দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ সামনে আসছে রোজার ঈদ আর এই ঈদকে সামনে রেখে ঘরমুখো নৌপথের যাত্রীদের ভিড় মোকাবিলা ও নিরাপত্তার স্বার্থে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআইডব্লিউটিএ) হেলিকপ্টারে নজরদারি করবে। এছাড়া বিআইডব্লিউটিএর ‘স্থায়ী ঈদ ম্যানেজমেন্ট প্ল্যান’-এর সভায় যাত্রীবাহী লঞ্চে ঈদ উপলক্ষে তৃতীয় শ্রেণিতে শতকরা ১০ ভাগ ভাড়া কম নেওয়া হবে বলে জানানো হয়।
গত বুধবার মতিঝিলে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের সভাকক্ষে বিআইডব্লিউটিএ আয়োজিত আসন্ন ঈদুল ফিতর উপলক্ষে ঘরমুখো যাত্রীদের জন্য সুষ্ঠু নৌ-পরিবহন ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে এক যৌথ সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সভায় সভাপতিত্ব করেন বিআইডব্লিউটিএর চেয়ারম্যান। সভায় বাংলাদেশ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা, লঞ্চমালিক ও শ্রমিকেরা উপস্থিত ছিলেন। সভায় বলা হয়, চলতি বছর লঞ্চের ছাদে কোনো যাত্রী বহন করা যাবে না। ছাদে যাত্রী পাওয়া গেলে সেই লঞ্চের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ঈদে কালোবাজারে লঞ্চের টিকিট বিক্রি ঠেকাতে লঞ্চমালিকদের বলা হয়েছে। সভায় আরও বলা হয়, দুর্ঘটনায় উদ্ধার তৎপরতা আরো জোরদার করতে হেলিকপ্টার এবং উদ্ধারকারী জাহাজ হামজা, রুস্তম, নির্ভীক ও প্রত্যয় সব সময় প্রস্তুত থাকবে। সভায় লঞ্চমালিকদের দাবি অনুযায়ী যেসব স্থানে ড্রেজিং করা নেই, সেসব স্থানে ড্রেজিং করার জন্য বিআইডব্লিউটিএর ড্রেজিং বিভাগকে নির্দেশনা দেওয়া হয়। এ ছাড়া যাত্রীদের জন্য লাইফ জ্যাকেট পরা বাধ্যতামূলক করতে মাওয়া ফেরি ঘাটে স্পিডবোট মালিকদের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। বর্ষায় এই সময়টায় প্রতিবছর নৌপথে লঞ্চ ও স্টিমার দুর্ঘটনায় অনেক মানুষ মারা যায়। সাধারন এই মানুষগুলো মারা যাওয়ার পর শুরু হয় রাজনৈতিক কাঁদা ছোড়াছুঁড়ি। তখন বিআইডব্লিউটিএ বলে দুর্ঘটনার জন্য লঞ্চ মালিকরা দায়ী। আর লঞ্চ মালিকরা বলেন বিআইডব্লিউটিএ এর অদক্ষতার কারণে এই দুর্ঘটনায় মানুষ মারা গিয়েছে। নৌপথে ঈদে ঘরমুখো মানুষের চাপ থাকে বেশি। কিন্তু সেই পরিমাণ লঞ্চ না থাকায় যাত্রীদের এই চাপ সামাল দিতে হিমশিম খায় লঞ্চমালিকরা আর বিআইডব্লিউটিএ। এছাড়া টিকেট কালোবাজারি, নৌ রুটে ভালোভাবে ড্রেজিং না করায় লঞ্চ ও স্টিমার চলাচলে সমস্যা এবং লঞ্চ, স্টিমারে যথেষ্ট পরিমাণ লাইফ জ্যাকেট না থাকায় এই দুর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে যায়।
প্রতিটি ফেরিঘাটের স্পিড বোটে বয়া থাকতে হবে। চলাচলকারী লঞ্চে কোনোভাবেই মধ্য নদীতে নৌকা নিয়ে লঞ্চে ওঠা যাবে না। যাত্রীরা পন্টুন দিয়ে লঞ্চে উঠবে। এ ব্যাপারে সভায় জনগণের সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে। ঈদে যাত্রী পরিবহনের জন্য নদীপথে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের সিদ্ধান্ত হয়েছে।