দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এক যুবতীতে ১৬ বছর ধরে বাঁশঝাড়ে শিকলবন্দি করে রাখা হয়েছিল। মধ্যযুগীও অমানবিক এই ঘটনাটি ঘটেছে ভারতে। ঘটনাটি জানার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। ওই যুবতীকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
পাগলপ্রায় এক যুবতীকে ১৬ বছর শিকলবন্দি করে রাখে তারই পরিবার। প্রতিবেশী ও এলাকাবাসীও নির্বিকার। টানা ১৬ বছর একজন মানুষ কিভাবে শিকলবন্দি করে রাখা হলো তা জেনে সবাই হতবাক। ১৬ বছর বাঁশঝাড়ে বিবস্ত্র অবস্থায় শিকলবন্দি হয়ে পড়ে রয়েছে এমন খবর ছড়িয়ে পড়ার পর প্রশাসনের টনক নড়ে। পুলিশ ওই যুবতীতে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করে। বিষয়টি তদন্ত করছে পুলিশ। ওই যুবতীর পরিবার দেখেও দেখে না। প্রতিবেশীরাও সব জেনেশুনে এতোদিন ছিলেন নীরব। মধ্যযুগীয় বর্বরতার ঘটনা পুরো ভারত জুড়ে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। পত্র-পত্রিকায় এ খবর প্রকাশিত হলে প্রশাসনও নড়েচড়ে বসে। তারা এখন তদন্ত শুরু করেছে।
এই ঘটনাটি ঘটেছে মালদা শহর থেকে প্রায় ৭০ কিলোমিটার দূরে বামনগোলা ব্লক নামক স্থানে। সেখানকার মদনাবতী পঞ্চায়েতের পশ্চিমপাড়ায় বাঁশঝাড়ে বন্দি করে রাখা হয় ওই যুবতীকে। স্থানীয় নালাগোলা উচ্চ বিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণী পর্যন্ত পড়া-লেখাও করেছে ওই যুবতী। হঠাৎ করে আচমকাই যাকে তাকে কামড়ে দেওয়ার এক প্রবণতা দেখা দেয় তার মধ্যে। আতঙ্কিত হয়ে তার পরিবার প্রথমে ঘরেই আটকে রাখে তাকে। কিন্তু ওই যুবতী ঘরের মধ্যেই মাটি খুঁড়তে শুরু করায় আর ঝুঁকি নেননি তার পরিবার। চিকিৎসার খরচ জোগাতে না পেরে তারপর থেকেই পাড়ার বাঁশঝাড়ে ঘরের মেয়েকে শিকলে বেঁধে ফেলে রাখে।
সেদিনের সেই কিশোরী ছাত্রী আজ একত্রিশের যুবতী। পরিবার দুবেলা খাবার দিয়ে গেলেও সবসময় মুখে তোলে না ওই যুবতী। পঞ্চায়েত প্রধান তপতী মুর্মু জানিয়েছেন, এই ঘটনা তার জানা ছিল না। জানলে তিনি ব্যবস্থা নিতে পারতেন।
এই জামানায় এমন বর্বর কাহিনীর খবর শুনে ওই এলাকায় ভিড় জমিয়েছে হাজার হাজার মানুষ। ওই যুবতীকে দেখার জন্য ভীড় করছে হাসপাতালেও। হাসপাতাল কর্তৃৃপক্ষকে তাই নিতে হয়েছে বাড়তি ব্যবস্থা। সকলের কাছেই এখন বড় প্রশ্ন সত্যিই কি ঘুম ভাঙবে প্রশাসনের? মুক্তি পাবে তো এই অবহেলিত যুবতী?