দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চোখের পাপড়ি নিয়ে আমরা হয়তো কখনও ভাবিনি। কিন্তু এবার চোখের পাপড়ি রহস্যময় বেশ কিছু তথ্য বেরিয়ে এসেছে। এ বিষয়টি নিয়েই বিশ্লেষণী এই প্রতিবেদন।
চোখের পাপড়ি নিয়ে বিজ্ঞানীদের মধ্যে অনেক দিন ধরেই চলছে গুঞ্জন, কানাঘুষা। কিছু বিজ্ঞানীর ধারণা, ধুলোবালি এবং ক্ষতিকর পদার্থ যাতে চোখে প্রবেশ করতে না পারে, এজন্য চোখের পাপড়ি অনেকটা ছাঁকনির মতো কাজ করে থাকে। আবার এ বিষয়ে অন্যরা বলেন, এটি বিড়ালের গোঁফের মতো এক ধরনের সেন্সর হিসেবে কাজ করে থাকে; যা চোখকে বাতাসবাহিত বালুকণা এবং বিপদ হতেও সতর্ক করে। মানুষ ও অন্যান্য স্তন্যপায়ী প্রাণীর চোখে কেনো পাপড়ি থাকে? এই বিষয়টি নিয়ে গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরেই গবেষণষা করে আসছেন।
একদল জীববিজ্ঞানী তাদের সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদনে জানিয়েছেন, চোখের পাপড়ি বাতাসে মিশে থাকা খুদে কণা, অণুজীব, সংক্রামক জীবাণু ছেঁকে বাতাস চোখের ভেতর প্রবাহিত হতে সহায়তা করে থাকে। জার্নাল দ্য রয়াল সোসাইটি ইন্টারফেস সাময়িকীতে এই প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়।
যুক্তরাষ্ট্রের আটলান্টা শহরের জর্জিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির বিজ্ঞানী ডেভিড হু’র নেতৃত্বে একদল বিজ্ঞানী চোখের পাপড়ি নিয়ে নতুন এই গবেষণাটি পরিচালনা করেন। তারা শজারু হতে মানুষ পর্যন্ত মোট ২২ প্রজাতি স্তন্যপায়ী প্রাণীর ওপর এই গবেষণা চালিয়েছেন।
বিজ্ঞানীদের মতে, দৃষ্টিশক্তির ওপর কোনো বাধা সৃষ্টি না করেই বাতাসের প্রবাহ নিয়ন্ত্রিতভাবে পাপড়ির মধ্যদিয়ে চোখে সন্তোষজনক মাত্রায় প্রবাহিত হতে সক্ষম। চক্ষুগোলকে মিউকাস, তেল এবং পানির সমন্বয়ে যে প্রলেপ থাকে তা শুকিয়ে যাওয়ার হাত হতে রক্ষা করে এই পাপড়ি। শুধু তাই নয়, একই সঙ্গে এটি পরোক্ষ ধুলা নিয়ন্ত্রণকারী ব্যবস্থা হিসেবেও কাজ করে থাকে। পাপড়ি চোখকে শুষ্ক হয়ে ওঠা এবং সংক্রমণের হাত হতে রক্ষা করে। গবেষণায় আরও দেখা গেছে, যেসব শিশুর অ্যালার্জি রয়েছে, তাদের চোখের পাপড়ির দৈর্ঘ্য এবং ঘনত্ব অন্যান্য শিশুর তুলনায় ১০ শতাংশ বেশি।
গবেষকরা গবেষণা করে এও দেখেছেন যে, জিরাফের মতো কিছু কিছু প্রাণীর চোখে কয়েক স্তরবিশিষ্ট পাপড়ি থাকে, যা শুষ্ক এবং অতিরিক্ত ধুলাময় পরিবেশ হতে তাদের চোখকে রক্ষা করে।
উল্লেখ্য, আবার অনেকেই মনে করেন যে, অন্যের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন ও কাওকে আকর্ষণের ক্ষেত্রে চোখের পাপড়ি মানুষের মুখভঙ্গিতে বিশেষ প্রভাব ফেলে।