দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ এই কথা শুনে হয়তো আপনি সত্যি অবাক হবেন যে, মানুষ বন্ধু খোঁজার ক্ষেত্রে নিজের অজান্তে দূর-সম্পর্কের আত্মীয়কেই নির্ধারণ করে থাকে। তার মানে এই যে একজন মানুষ বন্ধু খোঁজার ক্ষেত্রে জিনগত সাদৃশ্যের রয়েছে এমন কাউকেই খুজে নেয়। সাম্প্রতিক এক গবেষণার পরিপ্রেক্ষিতে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।
যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটস অঙ্গরাজ্যের ফার্মিংহাম হার্ট স্টাডির এই গবেষণায় আরো বলা হয় যে, মানুষ নিজের সঙ্গে জিনগত সাদৃশ্যপূর্ণ কাউকেই সাধারণত বন্ধু হিসেবে বাছাই করে থাকে। বিষয়টি আপনার কাছে আরো বেশি পরিষ্কার হয়ে যাবে এইভাবে যে, আমরা সাধারণত বন্ধুত্ব করার ক্ষেত্রে নিজেদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের সাথে সামঞ্জস্য রয়েছে এমন কারো সাথেই বন্ধুত্ব করে থাকি। যেমন আপনি যদি বই পড়তে বেশি পছন্দ করে থাকেন তবে আপনি চাইবেন যে আপনার বন্ধুটিও যেন আপনার মতো বইপাগল হয়। গবেষকরা বলছেন কখনো কখনো এই চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যগুলো এতটাই কাছাকাছি হয়ে থাকে যে, তা শুধুমাত্র নিকট আত্মীয়দের ক্ষেত্রে হয়ে থাকে। গবেষকেরা এই গবেষণাটি করার জন্য প্রায় এক হাজার ৯৩২ জন মানুষের ওপর একটি জরিপ চালান। জরিপে অংশ নেওয়া ব্যক্তিদের বন্ধুদের সাথে ব্যক্তির তুলনামূলক বিশ্লেষণের মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যটি উঠে আসে। গবেষকরা এই গবেষণার ফলাফলটি প্রসিডিংস অব দ্য ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অব সায়েন্সেস সাময়িকীতে প্রকাশ করেন। পরিসংখ্যানগতভাবে এই মিলটি অনাত্মীয় বন্ধুদের সাথে মাত্র ১ শতাংশ। এইক্ষেত্রে আপনার কাছে মনে হতে পারে এটি খুবই সামান্য কিন্তু জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং ভাষায় এটি অনেক বড় বিষয়।
বিশ্লেষণী পরীক্ষার অনুযায়ী আরো জানা যায় যে, বন্ধুদের মধ্যে জিনগত বন্ধন কখনো কখনো মানুষের উত্তরাধিকার-সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্যকেও ছাপিয়ে যেতে পারে। অর্থাৎ একই ঘ্রাণের প্রতি আকর্ষণ, একই রকম সুগন্ধী পছন্দ করা, এই রকম কফির পছন্দ হওয়া এই বৈশিষ্ট্যগুলো বংশীয় ধারায় নির্ধারিত হয়ে থাকে যা দুইজন বন্ধুর মধ্যেও দেখা যায় যদিও তারা বংশীয়ভাবে একে অন্যের সাথে যুক্ত নয়। মানুষের পছন্দের এই জিনোম বিশ্লেষণ করে দেখা যায় যে, বন্ধুদের ডিএনএর সঙ্গে ব্যক্তির ডিএনএর গড়পড়তা একটা মিল থাকে, যা এই যুক্তি প্রদর্শন করে যে, বংশগতির ধারায় তারা একে অপরের দূর সম্পর্কীয় আত্মীয়।