দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের প্রথম নারী উপাচার্য হিসেবে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) দায়িত্ব পেয়েছেন নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম। সিনেটের দেয়া উপাচার্য প্যানেল থেকে তাকেই তিনি এই নিয়োগ পেয়েছেন। ছাত্র-ছাত্রীদের প্রত্যাশা কতখানি পূরণ হবে সেটিই দেখার বিষয়।
বাংলাদেশের কোন সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে নারীকে নিয়োগের এটিই প্রথম। দেশের প্রধানমন্ত্রী থেকে বিরোধী দলীয় নেত্রী, স্পিকার, বিচারক প্রায় ক্ষেত্রেই নারী রয়েছেন। তাঁরা দায়িত্বও পালন করছেন যথাযথভাবে। তবে কোন সর্বোচ্চ বিদ্যাপিঠে এবারই প্রথম নারী ভিসি নিয়োগ পেলেন। বিশেষ করে জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয়ে এই নিয়োগে একটি বিশেষ মাত্রা যোগ হয়েছে। কারণ জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ব বিদ্যালয়ে বিগত কয়েকটি নিয়োগে ব্যাপক সমালোচনা হয়েছে। বার বার শিক্ষক ও ছাত্র-ছাত্রীদের আন্দোলন এই বিদ্যাপিঠের শিক্ষার পরিবেশ বিনষ্ট হচ্ছে। তবে এবার একজন নারীকে নিয়োগ দেওয়ায় অনেকেই মনে করছেন এখানকার শিক্ষার পরিবেশ ফিরে আসবে। সকলকে সমানভাবে মর্যাদা দিয়ে নিরপেক্ষভাবে প্রশাসনিক সকল কার্যক্রম পরিচালনা করবেন নতুন ভিসি এটিই আশা করছেন শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী ও তাদের অবিভাবকরা।
এদিকে এই নিয়োগ পাওয়ার খবরে অধ্যাপক ফারজানা বলেছেন, ‘আমি দায়িত্ব পেয়েছি। আমরা দল-মত নির্বিশেষে সকলে মিলে জাহাঙ্গীরনগরকে একটি সুন্দর বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলবো।’
গতকাল রবিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক আদেশে বলা হয়, অধ্যাপক ফারজানাকে ৪ বছরের জন্য জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ দেয়া হয়েছে। একই আদেশে অধ্যাপক এম. এ. মতিনকে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্যের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে এবং পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আবুল হোসেনকে দেয়া হয়েছে উপ-উপাচার্যের দায়িত্ব।
উল্লেখ্য, গত বছরের অধিকাংশ সময়ই কার্যত অচল ছিল সাভারে অবস্থিত দেশের একমাত্র আবাসিক বিশ্ববিদ্যালয়টি। ২০১২ সালের জানুয়ারিতে ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী জুবায়ের আহমেদ হত্যার বিচার দাবি এবং ঢালাওভাবে শিক্ষক নিয়োগের প্রতিবাদে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে অধ্যাপক শরীফ এনামুল কবির উপাচার্য পদ ছাড়েন। ওই বছরের ২০ মে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
বিভিন্ন দাবিতে শিক্ষকদের লাগাতার আন্দোলনের মুখে গত ৫ ডিসেম্বর পুলিশ পাহারায় জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় ছাড়েন অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন। ক্যাম্পাসের বাইরে থেকেই গত ১৩ জানুয়ারি পদত্যাগ করেন অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন।
গত ২০ ফেব্রম্নয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় সিনেট ভোটাভুটির মাধ্যমে অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম, অধ্যাপক আবুল হোসেন ও অধ্যাপক আমির হোসেনের নাম প্রস্তাব করে। ভোটাভুটিতে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক আবুল হোসেন ও নৃ-বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক ফারজানা পান ৪০ ভোট এবং অর্থনীতির অধ্যাপক আমির ৩৩ ভোট পান। পরে লটারি করে ফারজানা ইসলামকে প্রথম ঘোষণা করা হয়।