ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আবারও কি সক্রিয় হয়ে উঠছে নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলো? রাজধানীর পান্থপথের একটি রেস্টুরেন্ট থেকে গতকাল ১৩ আগস্ট নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠন হিযবুত তাহরীরের ৩৫ সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
জানা যায়, সামপ্রতিক সময়ে এসব নিষিদ্ধ ঘোষিত সংগঠনগুলোর কর্মকাণ্ড আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। বিভিন্ন গ্রেফতার করা হলেও জামিন পেয়েই ওরা আবারও নিষিদ্ধ সংগঠন হিযবুত তাহরীরের কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে। প্রচারণার জন্য রাজধানীর পান্থপথে একটি রেষ্টুরেন্টে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করে হিযবুত তাহরীর। আর এই মাহফিলে হিযবুত তাহরীরের ওপর আলোচনা করেন বিভিন্ন বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও রাজধানীর বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত কর্মকর্তারা। ইফতার মাহফিলে আলোচনা সভার সময় হানা দেয় র্যাব। গ্রেফতার করে ৩৫ জনকে।
গতকাল ১৩ আগস্ট হিযবুত তাহরীরের এই ৩৫ জন সক্রিয় কর্মীকে র্যাব সদর দফতরে সাংবাদিকদের সামনে হাজির করা হয়। র্যাবের মিডিয়া এ্যান্ড লিগ্যাল শাখার পরিচালক কমান্ডার হাজী মোহাম্মদ সোহায়েল জানান, এরা জামিনে বের হয়ে এসে আবারও হিযবুত তাহরীরের কার্যক্রমের সঙ্গে সম্পৃক্ত হচ্ছে।
র্যাবের পরিচালক আরও জানান, পান্থপথের ৬৯/বি, গ্রীণরোডস্থ মনোয়ারা প্লাজার আসিয়ানা রেষ্টুরেন্টে ইফতার মাহফিলের নামে গোপনে সাংগঠনিক সেমিনারের আয়োজন করে। পরে সেখানে অভিযান চালিয়ে ৩৫ জন হিযবুত তাহরীর সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। গ্রেফতারকৃতদের দেয়া তথ্য অনুযায়ী র্যাব রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে হিযবুত তাহরীর সাংগঠনিক কাজে ব্যবহৃত বিপুল পরিমাণ সাংগঠনিক বই, ম্যাগাজিন, লিফলেট, মাসিক সাংগঠনিক পত্রিকা, সাংগঠনিক কাজে ব্যবহৃত ডিজিটাল ক্যামেরা, ল্যাপটপ, সিডি, পেন ড্রাইভ, মোটর সাইকেল, অনেকগুলো মোবাইল সেট ও সীম কার্ড উদ্ধার করা হয়।
গ্রেফতারকৃতরা হলো, বাংলাদেশ ব্যাংকের উপ-পরিচালক নজিবুল হক ও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মনোবিজ্ঞান বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক মেহেজাবিন হকের ছেলে মেহরীয়র হক (১৯), রুপালী ব্যাংকের ডিজিএম সৈয়দ আফরোজের ছেলে ইব্রাহীম আফরোজ অপু (৩০), খিলক্ষেতের আরিফা এ্যাগ্রোর ম্যানেজার কামরুজ্জামান বাচ্চু (৩৭), ফার্মগেটের বাইসন টেকনোলজির ম্যানেজার সোহান হাফিজ (৩০), ঢাকা ডেন্টাল কলেজের তৃতীয় বর্ষের ছাত্র মোর্শেদুল আলম সুজন (২১), হলি ফ্যামিলি রেড ক্রিসেন্ট মেডিক্যাল কলেজের শেষ বর্ষের ছাত্র সোহেল রানা (২৬), গাজীপুরের ইন্টারস্ট্রোফ গার্মেন্টসের ম্যানেজার সাইফ মাহমুদ (২৮), বনানীর দি নিউ স্কুলের শিক্ষক আবু সুফিয়ান শিপু (৩০), আইএসএইচএস সিকিউরিটি কোম্পানীর কর্মকর্তা নূরুজ্জামান চৌধুরী মাসুম (৩৩), বেসরকারি ওয়ার্ল্ড ইউনিভার্সিটির লেকচারার কামরুল হাসান (২৮), শাকিল রিজভি স্টেপের ম্যানেজার মহসিন (৩০), সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান বিভাগ থেকে সম্প্রতি পাস করা মীর নজরুল ইসলাম (২৮), বেসরকারি অতীশ দীপঙ্কর ইউনিভার্সিটির ল্যাব অফিসার আব্দুল জব্বার রাজিব (২৫), ভিশন গ্লোবাল স্কুলের শিক্ষক জাহিদুর রহমান রবিন (২৯), ধানমন্ডি জুনিয়র ল্যাবরেটরি স্কুলের শিক্ষক রোকনুজ্জামান রোকন (৩০), নিটল মোটরসের ম্যানেজার শাহিনুল ইসলাম সজল (৩০), বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা সাদেকুল ইসলাম ভুঁইয়া (২৪), জুয়েল আহম্মেদ (৩২), মনিরুজ্জামান লাভলু (২১), রাব্বি মিয়া (২০), ফয়সাল আহমেদ (২৪), এমএ আজিজ রতন (২২), এফএ সাফফাত রহমান ফাহিম (২২), আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ শাহিন (২০), নাঈম আল মামুন (১৮), সাজ্জাদ হোসাইন (১৮), তাহমিদ আফসারী আকিক (১৮), ফারাবী আহমেদ রসি (২০), এসএম শামসুল হুদা অমিত (১৮), নজমুল হক (১৮),ফুয়াদ মোহাম্মদ আঃ মুইজ (২২), ফারহাবী ইসলাম সিয়াম (১৮), সাকিব আল হাসান (২০), শরিফুল ইসলাম (১৮) ও আব্দুল্লাহ আল ফারুকী (২০)।
ধারণা করা হচ্ছে, নিষিদ্ধ ঘোষিত হিজবত তাহরীর নতুন কোন পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আর সেই উদ্যেশেই তারা একত্রিত হয়েছিল। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। তবে ঘটনা যাই হোক নিষিদ্ধ ঘোষিত এসব সংগঠনগুলো দেশে যেনো আর কোন ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করতে না পারে সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা একান্ত প্রয়োজন।