দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমাদের নিত্যদিনের একটি প্রয়োজনীয় উপকরণ হচ্ছে জুতো। ক্ষতিকারক জিনিস হতে পা নিরাপদ রাখতে আমরা জুতো ব্যবহার করি। ১৬ শতকের দিকে ইউরোপের বিভিন্ন দেশে এলিট বা রাজকীয় শ্রেণীর পুরুষরা হাইহিল ব্যবহার করতেন। পরে ধীরে ধীরে নারীদের মধ্যে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি পায়।
১৬শ শতকের দিকে ইউরোপীয় সমাজে হাইহিল প্রথা শুরু হয়। তখন সমাজের ধনী শাসক গোষ্ঠী অর্থাৎ ‘এলিট’ পুরুষেরা নিজেদের পদমর্যাদা বোঝানোর জন্য হাই হিল পরা শুরু করে। পদমর্যাদা বা সামাজিক মর্যাদার প্রতীক হিসেবে হাই হিল পরা শুরু হলেও পরবর্তীতে পুরুষের কর্তৃত্বের প্রতীক হিসেবেও এটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ফ্রান্সের রাজা চতুর্দশ লুই ছিলেন হাই হিল পরার ব্যাপারে সবচাইতে বিখ্যাত। মাত্র পাঁচ ফুট চার ইঞ্চি উচ্চতার এই শাসক নিজের উচ্চতা বাড়াতে কমপক্ষে চার ইঞ্চি উচ্চতার হাই হিল পরতেন। চতুর্দশ লিউ ১৬৭০ সালের দিকে নিয়ম করে দেন, শুধুমাত্র তার রাজসভার সদস্যরা লাল রঙের হিল পরতে পারবেন। ফলে কারও পায়ের দিকে তাকালেই বোঝা যেত তিনি রাজার প্রিয়পাত্র কি না। ইতিহাস থেকে আরো জানা যায়, যুদ্ধের সময়ে ঘোড়ার পিঠে চড়ে থাকা অবস্থায় রেকাবে পা রেখে দাঁড়িয়ে যেতে হতো এবং তীর ছুঁড়তে হতো। এ সময়ে হাইহিলের কারণে রেকাবে পা আটকে রাখা সহজ হতো। শুধুমাত্র এ কারণেই তীরন্দাজরা হাইহিল পরতেন।
১৬৩০ সালের দিকে ইউরোপের নারীদের মধ্যে নীরব বিপ্লব সংগঠিত হয় এবং পুরুষের কর্তৃত্ব খর্ব করার জন্য তাদের মতো পোশাক-আশাক পরা শুরু করে। ধূমপান, পুরুষালী হ্যাট পরা, চুল ছোট করা, তার পাশাপাশি হাই হিলও পরা শুরু করে। একসময় দেখা গেল নারীরা এত বেশি হাই হিল পড়া শুরু করলো তখন পুরুষরা হাই হিল পরার ওপর থেকে আগ্রহ হারিয়ে ফেলে। ১৭৪০ সালের দিকে পুরুষের হাই হিল পড়া বন্ধ করে দেয়। তবে ফরাসি বিপ্লবের পরে হাই হিলের চল নারীদের মাঝে থেকেও উঠে যায়। ১৯ শতকের মাঝামাঝি দিকে হাই হিল নারীদের মাঝে জনপ্রিয় হতে শুরু করে।
তথ্যসূত্রঃ বিবিসি