দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গবেষকরা বলছেন ফেসবুকে দীর্ঘসময় বন্ধুদের সেলফি দেখলে নিজের ভেতরে একধরনের অনিরাপত্তা মনোভাব সৃষ্টি করতে পারে। বিশেষকরে মেয়েদের উপর এই প্রভাব নেতিবাচক আকারে প্রভাব বিস্তার করতে পারে।
সেলফি হলো নিজের হাতে তোলা নিজের অবয়ব। মেয়েরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোতে সেলফি বা নিজেদের ছবি বেশি দিয়ে থাকে। তারা আবার ছেলেদের তুলনায় নিজেদের সেলফির সাথে অন্যদের সেলফির তুলনাও বেশি করে থাকে। বন্ধুদের ছবি বেশি প্রভাবিত করে কেননা পরিচিতদের মধ্যে আপনি তাদেরই বেশি চিনে থাকেন।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের দৃষ্টিগোচরতা নিয়ে কেমন প্রভাব তৈরি হয় তা নিয়ে খুব কমই গবেষণা হয়েছে। কিন্তু গণমাধ্যমে নিজের পরিচিত নিজের ভেতর কেমন প্রভাব ফেলে তা নিয়ে অনেক গবেষণা ইতোমধ্যে হয়ে গিয়েছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোর জনপ্রিয়তার সবচেয়ে বড় কারণ হলো নিজেদের পরিচিত করে তোলা কিংবা সহজভাবে নিজেদের প্রকাশ করতে পারা। যুক্তরাষ্ট্রের মনঃচিকিৎসকরা বলেন,’খ্যাতি সবাইকে প্রভাবিত করে আর এটি অর্জন করতেও সবাই চায়। সেলিব্রেটি হওয়া ছাড়া সবচেয়ে সহজ যে মাধ্যমে আপনি নিজেকে অন্যের দৃষ্টিগোচর করতে পারবেন তা হলো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম।’
কিশোর কিশোরীদের একটা বৃহৎ অংশই সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমের সাথে জড়িত। শৈশবের একটি ধাপ পেরিয়ে তারা যখন বয়ঃসন্ধিতে পদার্পন করে তখন মানসিকতার আকস্মিক পরিবর্তনে তারাই সবচেয়ে বেশি উৎফুল্ল এবং উদ্বেলিত থাকে। ফলে বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমই হলো তাদের সেই সময়ের সবচেয়ে ভালো একটি মাধ্যম যেখানে তারা নিজেদের প্রকাশ করে। তারা তাদের সেলফি দিয়ে নিজের প্রতি মানুষের আসক্তির প্রভাব বুঝতে চেষ্টা করে।
ইউনিভার্সিটি অব ওহিও এর ৮৮১ জন কলেজ ছাত্রীর উপর গবেষণা করে এই তথ্যগুলো জানা গিয়েছে। তাদের ফেসবুক ব্যবহারের সময়, সামাজিক জীবনে ফেসবুকের প্রভাব এবং নিজেদের ছবি নিয়ে প্রশ্ন করা হয়েছিল। গবেষকরা সিয়াটলে কনফারেন্সের মাধ্যমে গবেষণার বিষয়টি তুলে ধরেন। তারা বলেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের প্রতি এই আসক্তি তাদের জীবনযাত্রায় যতটা না প্রভাব ফেলে তার চেয়ে বেশি নিজেদের ছবি সম্পর্কে মন্তব্য কিংবা এর দৃষ্টিগোচরতা বেশি প্রভাব ফেলে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে মেয়েরা ছেলেদের চেয়ে বেশি সময় কাটায় এবং তারা সবচেয়ে বেশি নিজেদের ছবি নিয়ে অন্যদের সাথে তুলনা করে। যার ফলশ্রুতিতে নিজেদের শারীরিক গঠন নিয়ে নেতিবাচক মনোভাব সৃষ্টি হতে পারে বলে মনে করেন গবেষকরা।
শারীরিক ওজন এবং গঠন বর্তমান সংস্কৃতির একটি জনপ্রিয় অংশ। বিশেষকরে সেলিব্রেটিদের শারীরিক গঠন অর্জন করতে গিয়ে অনেকেই দুর্বল শরীরের অধিকারী হচ্ছেন। যা মেয়েদের পরবর্তী সময়ে মাতৃস্বাস্থ্যে বিরুপ প্রভাব ফেলবে।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি