দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাতরোগ আমাদের একটি বড় সমস্যা। এই বাতরোগ ও তা নিরাময় কিভাবে করা যায় সে বিষয়ে জানার জন্যই এই আলোচনা।
বাতরোগ এবং ব্যথা একে অপরের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে জড়িত। যার বাতরোগ আছে তার ব্যথা রয়েছে। তবে শুধু যে ব্যথা থাকলেই যে বাতরোগ থাকবে তার কোন নিশ্চয়তা নেই। সামান্য একটু আঘাত লাগলেও ব্যথা হতে পারে। যা কোন বাতরোগ নয়। বাতরোগ বয়ষ্কদের সাধারণত বেশি দেখা যায়।
মেডিসিনের বিখ্যাত লেখক ও বিজ্ঞানী স্যার স্ট্যালিন ডেবিডসনের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের শতকরা ৪০ জন বয়ষ্ক মানুষ কোন না কোন বাত জাতীয় রোগে ভুগছেন। বাংলাদেশে এই রোগীর অগণিত।
এই পর্যায়ে আমরা প্রধান কয়েকটি বাতরোগের নিরাময়ের উপর আলোচনা করবো।
রিউমাটয়েড আর্থাইটিস
এই বাতজনিত রোগ সাধারণত ৩০/৩৫ বছর মহিলাদের হয়ে থাকে। তবে অনেক পুরুষেরও এই রোগ দেখা যায়। এই রোগ হলে হাত ও পায়ে ছোট ছোট গিরাগুলো ব্যথা করে এবং ফুলে যায়। ব্যথা সাধারণত সকালে ঘুম থেকে উঠলে বেশি অনুভূত হয় এবং এই সময় জোড়াগুলো শক্ত শক্ত মনে হয়। প্রাথমিকভাবে এই রোগীকে কিছু ব্যথানাশক ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া রোগীর উপযুক্ত পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে প্রয়োজনীয় ওষুধ দেওয়া হয়, যাতে রোগী পঙ্গুত্ব হতে রেহায় পেতে পারে। ওষুধের পাশাপাশি কুসুম গরম পানি স্যাক বা ওয়াটার বাথ দেওয়া ও চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যায়াম করা প্রয়োজন।
অস্টিও আর্থাইটিস
এটি সাধারণত বড় বড় জোড়া এবং মেরুদণ্ডের মধ্যেকার হাড়ে হয়ে থাকে। অর্থাৎ হাঁটুর গোড়ালী, কোমর, ঘাড় ও অন্যান্য বড় বড় জোড়ায় বেশি হতে দেখা যায়। চিকিৎসার ক্ষেত্রে প্রথমত রোগের ইতিহাস জেনে ভালোভাবে পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করতে হবে। এবং নির্দিষ্ট কারণ অনুযায়ী চিকিৎসা করতে হবে। এক্ষেত্রে চিকিৎসা নির্ভর করে রোগীর শরীরে কোন্ অংশ আক্রান্ত হয়েছে তার উপর। তবে ব্যাথানাশক হিসেবে প্যারাসিটামল জাতীয় ওষুধ দেওয়া যেতে পারে। তাছাড়া ব্যায়াম, ফিজিক্যাল থেরাপি এবং কিছু নিয়ম-কানুন পালন করলে এই রোগ পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণ না হলেও কিছু নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব।
গাউট বা গেটে বাত
গেটে বাত সাধারণত অল্প বয়সী পুরুষ ও বেশি বয়েসি মহিলাদের হয়ে থাকে। এটি সাধারণত ধনি পরিবারে বেশি দেখা যায়। কারণ যারা বেশি পরিমাণে প্রোটিন জাতীয় বা পিউরিণ সমৃদ্ধ খাবার খান তাদের বেশি হয় এই রোগ। এই নিরাময়ের জন্য ব্যাথানাশক ওষুধ যেমন ইনডোম্যাথাসিন বেশ কার্যকর। তাছাড়া চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এলুপিউরিনল ওষুধ সেবন করা যেতে পারে। এই রোগীদের পিউরিনস্ সমৃদ্ধ সমৃদ্ধ খাবার যেমন কবুতরের মাংস, হাঁসের মাংস, গরুর লাল মাংস সামুদ্রিক মাছ, মাছের ডিম, ছোট মাছ, মগজ, কলিজা, পুঁইশাক, ফুলকপি ও সিমের বিচি বর্জন করা উচিত। পরবর্তীতে বাতরোগ সম্পর্কে আরও আলোচনা করা যাবে।