দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ স্মার্টফোনের একটি বড় বাজার রয়েছে আমাদের দেশে। এই স্মার্টফোনের বাজারটির প্রয়োজন একটি পরিমিত দামের স্মার্টফোন যেন তা সকলের নাগালের মাঝে থাকে। এই লক্ষ্যে এমনি একটি স্মার্টফোন বাজারে আসছে যা আমাদের দেশেই তৈরি করা হয়েছে। “ওকে” মোবাইল নামের এই স্মার্টফোনটি তৈরিতে সহায়তা করছে সরকারি টেলিকম শিল্প সংস্থা।
সাম্প্রতিক সময়ে স্মার্টফোন মোবাইল ফোনের বাজার বেশ ভালোভাবেই দখল করে নিয়েছে। এই বাজারের ক্ষেত্রে যারা পথপ্রদর্শক হিসেবে থাকবেন তাদের মধ্যে অ্যাপল এবং স্যামসাং হবে প্রথম সারির। কিন্তু এর বাইরে তৃতীয় বিশ্বের দেশগুলোতে স্মার্টফোন ছড়িয়ে দেওয়ার বিষয়ে যাদের কথা স্মরণ করতে তা হলো চীনের প্রযুক্তি বাজার।
অ্যাপলের আইফোনের বাজার আর স্যামসাং এর অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোনের রাজত্বে একটি বড় ধরনের বিষয়। কিন্তু দামের ক্ষেত্রে তা বিশ্বের অনেক দেশেই ছিল ধরাছোয়ার বাইরে। এই ক্ষেত্রে স্মার্টফোনকে কমদামী আকারে বাজারে প্রবেশ করিয়ে একটি প্রতিযোগিতামূলক বাজার সৃষ্টি করে চীনের প্রযুক্তি বাজার। বাংলাদেশে বর্তমানে ১১৪ মিলিয়ন মোবাইল ফোন ব্যবহারকারী। তাদের আবার একটি বড় অংশই বর্তমানে ঝুঁকে পড়েছে স্মার্টফোনের দিকে, বাকী অংশটিও ধীরে ধীরে ঝুঁকছে স্মার্টফনের দিকে।
বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা লিমিটেড বা টেসিস এর সহযোগিতায় ইন্ডিগো নামের একটি কোম্পানী এই স্মার্টফোনটি তৈরি করেছে। ইতোমধ্যে এই নির্মাণ প্রক্রিয়া প্রায় সম্পন্ন হতে চলেছে। বিভিন্ন সুত্রে জানা গিয়েছে এই স্মার্টফোনটি বাজারে আসতে পারে এই বছরের আগস্ট কিংবা সেপ্টেম্বর মাসে। এই স্মার্টফোনটি নির্মাণে প্রয়োজনীয় কারখানা এবং ব্যবস্থাপনার কাজ প্রায় সম্পন্ন হয়ে গিয়েছে। এই স্মার্টফোনটি বাজারে ছাড়া হবে ‘ওকে’ মোবাইল ব্র্যান্ড হিসেবে। স্মার্টফোন উৎপাদনের জন্য প্রয়োজনীয় প্লান্ট নির্মাণের জন্য ইন্ডিগো কোম্পানি টেসিস বা টেলিফোন শিল্প সংস্থা থেকে স্পেস ভাড়া নিয়েছে। ইন্ডিগো কোম্পানী স্মার্টফোন নির্মাণের প্রয়োজনীয় প্রযুক্তি আনছে চীন থেকে এবং এই স্মার্টফোনের গঠন বৈশিষ্ট্য হবে আমেরিকার বিখ্যাত মোবাইল ব্র্যান্ড ওকে মোবাইলের মতো। তাই একে বাংলাদেশের বাজারে ওকে মোবাইল নামেই ব্র্যান্ডিং করা হবে। এই স্মার্টফোনটি বাজারে আসলে তা হবে বাংলাদেশেই তৈরি প্রথম স্মার্টফোন। এর আগে আরো কিছু কোম্পানী বাংলাদেশের বাজারে স্মার্টফোন ছাড়লেও এগুলো কোনটাই এই দেশে তৈরি হয়নি।
ইন্ডিগো গ্রুপের ম্যানেজিং ডাইরেক্টর জসীম উদ্দিন বলেন, চীনের ছয়জন ইঞ্জিনিয়ার এই প্রজেক্ট নিয়ে ইতোমধ্যে কাজ শুরু করেছে। তিনি আরো বলেন প্রাথমিক পর্যায়ে পাঁচটি ভিন্ন ধরনের মোবাইল হ্যান্ডসেট বাজারে ছাড়বেন যাদের মূল্যমান নির্ধারণ করা হয়েছে ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা। এর মধ্যে ৩জি স্মার্টফোন সেটগুলোর দাম পড়বে ৩৮০০ টাকা। এছাড়া সর্বোচ্চ দামের হ্যান্ডসেটটি হবে ৭০০০ টাকা। প্রতিটি ফোনই হবে ডুয়েল সীম বিশিষ্ট এবং ২ থেকে ১০ মেগাপিক্সেল ক্যামেরাসমৃদ্ধ। চীনের বাজারে ইতোমধ্যে ওকে ব্র্যান্ডের হ্যান্ডসেট পাওয়া যাচ্ছে।
বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা এর আগে কমমূল্যের হ্যান্ডসেট তৈরি করে দেওয়ার জন্য অনেকবারই দরপত্র ঘোষণা করে কিন্তু উপযুক্ত সাড়া পাওয়া যায়নি। চতুর্থবারের এই দরপত্রে এগিয়ে আসে ইন্ডিগো গ্রুপ। গত ২৭ ফেব্রুয়ারী ইন্ডিগো গ্রুপের কাছে তাদের মোবাইল হ্যান্ডসেট তৈরির জন্য কারখানা স্থাপনের লক্ষ্যে শিল্প সংস্থার ভেতরে জায়গা হস্তান্তর করা হয়। উল্লেখ্য যে বাংলাদেশ টেলিফোন শিল্প সংস্থা এর আগে কমমূল্যের দোয়েল ল্যাপটপ তৈরি করে বাজারে ছাড়ে। কিন্তু সেই ল্যাপটপগুলো নানাবিধ যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে বাজারে সমাদৃত হতে পারেনি।