দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সম্প্রতি সারাদেশে এসএসসি, এইচএসসিসহ বিভিন্ন পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটায় ভবিষ্যতে বাংলাদেশের বিভিন্ন পাবলিক পরীক্ষায় প্রতি বোর্ডে আলাদা প্রশ্ন এবং প্রত্যেক শিক্ষার্থীর দিনে দুটি করে পরীক্ষা নেওয়ায় সুপারিশ করতে যাচ্ছে এইচএসসির প্রশ্ন ফাঁসের তদন্তে গঠিত কমিটি।
দেশে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনায় গঠিত তদন্ত কমিটির এক মাসের বেশি সময় ধরে তদন্তের পর কমিটির প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) সোহরাব হোসাইন সাংবাদিকদের এই তথ্য জানিয়েছেন। তবে কে বা কারা এই প্রশ্নপত্র ফাঁসের সাথে জড়িত তা সনাক্ত করতে পারেনি কমিটি।
মূলত এইচএসসির ইংরেজি দ্বিতীয়পত্রের প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ ওঠার পরেরদিন সোহরাব হোসাইনকে প্রধান করে সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি করে এদের ১৫ দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। পরে এই কমিটি সময় বাড়িয়ে এক মাস করে নেয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে এই কমিটিকে প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগের সার্বিক বিষয় তদন্ত করে এ বিষয়ে করণীয় নির্ধারণ এবং শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন সব পাবলিক পরীক্ষার প্রশ্নের নিরাপত্তা নিশ্চিতে সুনির্দিষ্ট সুপারিশ দিতে বলা হয়েছিল।
এদিকে তদন্ত প্রতিবেদন চূড়ান্ত করার পর কমিটির প্রধান ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন ও অর্থ) সোহরাব বলেন, “এত দিন ধরে পাবলিক পরীক্ষা নেওয়ার দরকার নেই। আমরা পরীক্ষাগুলো সকাল-বিকাল দুই বেলা নেওয়ার সুপারিশ করবো। তবে এক্ষেত্রে পরীক্ষার সময় সূচি আগে থেকেই জানিয়ে দেয়া হবে।”
সুপারিশ অনুযায়ী এইচএসসিসহ পাবলিক পরীক্ষায় বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষার্থীদের জন্য প্রতিদিন সকাল-বিকাল দুটি করে পরীক্ষা রাখা হলেও আলাদা আলাদা প্রত্যেক বিভাগের শিক্ষার্থীদের দিনে একটি করে লিখিত পরীক্ষায় অংশ নিতে হবে।
উল্লেখ্য, এবারের এইচএসসি পরীক্ষা-সূচিতে ৩ এপ্রিল থেকে ৫ জুন অর্থাৎ, ৬৪ দিন রাখা হয়েছে তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষার জন্য। আর গত এসএসসির তত্ত্বীয় বিষয়ের পরীক্ষা শেষ হয়েছে ৪০ দিনে। এত, দীর্ঘ সময় নিয়ে পরীক্ষা নেয়াকে প্রশ্নপত্র ফাঁসের পেছনে একটি কারণ বলেই মনে করছেন তদন্ত কমিটি।
এছাড়া কমিটি সুপারিশে জানিয়েছেন, সারা দেশে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা না নিয়ে আলাদা আলাদা বোর্ডে আলাদা আলাদা প্রস্নপত্রে পরীক্ষা নেয়া হোক। এতে করে যদিও কোন বোর্ডে প্রশ্নপত্র ফাঁসের ঘটনা ঘটে তবে সারাদেশে তা নিয়ে জটিলতা হবেনা। এছাড়া প্রশ্ন সংরক্ষণের জন্য যে খাম, বা কাগজের প্যাকেট ব্যবহার করা হয় তা আরও নিরাপদ এবং সংরক্ষিত করার সুপারিশ জানানো হয়েছে। তা ছাড়া প্রেস থেকে শুরু করে সংরক্ষণ সব ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং নিরাপত্তা আরও বাড়াতে বলা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বর্তমানে সৃজনশীল প্রশ্ন পদ্ধতিতে সারা দেশে একই প্রশ্নপত্রে পরীক্ষা নেওয়া হয়। আর যেসব বিষয়ে সৃজনশীল প্রশ্নে পরীক্ষা হচ্ছে না, তার প্রশ্ন বোর্ডভিত্তিক প্রণয়ন করা হয়েছে। এদিকে আগে যেখানে পাবলিক পরীক্ষার জন্য চার সেট প্রশ্ন করা করা হত, এখন সেখানে চার সেট হলেও দুই সেট ছাপানো হয়, বাকি দুই সেট রিজার্ভে রাখা হয়।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ফেসবুকে যারা যারা প্রস্নপত্র আপলোড করেছে তাদের সনাক্ত করতে বিটিআরসিকে এবং আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে বলা হয়েছে।