিভাবক সহ শার্শা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার অহেদুল ইসলাম সহ বিশিষ্টজনেরা।
অপরদিকে পিকনিকের বাস দুর্ঘটনায় আহত ১৪ শিশুকে যশোর সিএমএইচ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। তাদের মধ্যে ১২ জন আশংকামুক্ত। বাকি ২ জন একরামুল (৯) ও আরমান (১১)-এর অবস্থা এখনও শঙ্কাযুক্ত বলে জানিয়েছেন হাসপাতাল সূত্র। তবে আহতদের চিকিৎসায় যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।
হয়তো একদিন আহতরাও সুস্থ্য হবে। সব কিছু আবারও স্বাভাবিক হবে কিন্তু যে ক্ষত তৈরি হলো তা রয়েছে যাবে আজীবনের জন্য। অবোধ শিশুরা আনন্দ করতে গিয়ে যে সড়ক দুর্ঘটনার শিকার হলেন তার প্রতিকার করাই এখন জরুরি। আর যেনো কাওকে এমন নির্মমতার শিকার হতে না হয় সেটিই সকলকে নিশ্চিত করতে হবে।