দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ বারংবার নিষেধাজ্ঞার কবলে পড়ছে সাভারের রানা প্লাজার ভবন ধ্বসের ঘটনা নিয়ে নির্মিত ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রটি। রাষ্ট্রপতির আদেশে এবার ‘রানা প্লাজা’ মুক্তি থেমে গেলো।
সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ হতে ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্র বাধা কাটিয়ে উঠলেও রাষ্ট্রপতির আদেশে তা আবারও আটকে গেলো। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে পরীমনি ও সায়মুন অভিনীত চলচ্চিত্রটির প্রদর্শনী সাময়িকভাবে স্থগিত করে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রাষ্ট্রপতির আদেশে বলা হয়, ‘সিভিল রিভিউ পিটিশন নং ১৯১/২০১৫ শুনানিকালে মহামান্য সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের পর্যবেক্ষণের আলোকে ফিল্ম সেন্সর আপিল কমিটি কর্তৃক ‘রানা প্লাজা’ নামক চলচ্চিত্রের আপিল সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত না পাওয়া পর্যন্ত সেন্সর সার্টিফিকেট সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো এবং ‘রানা প্লাজা’ নামক চলচ্চিত্র সমগ্র বাংলাদেশে সাময়িকভাবে স্থগিত করা হলো।’ এ আদেশ অবিলম্বে কার্যকর হবে বলেও প্রজ্ঞাপনে উল্লেখ করা হয়েছে।
গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রের প্রদর্শনী বন্ধে রিভিউ (পুনর্বিবেচনা) আবেদন খারিজ করে দেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ। এই রায়ের ফলে চলচ্চিত্রটি প্রদর্শনে বাধা কেটে যায়। প্রধান বিচারপতি সুরেন্দ্র কুমার সিনহার নেতৃত্বাধীন ৪ সদস্যের আপিল বেঞ্চ এই রায় দেন। বেঞ্চের অন্য সদস্যরা হলেন বিচারপতি নাজমুন আরা সুলতানা, বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেন এবং বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকী।
উল্লেখ্য, ২০১৩ সালে সাভারের রানা প্লাজা ধসের ১৭ দিন পর ধ্বংসস্তূপ হতে পোশাককর্মী রেশমাকে উদ্ধারের ঘটনা নিয়ে নির্মাণ করা হয় ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রটি। রেশমা উদ্ধারের ওই ঘটনা তখন বিশ্ব গণমাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করে। শামীম আক্তার প্রযোজিত এবং নজরুল ইসলাম খান পরিচালিত ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রের দৈর্ঘ্য দুই ঘণ্টা ১৭ মিনিট ১৬ সেকেন্ড।
রানা প্লাজা ধ্বংস ও গার্মেন্টসকর্মী রেশমাকে উদ্ধার করার ঘটনা নিয়ে নির্মিত বাংলা চলচ্চিত্র ‘রানা প্লাজা’ প্রদর্শনের জন্য সেন্সর বোর্ডে পাঠালে সেন্সর বোর্ড তা প্রদর্শনে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। সেন্সর বোর্ডের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে ছবিটির প্রযোজক শামীম আক্তার তা প্রদর্শনের অনুমোদনের নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে আবেদন করা হলে গত ৪ মার্চ ছবিটির কিছু দৃশ্য কর্তনসাপেক্ষে অনুমোদন দেওয়ার নির্দেশ দেন আদালত। পরে সেন্সর বোর্ড হাইকোর্টের নির্দেশনা অনুযায়ী ছবিটির ৫টি দৃশ্য কর্তন ও পরিবর্তনের জন্য পরিচালক এবং প্রযোজককে নির্দেশ দেন।
ওই ৫টি পরিবর্তন হলো:
১. চলচ্চিত্রে নায়িকার নাম ‘রেশমা’ বাদ দেওয়া
২. ১৭ দিন পর ছবিতে রেশমাকে উদ্ধারের দৃশ্য বাদ দেওয়া
৩. নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের নাম ব্যবহার বাদ দেওয়া
৪. ওই সময়ের ঘটনার টেলিভিশন ফুটেজের কাটা অংশ বাদ দেওয়া
৫. ‘আমরা কি খাট ভাঙ্গিনী?’ এই দৃশ্য এবং সংলাপ বাদ দেওয়া।
ছবিটি দুইবার প্রদর্শনের উদ্যোগ নেওয়া হলেও নিষেধাজ্ঞায় তা বার বার থেমে যায়। সব মিলিয়ে বর্তমান সময়ের সবচেয়ে আলোচিত নায়িকা পরীমনি অভিনীত ‘রানা প্লাজা’ চলচ্চিত্রটির ভবিষ্যত অনিশ্চিত অবস্থায় পড়েছে।