দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঈদ এলেই নানা রকম টেনশন প্রায় সকলকেই ঘিরে ধরে। যেমন ঘর সাজানোর টেনশন। কিভাবে ঈদে ঘর সাজাবেন তা নিয়ে চিন্তার অন্ত থাকে না। দিন যতো ঘনিয়ে আসছে সেইসঙ্গে বাড়ছে টেনশন। তবে একটু বুদ্ধি করে আপনি নিজেই ঘর সাজানোর কাজটি করতে পারেন। খুব সামান্য কিছু গাছসহ ফুলের টব দিয়ে এক প্রাকৃতিক দৃশের অবতারণা করা সম্ভব।
আমরা সবাই জানি সবুজ মানেই এক স্নিগ্ধতা। এক অপরূপ দৃশ্য। তাই সবুজের সমারোহ রয়েছে এমন সব ফুল গাছ টবসহ কিনে আনতে পারেন ঈদের ঘর সাজানোর কাজে। এতে করে ঘরের সৌন্দর্য যেমন বাড়বে তেমনি স্নিগ্ধতায় ঘরে উঠবে ঘরের পরিবেশ। আমাদের মনে এবং ঘরে শান্তির পরশ বুলিয়ে দিতে পারে এইসব ফুলের টবগুলো। তাই ঘরের সামনের লম্বা টানা কোনো জায়গা যেমন বারান্দায় অথবা ঘরের ভেতরে শখের বাগান কিংবা ইনডোর প্ল্যান্ট ঈদের আনন্দকে আরও সুন্দর করে তুলতে পারে।
আমরা অনেকেই ঘর সাজাতে গাছের ব্যবহার করে থাকি। গাছ যেমন ঘরের সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে, ঠিক তেমনি ঘর ঠাণ্ডা রাখতেও সাহায্য করবে। শুধু তাই নয়, বিভিন্ন ধরনের ইনডোর প্ল্যান্টের মাধ্যমে নিজের নান্দনিক রুচির বহিঃপ্রকাশও ঘটানো যাবে।
ঘর সাজাতে প্রথমেই আপনাকে গাছ নির্বাচন করতে হবে। পাতাবাহার, মানিপ্ল্যান্ট, গোল্ডেন ডেসিনা, বাঁশপাতা, অগ্নিসর, পিছুটিয়া, সিলভার কুইন, রাবিশ, চাইনিজ পাম, ফাইকাস, সাদা কচু, ডেজার্ট রোজ, কেবি রোজ ইত্যাদি ঘরের শোভা বর্ধন করবে। ব্যাস্ততার কারণে আমরা অনেক সময় গাছ কিনে ঘরে রেখে দিই। কিন্তু তার যত্ন নেওয়াটা একেবারেই হয়ে উঠে না। ঘর সাজানোর কাজে যে গাছগুলো আপনি ব্যবহার করবেন সেগুলোর যত্নও নিতে হবে। তাহলে শুধু ঈদই নয়, অন্য সময়ও আপনি গাছের সান্নিধ্যে থাকতে পারবেন।
কোন গাছ কিভাবে সাজাবেন:
# মানিপ্ল্যান্টের মতো যেসব গাছ পানিতে রাখলেই হয়, সেসব গাছ বাড়িতে কন্টেইনার তৈরি করে রাখতে পারেন। আবার পুরনো প্লাস্টিকের কন্টেইনার অথবা সিরামিকের মগেও সাজিয়ে রাখতে পারেন। এসব গাছ দেখতে যেমন সুন্দর লাগে, ঠিক তেমনি ঘরের মাঝেও আসে সবুজের এক অপরূপ ছোঁয়া।
# কোনো পুরনো চায়ের কেটলি অথবা সুগার পটের হ্যান্ডেল ভেঙ্গে গেলে সেগুলো আপনি ফেলে না দিয়ে ভাঙা স্থানটি পরিষ্কার করে, রং করে তাতে গাছ লাগিয়ে বাথরুম বা কিচেনে সাজিয়ে রাখতে পারেন এতে দেখতে খুব সুন্দর লাগবে।
# আবার কোনো লম্বা ফুলদানিগুলোতে ফুলের স্টিক রাখুন। এগুলো আবার সেট করতে একটু সমস্যা হয়। তাই ফুলদানিতে পানি ভরে কয়েল পেপার দিয়ে মুখ আটকিয়ে রাখুন। এরপর কয়েলে ছোট ছোট ফুটো করে ফুলের স্টিকগুলো ঢুকিয়ে দিতে পারেন তাতে দেখতে খুব সুন্দর লাগবে।
# আবার যে সকল গাছের গোঁড়া পানিতে রাখলে ভালো হয়, সেগুলোকে কাঁচের বোতলে করেই রাখাই ভালো। আবার গাছের মূল বেড়ে উঠলে, পানি ফেলে দিয়ে তখন মাটিতে লাগাতে পারেন।
যেভাবে যত্ন নেবেন এগুলোর:
ভেতরের প্ল্যান্ট বেঁচে থাকে একমাত্র যত্নের ওপর। দুপুরের রোদে রাখলে অতিরিক্ত রোগ গাছ মরে যেতে পারে তাই সপ্তাহে ১/২ বার সকালের মিষ্টি রোদে বের করে দিন। এক সপ্তাহ পর পর মাটি একটু ওলট-পালট করে দিতে হবে। এতে মাটির ভেতর জমে থাকা ক্ষতিকর গ্যাস থাকবে না। নিয়মিত গাছে পানি দিন। সকালের হালকা রোদে অথবা বিকেল কিংবা সন্ধ্যায় পানি দিন। সরাসরি গাছের গোড়ায় পানি না দিয়ে চারপাশে খুব আস্তে আস্তে পানি দিতে হবে। যদি সম্ভব হয় তাহলে গাছের পাতা হালকাভাবে ব্রাশ দিয়ে মুছে দিন। লালচে হয়ে যাওয়া পাতা আলাদা করে ফেলে দিন। গাছের টব পরিবর্তন করার সময় শিকড় যাতে ছিড়ে না যায় সেদিকে ভালো করে খেয়াল রাখতে হবে। তবে ইনডোর প্লান্ট খুব বেশি বড় করবেন না। এতে করে ঘর অন্ধকার লাগবে। তাই নিয়মিত গাছের ডাল এবং পাতা ছেঁটে রাখুন। গাছা সাজানোর সময় অবশ্যই খেয়াল করতে হবে ঘর বুঝে গাছ সাজাতে হবে। যেমন ড্রইং রুমের জন্য এক রকম, শোবার ঘরে এক রকম এবং বারান্দায় আরেক রকম।
এভাবে আপনি এবারের ঈদে আপনার রুচিমতো ঘরকে সাজিয়ে তুলুন। এতে ঈদের দিন আসা মেহমানরা যেমন খুশি হবে সেইসঙ্গে আপনার মনটাও থাকবে প্রফুল্ল।