দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্যাপকভাবে জনপ্রিয় অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রমের প্লাটফর্ম খান একাডেমী যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ বোর্ডের সাথে একটি অংশীদারী চুক্তি গ্রহণ করেছে। চুক্তি অনুসারে খান একাডেমী যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ভর্তি প্রিপারেশনের জন্য উন্মুক্ত সফটওয়্যার তৈরি করবে।
কলেজ বোর্ডের জন্য স্যাট এডমিশন টেস্টের প্রশ্ন খুঁটিয়ে দেখা বেশ যন্ত্রণাদায়ক ছিল। এছাড়াও স্যাট প্রিপারেশনটি ব্য্যবহুল হওয়ায় বিত্তশালী শিক্ষার্থীরা এটি গ্রহণ করতে পারতো। খান একাডেমী এরসাথে যুক্ত হওয়ায় এটি এখন সর্বসাধারণের পথ সুগম করবে। যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ বোর্ড মনে করে খান একাডেমী এরসাথে যুক্ত হওয়ার ফলে বাস্তববুদ্ধিসম্পন্ন প্রস্তুতি প্রশ্ন তৈরি হবে এবং তা শিক্ষার্থীদের জন্য ভালো ফল বয়ে আনবে।
“সফলতার বড় চিত্রটি হল এখন থেকে আপনাকে আয়ের উপর নির্ভরতা কমিয়ে মেধার উপর নির্ভরতা বাড়াতে হবে” নিজেদের এই অর্জনকে এইভাবে মূল্যায়ন করেন খান একাডেমীর প্রতিষ্ঠাতা সালমান খান। তিনি আরো বলেন, “আমরা ক্লাসের সর্বোত্তম উন্মুক্ত টুলসের মাধ্যমে সকলের জন্য সমান ক্ষেত্র সৃষ্টি করতে পারবো বলে আশা করি। সিলিকন ভ্যালির উল্লেখযোগ্য মানবহিতৈষীদের দানের ভিত্তিতে সালমান একাডেমী ইউটিউব সিরিজ থেকে পুরোপুরি নিজের আলাদা একটি প্লাটফর্ম দাড় করান। ২০১৫ সালের টেস্ট প্রিপারেশনের জন্য তারা এমন একটি সফটওয়্যার আনছে যেখান থেকে শিক্ষার্থীরা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাথে পরীক্ষার মাধ্যমে নিজেদের দুর্বলতা খুজে বের করবে এবং ধাপে ধাপে সেটি কাটিয়ে উঠার পথ খুজে পাবে।
যুক্তরাষ্ট্রের কলেজ ভর্তির ক্ষেত্রে নিম্ন আয়ের ৩৪ শতাংশ শিক্ষার্থীর মাত্র একভাগ দেশের সেরা কলেজে ভর্তির সুযোগ পায়। কলেজগুলোতে প্রায় ৭৮ শতাংশ শিক্ষার্থী বিত্তশালী অবস্থান সম্পন্ন। এর পেছনে কারণ হল কলেজ প্রিপারেশনের ব্যয়বহুলতা। যুক্তরাষ্ট্রে কলেজ ভর্তি প্রিপারেশনের জন্য বিত্তশালী শিক্ষার্থিদের অভিভাবক প্রায় হাজার ডলার ব্যয় করে থাকেন, যা নিম্ন আয়ের শিক্ষার্থিদের ক্ষেত্রে প্রায় অসম্ভব। ব্যয়ের বেশিভাগটাই চলে যায় তৃতীয় কোন প্রতিষ্ঠানের হাতে যারা কলেজ ভর্তি প্রিপারেশন করিয়ে থাকে, অনেকটা বাংলাদেশের ভার্সিটি ভর্তি কোচিং এর মতো। মেধার এই অসাম্যতা কাটিয়ে উঠার লক্ষ্যে কলেজ বোর্ড এই পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে।
খান একাডেমীর এই অর্জনের মধ্যে দুটি সমস্যা সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে যা যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিশেষজ্ঞদের চিন্তার বিষয়। তারমধ্যে প্রথমটি হল দ্রুতগতির ইন্টারনেট। যুক্তরাষ্ট্রের সকল জায়গায় এখনো দ্রুতগতির ইন্টারনেট আসেনি ফলে সেসকল স্থানের শিক্ষার্থীরা কিভাবে এর সুফল পাবে তা এখনো প্রশ্নবিদ্ধ। এছাড়াও কলেজ ভর্তির ক্ষেত্রে কলেজ বোর্ড লেখনী শক্তির উপর জোরালো নজর রাখতো কিন্তু অনলাইন এই কার্যক্রমে তা কিভাবে কার্যকর হবে শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা সে বিষয়ে চিন্তিত। এতকিছুর পরও আশার বাণী হিসেবে যুক্তরাষ্ট্রের শিক্ষা বিশেষজ্ঞরা মনে করেন এতে তৃণমূল পর্যায়ের মেধাবীদের তুলে আনা যাবে।
উল্লেখ্য যে, খান একাডেমী ২০০৬ সালে এমআইটি গ্র্যাজুয়েট সালমান খান কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত একটি অলাভজনক অনলাইন শিক্ষা কার্যক্রম প্রতিষ্ঠান। প্রথমদিকে এটি ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম চালাতো, পরবর্তিতে এটি সম্পূর্ণ আলাদা ওয়েবসাইটের মাধ্যমে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করে। বর্তমানে এরসাথে যুক্ত আছে টেকজায়ান্ট গুগল ও মাইক্রোসফট।
তথ্যসূত্রঃ টেকক্রাঞ্চ