দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ গরুর রচনা পারেন না এক শিক্ষক। আর তাই তাকে আইনের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। কাশ্মীরে ওই স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আদেশ দিয়েছে আদালত।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়, চতুর্থ শ্রেণীর গণিতের একটি প্রশ্নের সমাধান ও গরুর রচনা লিখতে ব্যর্থ হওয়ায় কাশ্মীরে ওই স্কুল শিক্ষকের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের আদেশ দিয়েছে আদালত। গত শুক্রবার ভারত শাসিত জম্মু ও কাশ্মীরের উচ্চ আদালত ওই শিক্ষককে প্রকাশ্য এক বিচার সভায় একটি গরুর রচনা ও গণিতের ওই প্রশ্নের সমাধান করার আদেশ দিলে ওই শিক্ষক তাতে ব্যর্থ হন।
খবরে বলা হয়েছে, মানহীন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোর বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণে চলমান অভিযানে বিভিন্ন পদক্ষেপের অংশ হিসেবেই আদালত ওই শিক্ষককে তার যোগ্যতার প্রমাণ দেওয়ার জন্যই বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করান। মোহাম্মদ ইমরান খান নামের ওই শিক্ষক দক্ষিণ কাশ্মীরের একটি স্কুলের রেহবার-ই-তালিম (শিক্ষা নির্দেশক) হিসেবে কর্মরত রয়েছেন।
অভিযোগ রয়েছে যে, দিল্লির উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ও নাগাল্যান্ডের বৈশ্বিক উম্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় তাকে যেসব শিক্ষাগত সনদপত্র ইস্যূ করেছে সেগুলো নাকি স্বীকৃত নয়। দিল্লির মাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ড ওই শিক্ষককে যে নম্বরপত্র ইস্যু করেছে তাতে দেখা যায়, তিনি উর্দু, ইংরেজি এবং গণিতে যথাক্রমে ৭৪, ৭৩ ও ৬৬ শতাংশ নম্বর পেয়েছেন।
বিচারক মুজাফ্ফর হোসাইনের আদালত তাকে একটি সহজ বাক্য ইংরেজি হতে উর্দুতে অনুবাদ এবং আরেকটি সহজ বাক্য উর্দু হতে ইংরেজিতে অনুবাদ করতে বলা হলে ওই শিক্ষক তা করে দেখাতে ব্যর্থ হন। এরপর ওই শিক্ষককে উর্দুতে একটি গরুর রচনা লিখতে বলা হয়। এতেও তিনি ব্যর্থ হন। ওই শিক্ষক আদালত কক্ষের বাইরে গিয়ে রচনাটি লেখার অনুমতি চাইলে আদালত তাও মঞ্জুর করেন। কিন্তু তাতেও তিনি ব্যর্থ হন।
এরপর ওই শিক্ষক আদালতে দাবি করেন, তিনি গণিতে ভালো। যে কারণে তাকে চতুর্থ শ্রেণীর গণিতের একটি প্রশ্নের সমাধান করতে দেওয়া হয়। কিন্তু ওই শিক্ষক তাতেও ব্যর্থ হওয়ায় আদালত ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠেন।
আদালত জম্মু ও কাশ্মীর সরকারকে নির্দেশ দেয়, অবিলম্বে একটি প্যানেল গঠন করতে। এই প্যানেলের কাজ হবে অস্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রদেয় প্রশংসাপত্রের খতিয়ে দেখা। পাশাপাশি, রাজ্য শিক্ষা দফতরকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে, যাতে চাকরি দেওয়ার সময় প্রার্থীর সঠিক শিক্ষাগত মূল্যায়ন করা হয়। আদালত জানিয়েছে, অর্থের বিনিময়ে ডিগ্রি দেওয়ার জন্য বিভিন্ন জোড়াতাপ্পি দেওয়া প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। সেগুলির বিরুদ্ধে বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নিতে নির্দেশও দিয়েছে উচ্চ আদালত। সেইসঙ্গে ওই শিক্ষক ইমরানের বিরুদ্ধেও এফআইআর দায়ের করার নির্দেশ দিয়েছে আদালত।