দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ মরিচের উপর সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, মরিচে এক ধরনের রাসায়নিক যৌগ রয়েছে যা অন্ত্রের ক্যান্সার দূরীকরণে সাহায্য করে। গবেষকরা মরিচ থেকে পাওয়া ক্যাপসাইসিন নামক এক ধরনের পদার্থ ইঁদুরের উপর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ করে এই সত্যতা পান। সাম্প্রতিক ক্লিনিক্যাল ইনভেস্টিগেশন সাময়িকীতে এই গবেষণা প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
ইদুররা তাদের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টনাল টিউমারের রোধে জীনগতভাবে মরিচের ক্যাপসাইসিন ব্যবহার করতে পারে। ক্যাপসাইসিন অন্ত্রের কোষের পেইন রিসেপ্টর হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এটি অন্ত্রের কোষের কলোরেকটাল টিউমার তৈরির ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধক হিসেবে ভূমিকা রাখে। বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন বয়সের ইদুরের উপর এই ক্যাপসাইসিন প্রয়োগ করে দেখতে পান যে, প্রায় শতকরা ৩০ শতাংশ হারে তা কোষের ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে। এর সাথে যখন সেলেকক্সিব যুক্ত করা হয় তখন তা আরো বেশি কার্যকরী হয়ে উঠে। সেলেকক্সিব হলো আর্থারাইটিস রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি ওষুধ। আন্ত্রিক ক্যানসার যুক্তরাজ্যের তিনটি বেশি আক্রান্ত ক্যান্সারের মধ্যে একটি। প্রতিবছর যুক্তরাজ্যে ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীর মধ্যে প্রায় ৪১০০০ রোগীই থাকে আন্ত্রিক ক্যান্সার আক্রান্ত। এই প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, বেশিরভাগ রোগীই কোলন অথবা রেক্টাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকে। এই ক্ষেত্রে ক্যাপসাইসিন যৌগটি এটি নিরাময়ে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে।
আন্ত্রিক ক্যান্সার দূর করতে ক্যাপসাইসিনে একটি ট্রিগার বা রিসেপ্টর রয়েছে। বিজ্ঞানীরা এর নাম দিয়েছেন টিআরপিভি১। এটি এমন একটি হরমোন যা মস্তিস্কের নিউরোনকে তাপ, এসিডিটি এবং ঝাল স্বাদের ক্ষেত্রে উত্তেজিত করে থাকে। টিআরপিভি১ অন্ত্রের ইপিথেলিয়াল কোষের ভেতরে থাকে। যা অন্ত্রের কোষের এপিডার্মাল বৃদ্ধিতে সাহায্য করে থাকে। আমাদের দেহের অন্ত্রের কোষের ভেতর ইজিএফআর নামক একটি এনজাইম রয়েছে যা টিআরপিভিকে কার্যকর করে তোলে। কিন্তু এই ইজিএফআর এর ক্ষরণ বা পরিমাণ বেশি বৃদ্ধি পেলে অন্ত্রের ক্যান্সার আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায়। বিজ্ঞানীরা দেখতে পেয়েছেন যে, মরিচের ক্যাপসাইসিন এই টিআরপিভি১কে নিয়ন্ত্রণে রাখতে সাহায্য করে। বিজ্ঞানীরা এই ক্যাপসাইসিন যৌগটি মানুষের উপর প্রয়োগ করেননি তবে তারা বলছেন, এটি খুব শীঘ্রই করা হবে এবং তারা এতে বেশ আশাবাদী।
তথ্যসূত্রঃ ডেইলিমেইল