দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ জাপানের কানসাই শহরের সমুদ্রের বুকে একটি কৃত্রিম দ্বীপে বিস্ময়কর বিমানবন্দর অবস্থিত। কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর নামে এটি পরিচিত। ওসাকা উপসাগরের মাঝামাঝি সাগরের বুকে কৃত্রিম দ্বীপ তৈরি করে এটি নির্মাণ করা হয়েছে।
ইতালিয়ান স্থপতি রেনযো পিয়ানো এর নকশা করেন। ৪ সেপ্টেম্বর ১৯৯৪ সালে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের উদ্ভোধন করা হয়। ওসাকা বিমানবন্দরের অতিমাত্রায় ভিড় থেকে মুক্তি লাঘবের জন্য কানসাইতে এই বিমানবন্দরটি তৈরি করা হয়। জাপানের অন্যতম ব্যস্ত একটি এয়ারপোর্ট বর্তমানে কানসাই, কারণ এতে প্রতি সপ্তাহে ৪৯৯টি ফ্লাইট আসা-যাওয়া করে এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া এবং ইউরোপ থেকে।
১৯৬০ সালে কানসাই শহরের সাথে টোকিওর বাণিজ্য কমে গেলে নতুন একটি বিমানবন্দরের পরিকল্পনা করে কর্তৃপক্ষ। ওসাকা বিমানবন্দরকে বাড়ানো যাচ্ছিল না কিংবা তার আশেপাশেও নির্মাণ করা যাচ্ছিল না কারণ এতে পরিবেশ দূষণের সম্ভাবনা বাড়বে। বিকল্প কোন ব্যবস্থার চিন্তা থেকে সমুদ্রের বুকে তৈরি করা হয় এই বিমানবন্দর।
স্থাপত্য নিয়ে আরো পড়ুনঃ চীনে মাটির গভীরে নির্মাণ করা হচ্ছে বিলাসবহুল পাঁচতারা হোটেল!
কৃত্রিম দ্বীপটি ৪ কিলোমিটার লম্বা এবং ২.৫ কিলোমিটার চওড়া। প্রকৌশলীরা একে এমনভাবে নির্মাণ করেন যেন ভূমিকম্প কিংবা টাইফুনে ঝুঁকির মধ্যে না পড়ে। দ্বীপ নির্মাণের কাজ শুরু হয় ১৯৮৭ সালে শেষ হয় ১৯৮৯ সালে। দ্বীপটি নির্মাণ করা হয় ৪৮০০০ কংক্রিটের ব্লক দ্বারা। ১৯৯৫ সালের ভূমিকম্পে সামান্য কিছু ক্ষতি ছাড়া বিমানবন্দরটি তেমন কিছুই হয়নি। এটি নির্মাণে ব্যয় হয় প্রায় ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। সমুদ্রের বুকে থাকা এই বিমানবন্দরে যাওয়ার জন্য রয়েছে রেল, বাস যোগাযোগ মাধ্যম। দ্বীপের মাঝে অবস্থিত বলে মনে করবেন না এতে আধুনিক জীবনের সুযোগ সুবিধা নেই, একটি আধুনিক বিমানবন্দরের যে সকল সুযোগ সুবিধা থেকে থাকে তার সবটাই পাবেন। এতে রয়েছে তিনটি টার্মিনাল। বর্তমানে এর সাথে কার্গো অপারেশন ব্যবস্থাও যুক্ত করা হয়েছে।
কৃত্রিম দ্বীপের মাঝে বিমানবন্দর একটি অসাধারণ স্থাপত্য নিদর্শন। পরিবেশ রক্ষার তাগিদে তারা এই বিশালাকার ঝুঁকিপূর্ণ বিমানবন্দর নির্মাণ পরিকল্পনায় হাত দিয়েছিল। বর্তমানে যার সুফলতা পাচ্ছে জাপানের ওসাকাবাসী।
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া