দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মোবাইল অপারেটররা অনেক প্রলোভন দেখিয়ে বিভিন্ন সময় গ্রাহকদের থেকে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে। তার মধ্যে বিভিন্ন সময় অপ্রয়োজনীয় অফার যেমন ওয়েলকাম টিউন, গান বা অন্যান্য ভ্যালু অ্যাডেড সার্ভিস ইত্যাদি দিয়ে গ্রাহকদের প্রতারিত করছে। এমন অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নীতিমালা করতে যাচ্ছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিটিআরসি।
জানা গেছে, একই সঙ্গে পুরনো বেশ কিছু নীতিমালাও কার্যকর করার উদ্যোগ নিয়েছে তারা। অভিযোগ পাওয়া গেছে, অপারেটররা কখনও কখনও একটি অফার নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ফ্রি দিয়ে পরে গ্রাহককে কিছু না জানিয়ে সেবাটি চালু করে দেয়। আর তা একবার চালু করতে পারলে সেখান থেকে আর বেরিয়ে আসার সুযোগই পাচ্ছে না গ্রাহকরা। ফলে দিনের পর দিন গাঁটের পয়সা গুনে যেতে হয় অসহায় গ্রাহকটিকে। আবার কোন কোন অপারেটরের গ্রাহক সেবায় ফোন করে সেটি বন্ধ করতে গেলে, গ্রাহক সেবায় কল করার জন্য মিনিট প্রতি চার্জ করা হয়।
এমন নানা অভিযোগ পাওয়ার পর বিটিআরসি এ সম্পর্কে একটি নীতিমালা করতে যাচ্ছে। ওই নীতিমালার প্রাথমিক প্রস্তাবে রয়েছে, কোন সেবা দেয়ার ৭২ ঘণ্টা আগে একবার এবং ২৪ ঘণ্টা আগে আরও একবার নোটিফিকেশন দিতে হবে। প্রিপেইড গ্রাহকদের আউট গোয়িং কলের ক্ষেত্রে প্রতিবার কল শেষ হওয়ার পর কলটির জন্য খরচ হওয়া টাকা-মিনিট এবং গ্রাহকের বর্তমান ব্যালান্স জানাতে হবে। তাছাড়া বর্তমানে একাধিক অপারেটর প্রতি ঘণ্টা/মিনিট/মাসে সর্বোচ্চ কথা বলার জন্য পুরস্কার দিলেও ভবিষ্যতে এটি করা যাবে না বলে খসড়া নীতিমালায় বলা হয়েছে। শট কোড বা হেল্পলাইন নম্বর থেকে ফোন করার ক্ষেত্রে গ্রাহককে বিভ্রান্ত করা বা তার সময়ক্ষেপণ করা যাবে না। বন্ধ সিম চালু করার ক্ষেত্রে অপারেটররা এখন অনেক সুবিধা দিতে চাইছে। এ ক্ষেত্রে মূল গ্রাহক ছাড়া অন্য কাওকে সিম রিপলেসমেন্ট দেয়া যাবে না। বন্ধ সংযোগে বোনাস বা অফার যাতে মূল গ্রাহকই পেতে পারে সে বিষয়ে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির মাধ্যমে অপারেটরকে নিশ্চিত করতে হবে। তাছাড়া একটি সিম মাত্র একবারই বিক্রি করা যাবে। তাছাড়া বন্ধ সংযোগ ফিরে পেতে চাইলে গ্রাহকের কাছ থেকে নতুন করে সিমের দাম নেয়া যাবে না। কোন গ্রাহক কল করলে তার রিং ব্যাংক টোন শুরু হওয়ার আগে মোবাইল অপারেটরের নিজস্ব বিজ্ঞাপন প্রচারিত হতে থাকে। একই সঙ্গে গ্রাহকের মিসড কল অ্যালার্ট চালু থাকলে সেখানেও বিজ্ঞাপন শুনতে হয়। গ্রাহক কাস্টমার কেয়ারে ফোন করলে সেখানেও বিভিন্ন প্রমোশনাল বিজ্ঞাপন শুনতে হয়। বিটিআরসি বলছে, এগুলো প্রতারণার শামিল। খসড়া নীতিমালায় তারা বলছেন, এ ধরনের প্রতারণা করা যাবে না। প্রি-পেইড সংযোগের রিচার্জের ক্ষেত্রেও আউট গোয়িংয়ের সর্বোচ্চ মেয়াদ বেঁধে দেয়ার কথা বলা হয়েছে নীতিমালায়। এতে বলা হয়েছে, ১০০ টাকা রিচার্জে সর্বনিম্ন ৩০ দিন দিতে হবে। একইভাবে ২০০ টাকায় ৪৫ দিন, ৩০০ টাকায় ৬০ দিন, ৫০০ টাকায় ১২০ দিন, ১০০০ টাকায় ৩৬০ দিনের মেয়াদ দেয়ার কথা বলা হয়েছে। পাশাপাশি সর্বশেষ রিচার্জের দিন থেকে ১৮০ দিনের মধ্যে ওই সংযোগে একটি কল বা এসএমএস না এলে সংযোগটি সাময়িকভাবে বন্ধ করা যাবে। এ সংক্রান্ত খসড়া নীতিমালার একটি কপি গণশুনানির জন্য বিটিআরসির ওয়েবসাইটে দেয়া হয়েছে। সেখানে দুটি ই-মেইল ঠিকানা (rhassan@btrc.gov.bd I sunjibÑbtrc.gov.bd) দেয়া হয়েছে। যাতে গ্রাহক চাইলে তাদের মতামতও দিতে পারেন। গ্রাহকদের মতামত নেয়ার পর এক থেকে দেড় মাসের মধ্যেই বিটিআরসি এ সংক্রান্ত নীতিমালা চূড়ান্ত করবে বলে জানা গেছে।