দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ব্রিটিশ পুলিশের তদন্তে বিবিসির প্রয়াত তারকা উপস্থাপক জিমি স্যাভিলের লোমহর্ষক যৌন অপরাধের বিস্তারিত তথ্য বেরিয়ে এসেছে। তার যৌন নির্যাতনের হাত থেকে রেহাই পায়নি ৮ বছর বয়সের শিশুও। সমপ্রকি ব্রিটিশ পুলিশ এক প্রতিবেদনে জিমি স্যাভিলের যৌন অপরাধের বিস্তারিত বিবরণ প্রকাশ করেছে।
যৌন হয়রানি নিয়ে যখন বিশ্ববাসী উদ্বিগ্ন ঠিক সে সময় এমন একটি খবর বিশ্ববাসীকে রীতিমতো চমকে দিয়েছে। পুলিশের বরাত দিয়ে বিভিন্ন সংবাদ সংস্থার খবরে বলা হয়েছে, ডার্লিং-খ্যাত বিবিসির বিখ্যাত এই উপস্থাপক ছিলেন একজন ‘শিকারি যৌন অপরাধী’, শিকার ধরার ক্ষেত্রে তার কোনো বাছবিচার ছিল না। ৮ বছরের শিশুকন্যার ওপরও তিনি নির্দ্বধিায় বলাৎকার চালিয়েছেন। নিজের যৌনলালসা চরিতার্থ করতে তিনি হাসপাতালগুলোতে ঘুরে বেড়াতেন; এমনকি অনাথ আশ্রমের পিতৃমাতৃহীন শিশুরাও তার লালসা থেকে রেহাই পায়নি!
ব্রিটিশ পুলিশ আরও জানিয়েছে, নিজের যৌনলিপ্সার কথা গোপন রাখতে তিনি তার সেলিব্রেটি পরিচয় ব্যবহার করতেন। এজন্য জীবদ্দশায় তার শাস্তি পাওয়া উচিত ছিল বলে পুলিশ জানিয়েছে। এ ছাড়া বর্তমানে এ ধরনের নরপশুরা কীভাবে যৌন অপরাধ চালাচ্ছে এ ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে তা খতিয়ে দেখছে ব্রিটিশ পুলিশ। জিমির ১৯৫৫ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৫০ বছরের যৌন অপরাধ তদন্ত করেছে ব্রিটিশ পুলিশ। এতে তার বিরুদ্ধে ১৩টি হাসপাতাল এবং অনাথ আশ্রমে যৌন অপরাধ সংগঠনের প্রমাণ পেয়েছে পুলিশ। ২৮টি এলাকায় পুলিশ জিমি স্যাভিলের বিরুদ্ধে ২১৪টি যৌন অপরাধের অভিযোগ রেকর্ড করেছে। এর মধ্যে ৩৪টি ধর্ষণের অভিযোগ রয়েছে। এটিকে শতাব্দীর ভয়াবহ যৌন অপরাধ বলে মনে করছে ব্রিটিশ পুলিশ।
উল্লেখ্য, স্যাভিলের এই যৌন অপরাধ নিয়ে প্রচণ্ড তোপের মুখে পড়েছিল বিশ্বখ্যাত সংবাদমাধ্যম বিবিসি। সংবাদ সংস্থাটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তাদের নিউজনাইট অনুষ্ঠানের সাংবাদিকরা স্যাভিলের শিশু নিগ্রহের বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করেন। কিন্তু তাদের সেই অনুসন্ধানের ভিত্তিতে তৈরি প্রতিবেদন প্রচার করেনি কর্তৃপক্ষ। বরং তার বর্ণাঢ্য জীবনী নিয়ে প্রতিবেদন প্রচার করে। যাকে কি-না এখন ব্রিটেনের সবেচেয়ে বড় যৌন নিগ্রহকারী হিসেবে বিবেচনা করা হচ্ছে। অভিযোগ রয়েছে, জিমি স্যাভিল বিবিসিতে কাজ করার সময় প্রায় ৩০০ শিশু ও তরুণীকে যৌন হয়রানি করেছেন। যার কিছু ঘটেছে বিবিসির অভ্যন্তরে। প্রতিবেদন প্রকাশের পর ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ডেভিড ক্যামেরন উদ্বেগ প্রকাশ করে বলেছেন, এসব অভিযোগের যথাযথ তদন্ত হওয়া উচিত।