ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বাংলাদেশের মানুষ মোবাইল ব্যবহারে এমনই পাগল হয়েছে যে, ডজনকে ডজন মোবাইলের সিম কার্ড কিনে পকেট ভরে রাখে। যখন যে সিমের ভালো অফার আসে তখন সেটি ব্যবহার করে। কিন্বা যাকে যে সিম থেকে রিং করার দরকার তখন সেটি ব্যবহার করে থাকে। কিন্তু এবার বাধ সেধেছে বিটিআরসি। তারা নিয়ম করতে যাচ্ছে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ সিম একজন মানুষ কিনতে পারবে।
জানা গেছে, শীঘ্রই বন্ধ হতে যাচ্ছে ব্যক্তি পর্যায়ে ইচ্ছে মতো সিম কেনার সুযোগ। অবৈধভাবে ভিওআইপি ব্যবসা বন্ধসহ নানা অপরাধ কাজে সিমের অপব্যবহার রোধ করতে একটি অপারেটর থেকে সর্বোচ্চ ৪টি সিম কেনার সুযোগ রেখে নতুন একটি নীতিমালা করতে যাচ্ছে টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রক সংস্থা- বিটিআরসি।
গ্রাহকরা যেন আগামীতে ইচ্ছে মতো সিম কিনতে না পারে সেজন্য ইতিমধ্যে একটি খসড়া নীতিমালাও করা হয়েছে। নীতিমালায় একজন গ্রাহককে একটি অপারেটর থেকে সর্বোচ্চ চারটি সিম কেনার সুযোগ দেয়া হচ্ছে। আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই নীতিমালাটি সরকারের অনুমোদনের জন্যে টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হবে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি’র ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গিয়াসউদ্দিন আহমেদ। খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে, একজন গ্রাহক একেকটি অপারেটর থেকে সর্বোচ্চ চারটি সিম কিনতে পারবেন। আর এই নীতিমালাটি অনুমোদন পেলে দেশে বিদ্যমান ছয়টি অপারেটর থেকে চারটি করে সর্বোচ্চ ২৪টি সিম কেনার সুযোগ পাবেন একজন গ্রাহক। তবে প্রতিষ্ঠান পর্যায়ে সিম কেনার সংখ্যায় কোনো বিধি-নিষেধ আনা হচ্ছে না বলে জানাগেছে। ফলে কোনো প্রতিষ্ঠানের নামে সিম কেনা হলে ওই গ্রাহক এই নিয়মের মধ্যে পড়বেন না।
এদিকে সর্বোচ্চ ২৪টি সিম কেনার সুযোগও অতিরিক্ত বলে মনে করেন বিটিআরসি’র অনেক কর্মকর্তা। তাই এই সংখ্যা আরো কমানোর পক্ষে তারা। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক কয়েকজন কর্মকর্তার মতে, এক অপারেটর থেকে চারটি সিমসহ মোট সর্বোচ্চ দশটি সিম কেনার সুযোগই যথেষ্ট। কেননা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই একজন ব্যক্তির জন্য দশটি সিমের প্রয়োজন নেই। তবে ১৮ বছরের কম বয়সিদের সিম কেনার ক্ষেত্রে বিধি নিষিধ থাকায় যেহেতু তাদের জন্য অভিভাবকদের নিজেদের নামে সিম তুলতে হয় এমন কথা মাথায় রেখেই সিম কেনার সুযোগ একটু বেশি রাখা হয়েছে বলে জানিয়েছেন বিটিআরসি’র অপর এক কর্মকর্তা।
গ্রাহক পর্যায়ে সিম কেনার সংখ্যা সীমিত করার এই নীতিমালা ও যুক্তির সঙ্গে একমত নন মোবাইল ফোন অপারেটররা। তাদের মতে, এমন নীতিমালা পুরো সেক্টরের প্রবৃদ্ধির ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলবে। এটা গ্রাহকদের ব্যক্তি স্বাধীনতারও খেলাপ বলে মনে করেন এদের অনেকেই। অবশ্য এমন কথা মানতে নারাজ বিটিআরসি কর্তৃপক্ষ। তাদের মতে, সম্প্রতি বিটিআরসিসহ অন্যান্য আইনশৃংখলা বাহিনীর অভিযানে অবৈধ কার্যক্রমে ব্যবহৃত যেসব সিম ধরা পড়েছে সেগুলোর মধ্যে শত শত সিম একেকজনের নামে নিবন্ধন করেছে বলে প্রতীয়মান হয়েছে। আর তাই আগামীতে যেন গণহারে সিম কিনে তা অপরাধমূলক কার্যক্রমে যাতে ব্যবহার না হয় তার জন্যে এ বিষয়ে নিয়মের একটু পরিবর্তন করা হচ্ছে।অপরাধীদের জন্যে কাজটি সমান্য কঠিন করতেই এই নীতিমালা করা হচ্ছে। আর এই নীতিমালা বাস্তবায়িত কলে প্রকৃত গ্রাহকরা মোটেই ক্ষতিগ্রস্ত হবেন না।