দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ হিরোশিমা-নাগাসাকির পরমাণু বোমার কাহিনী প্রায় সকলের জানা। সেই পরমাণু বোমার বিধ্বংসি আক্রমণের পরেও দমাতে পারেনি এমন এক ব্যক্তি ৯৩ বছর বয়সী সুতোমু ইয়ামাগুচি!
পৃথিবীর ইতিহাসে সেই অভিশপ্ত ঘটনাগুলির অন্যতম চাক্ষুস স্বাক্ষী হলেন সুতোমু ইয়ামাগুচি। হিরোশিমা-নাগাসাকির বুকে পরমাণু বিস্ফোরণের ঘটনা যিনি স্বচোক্ষে দেখেছেন। সেই দিনে মৃত্যুর কালো ছায়া নেমে এসেছিল জাপানের প্রায় ১ লক্ষ ২৯ হাজার মানুষের জীবনে।
পরমাণু বোমার তীব্র রাসায়নিক বিষক্রিয়ায় পঙ্গু‚ পক্ষাঘাতগ্রস্থ হয়ে জন্ম নিয়েছে বহু প্রজন্ম। যে আতঙ্কের ছবি দেখে শিউরে ওঠে অনেক সুস্থ মানুষও।
সেই অভিশপ্ত ১৯৪৫ এর ৬ আগস্ট। মিৎসুবিশিতে কর্মসূত্রে সেদিন হিরোশিমাতেই উপস্থিত ছিলেন সুতোমু ইয়ামাগুচি। সকাল ৮.১৫ মিনিটের কথা। আকাশের বুক চিরে নেমে এলো সাক্ষাৎ মৃত্যুদূত। ধ্বংস হয়ে গেলো হিরোশিমা। তবে কপালজোরে প্রাণে বেঁচে গেলেন সুতোমু ইয়ামাগুচি।
সুতোমু ইয়ামাগুচি তখন অবস্থান করছিলেন মাত্র ৩ কিমি দূরে‚ নামছিলেন একটি ট্রাম থেকে। সাময়িকভাবে তিনি দৃষ্টিশক্তি হারালেও পরে ফিরে পেলেন দেখার ক্ষমতা‚ তার কানের পর্দা গেলো ফেটে। আর ঝলসে গেলো শরীরের উপরের অংশ।
এক চরম অস্থিরতা থাকলেও ওই অবস্থাতেই বাড়ি ফিরে গেলেন সুতোমু ইয়ামাগুচি। চমক আরও রয়েছে। এর কারণ হলো ফিরে যাওয়ার সেই গন্তব্যের স্থান হলো নাগাসাকি। তার মাত্র দু‘দিন পরেই অর্থাৎ ৯ আগস্ট যার বুকে নেমে আসে আর এক মৃত্যুদূত ‘ফ্যাট ম্যান।’
সেদিনও প্রাণে বেঁচে যান সুতোমু ইয়ামাগুচি। আজও বেঁচে আছেন তিনি। সঙ্গী হয়ে রয়েছে তার সেই ভয়ঙ্কর দিনের ভয়ঙ্কর স্মৃতিগুলো। দু-দুটো পরমাণু বোমাও কেড়ে নিতে পারেনি সুতোমু ইয়ামাগুচির জীবন। কিন্তু আজ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে সুতোমু ইয়ামাগুচি দিন গুণছেন মৃত্যুর। সেই ভয়ংকর স্মৃতি বুকে নিয়েই হয়তো দুনিয়া থেকে বিদায় নেবেন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আরেক চাক্ষুস স্বাক্ষী সুতোমু ইয়ামাগুচি।