দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে সংগঠিত শাহবাগের গণজাগরণ মঞ্চ অবশেষে রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে যাচ্ছে! এমন আভাস দিয়েছেন গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার।
গতকাল রবিবার বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ইমরান এইচ সরকার রাজনৈতিক দল গঠনের এমন মনোভাব ব্যক্ত করেছেন।
মূলত শাহাবাগে প্রজন্ম চত্ত্বরে যুদ্ধাপরাধীদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিল গণজাগরন মঞ্চ। শুরু থেকেই এই সংগঠনটি সরকারের সমর্থন এবং পুলিশি নিরাপত্তা পেয়ে আসছিলেন। কিন্তু হঠাৎ করে যেনো পাল্টে যায় প্রেক্ষাপট। গত কয়েকদিনের ঘটনায় বোঝা যায় সরকারের সমর্থন হারিয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ। যে পুলিশ এতোদিন তাদের পাহারা দিয়েছিল সেই পুলিশই বেধড়কভাবে তাদের ওপর চড়াও হয়। সরকারের এমন মনোভাবে অবশ্য শুধু গণজাগরণই নয়, দেশের সাধারণ মানুষও স্তম্ভিত! কারণ মিছিল মিটিং করার অধিকার সকলেরই রয়েছে। তাছাড়া যেভাবে পুলিশ আক্রমণ করেছে গণজাগরণ মঞ্চের কর্মীদের ওপর তাতে যে কেওই বলবেন, গণতান্ত্রিক দেশে এটি অগ্রহণযোগ্য। ছাত্রলীগের সঙ্গে মূলত শুরু হয় বিবাদ। আর এই বিবাদে পরে জড়িয়ে পড়ে সরকারের পুলিশ।
এমন এক পরিস্থিতিতে সরকারের কিছু সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেছেন মঞ্চের মূখপাত্র ড: ইমরান এইচ সরকার। অবশ্য এ বিষয়ে ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটির প্রধান শাহরিয়ার কবির বলেছেন, সরকারের সহযোগিতায় কোন আন্দোলন হয় না।
গণজাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র সংবাদ মাধ্যমকে তার প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে বলেছেন, আমরা সরকারের কাছে এমনটি আশা করিনি। রাজনৈতিক দল হিসেবে গণজাগরণ মঞ্চ প্রকাশ পাবে কিনা সাংবাদিকদের এমন এক প্রশ্নের জবাবে ইমরান এইচ সরকার বলেছেন, এটি আসলে সময়ের দাবি। জনগণই নির্ধারণ করবে তারা কি চান। তাঁর কথায় পরিষ্কার হয়েছে গণজাগরণ মঞ্চ অচিরেই রাজনৈতিক দল হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে পারে।
তবে গণজাগরণ মঞ্চের মূল ইসু যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিটি রাজনৈতিক মঞ্চে নিয়ে গিয়ে কতখানি সফলতা আসবে সে বিষয়ে সন্দেহ থেকেই যাচ্ছে। কারণ অরাজনৈতিক সংগঠন হিসেবে অনেকেই গণজাগরণ মঞ্চকে সমর্থন করলেও রাজনৈতিক লেবাস পরলে তাদের কাছে ভিড়তে অসুবিধা হলেও হতে পারে বলে রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা মনে করছেন।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালের ৫ ফেব্রম্নয়ারী কাদের মোল্লার সর্বোচ্চ ফাঁসির দাবিতে জড়ো হয় এক দল তরুণ ব্লগাররা। বিকেল গড়িয়ে রাত, আর রাত গড়িয়ে সকাল। বাড়তে থাকে জনস্রোত পরিণত হয় জনসমুদ্রে। দলমত নির্বিশেষে সবােই জড়ো হয় শাহবাগে। আর স্বতঃস্ফুর্ত এমন একটি আন্দোলনের সাথে ছিল সরকার ও এতে সহযোগিতা করেছে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী।