দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পৃথিবীতে কত রকম অদ্ভুত কাণ্ড-কারখানায় না ঘটে থাকে। এমন অদ্ভুত রেস্তোরাঁর যতোসব অদ্ভুত নিয়ম নিয়েই রচিত হয়েছে আজকের প্রতিবেদন।
খাবার ও আনন্দের সঙ্গে বিনোদনকে বৈচিত্রময় করতে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অদ্ভূত কিছু রেস্তোরাঁ গড়ে তুলেছেন কিছু সৌখিন মানুষ। ভোক্তাদের আকৃষ্ট করতে নানা সাজে সজ্জিত করে অদ্ভূত পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়েছে এসব রেস্তোরাঁগুলোতে। খাবার পরিবেশন ও অন্যান্য আনুষাঙ্গিক বিষয়গুলো দারুণভাবে আকৃষ্ট করবে আপনাকে। তেমনি রয়েছে আরও কিছু অদ্ভূত রেস্তোরাঁ- যেগুলোর কথা আপনার অজানা থাকতেই পারে। তাহলে জেনে নিন এসব অদ্ভূত রেস্তোরাঁর অদ্ভূত সব নিয়মগুলোর কথা।
ব্যাংক ভল্ট রেস্তোরাঁ:
ব্যাংক ভল্ট রেস্তোরাঁ। এই রেস্তোরাঁটি যুক্তরাষ্ট্রের কলোরাডো অঙ্গরাজ্যের প্রাচীন ডেনভার ন্যাশনাল ব্যাংক ভবনে অবস্থিত। খদ্দেররা এখানে খাবার খাবেন চিরি কাঠে নির্মিত প্রাইভেট বুথে বসে। এই বুথগুলো কোনো এক সময় ব্যাংকের গ্রাহকরা ব্যবহার করতেন।
এখানে বসে তাদের নিরাপত্তা ডিপোজিট বক্সগুলো ঠিকঠাক রয়েছে কিনা তা পরীক্ষা করতেন। ১শ’ বছরের পুরনো ব্যাংক ভল্টের ভেতরে খদ্দেররা ব্যক্তিগত খাবার গ্রহণের রোমাঞ্চকর এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেন এখানে এসে। এই রেস্তোরাঁর ওয়াই সেলারটি ৩৫ ফুট মাটির নিচে মূল ক্যাশ ভোল্টে অবস্থিত।
কেইভ রেস্তোরাঁ:
কেইভ রেস্তোরাঁ। এই রেস্তোরাঁটির অবস্থান আফ্রিকার দক্ষিণ মোম্বাসার ডায়ানি সমুদ্র সৈকতে আলী বাবার গুহা রেস্তোরাঁ নামক স্থানে। ৫ লক্ষাধিক বছর আগে প্রবাল চুনাপাথরে প্রাকৃতিকভাবে তৈরি এই গুহাটি। সাগরের ঢেউয়ের আঘাতে এটির আকার আকৃতি গঠিত।
এটাকে ব্যবহারের উপযোগী করতে সংশ্লিষ্ট ভূমির মালিক জর্জ বারবোঁরও কিছু ভূমিকা রয়েছে। গুহা রেস্তোরাঁ কমপ্লেক্সের এন্ট্রেন্স বা প্রবেশ পথ একটি মাকুতি পাম গাছের শাখায় তৈরি ছাদে আবৃত। আবার এটি একটি গাম ট্রি ধরে রেখেছে।
‘ভিলা এস্কুডেরো’ ওয়াটার ফল রেস্তোরাঁ:
‘ভিলা এস্কুডেরো’ ওয়াটার ফল রেস্তোরাঁ। ফিলিপাইনের এই ওয়াটার ফল রেস্তোরাঁ বা জলপ্রপাত রেস্টেুরেন্ট ‘ডিলা এস্কুডেরো দেশটির কুইজন প্রদেশে অবস্থিত। রেস্তোরাঁটি লামাসন নামক জলপ্রপাতের একেবারে পাদদেশে অবস্থিত। যদিও এই রেস্তোরাঁয় উষ্ণ এবং আরামদায়ক কক্ষও রয়েছে।
পর্যটকরা রেস্তোরাঁর বাইরে চেয়ার টেবিলে বসে, জুতো মোজা খুলে জলপ্রপাতের পানিতে পা ভিজিয়ে নানা প্রকার ফিলিপিনো খাবার গ্রহণই পছন্দ করে থাকেন। এ সময় জলপ্রপাতের পানির ধারা তাদের পায়ের পাতা এবং গোড়ালি ভিজিয়ে প্রবাহিত হয়। এভাবে জলপ্রপাতের ঠিক নীচে অবস্থান করা বিপজ্জনক হলেও পর্যটকরা তা খুব উপভোগ করেন এক রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা হিসেবেই।
ভাসমান রেস্তোরাঁ ‘দ্য সল্ট এন্ড স্টিল’:
সুইডেনের এই ভাসমান রেস্তোরাঁ ‘দ্য সল্ট এন্ড স্টিল’ একটি ২৩ কক্ষের বার্জ। এখানে সেরা সামুদ্রিক খাবার বিশেষভাবে হেরিং এবং স্থানীয় টাটকা খাবার সরবরাহ করা হয়। প্রতিটি কক্ষেই রয়েছে আলাদা আউটডোর বসার জায়গা। তবে এর মূল সুইটের একটি পৃথক সুবিধা রয়েছে। সেটি হচ্ছে ছাদের উপরিভাগে জাকুজ্জি। রেস্তোরাঁটি একটি লেইক বা হ্রদে অবস্থিত। এর ধারে কাছের উপকূলে থাকার কোনো বাড়িঘর বা কক্ষ নেই।
মাইন শ্যাফট্ রেস্তোরাঁ:
‘পপ-ডাউন’ খনির ভেতরে অবস্থিত ফিনল্যান্ডের অদ্ভূত এই মাইন শ্যাফট্ রেস্তোরাঁ। লোহজা শহরে ১২৪ ফুট মাটির গভীরে এই রেস্তোরাঁর অবস্থান। ১১৫ বছরের প্রাচীন এই খনি হতে এখনও চুনা পাথর উত্তোলন করা হয়। এই রেস্তোরাঁটি খদ্দেরদের কাছে এতোই জনপ্রিয় যে এটি কখনও খালি থাকে না। এর ৬৪টি আসন সবসময়ই বুকড্ থাকে।
এয়ারপ্লেন রেস্তোরাঁ:
যুক্তরাজ্যের কভেন্ট্রি এয়ারপোর্টে একটি ডগলাস ডিসি ৬ বিমানের ভেতরে পরিচালিত হয়ে আসছে এই এয়ারপ্লেন রেস্তোরাঁটি। এটি একটি ব্যতিক্রমি রেস্তোরাঁ বটে।
এই রস্তোরাঁয় আপনি প্রত্যাশিত সব ধরনের খাবারই পাবেন। ব্রিটেনে এটিই এক ব্যতিক্রম ধরনের প্রথম রেস্তোরাঁ। এখানে একটি পূর্ণাঙ্গ বারও রয়েছে। ১৫ পাউন্ডে খেতে পারেন একটি ফিল্লেট স্টিক। এই রেস্তোরাঁতে মোট ৪০টি আসন রয়েছে।
এখানে বিমান পরিবহন মেন্যুর সাথে সঙ্গতি রেখেই ৮ ওজেড র্যাপাইড, ভ্যাম্পায়ার গ্যামন স্টিক, বোম্বার টি-বোন স্টিক এবং মেটিওর ম্যারিনেইড ফিল্লেট সরবরাহ করা হয়। এই রেস্তোরাঁতে ওয়েটারদের ডাকতে হলে বিমানের মতোই কল বাটন টিপতে হয়। তখন স্টুয়ার্ডেসের মতো ওয়েটাররা তাৎক্ষণিক এসে হাজির হয়।
বিশ্বের ক্ষুদ্রতম রেস্তোরাঁ ‘সলো পার ডিউ’:
বিশ্বের সবচেয়ে ছোট রেস্তোরাঁটির নাম হলো এই ‘সলো পার ডিউ’ অর্থাৎ ‘ঠিক দু’জনার জন্য’। এ রেস্তোরাঁটি ইতালীতে অবস্থিত। এখানে একবারে মাত্র দু’জন বসে খেতে পারেন। এখানে রয়েছে একটি মাত্র টেবিল ও দু’জনের বসার আসন।
এখানে বসে দু’জন মানুষ নানা রকম ইতালীয় খাবার উপভোগ করতে পারেন। এখানে বসে বেল টিপলেই ওয়েটার এসে হাজির হয়। চাইলে আপনাকে ওয়েটাররা একটি ব্যক্তিগত অগ্নিকুণ্ডও জ্বেলে দেবে,। আবার শোফায় সার্ভিসও দেবে। তবে খাবারের জন্য জনপ্রতি খরচ করতে হবে ৩২৫ ডলার অর্থাৎ প্রায় ২৪ হাজার টাকা। দু’জন হলে অর্ধলাখ টাকার খরচ হবে এখানে খেতে গেলে।