দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ পাথর কুড়িয়ে লাখপতি হওয়া যায় এমন কথা আমরা আগে কখনও শুনিনি। তবে এবার এমন একটি খবর বিশ্বব্যাপি ছড়িয়ে পড়েছে। তাতে বলা হয়েছে, তুরস্কে পাথর কুড়িয়ে হয়েছেন লাখপতি!
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, কুড়িয়ে পাওয়া পাথর বিক্রি করে লাখপতি হয়েছেন। তুরস্কের বিনগুল অঞ্চলের একটি প্রত্যন্ত গ্রামে ঘটেছে এমন ঘটনা। প্রথমদিকে এই পাথরগুলোকে মোটেও পাত্তা দেননি ওই গ্রামের লাখপতি হওয়া কয়েক ব্যক্তি। কালো ও বিশ্রী দেখতে পাথরগুলোকে প্রথমে তারা আর দশটা সাধারণ পাথর মনে করেছিলেন। কিন্তু হঠাৎ গ্রামে আসা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষকের নিরীক্ষণে বদলে যায় সে দৃশ্যপট। ওই শিক্ষক বলেন, এগুলো সাধারণ পাথর নয়, এগুলো আসলে উল্কা খণ্ড।
গ্রামবাসীরা তারপর হতেই সারিচিচেক নামের গ্রামটির চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়েন। সবাই খুঁজতে থাকেন কোথায় পাওয়া যাবে সেইসব পাথর। ওইসব উল্কা খণ্ডগুলো বিক্রি হচ্ছে প্রতিগ্রাম সর্বোচ্চ ৬০ ডলার; বাংলাদেশী টাকায় সাড়ে ৪ হাজারের বেশি।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, তুরস্কের আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গত ২ সেপ্টেম্বর ছোট মাপের একটি উল্কা বৃষ্টি হয়েছে এই অঞ্চলটিতে। আর এসময়ই ছোট-বড় বিভিন্ন আকারের বহু উল্কা পিণ্ড আছড়ে পরে গ্রামটিতে।
এই খবর আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হওয়ার পর রাশিয়া, জার্মানি এবং ডেনমার্কের রত্ন ব্যবসায়ীরাও ভিড় জমাতে থাকেন গ্রামটিতে। এ পর্যন্ত বিক্রি হওয়া উল্কা পাথরের মূল্য প্রায় ৪ লাখ মার্কিন ডলার বলে জানানো হয়েছে সংবাদ মাধ্যমের খবরে। সংগ্রাহক এবং গবেষকদের কাছে মহামূল্যবান ছোট ছোট এই উল্কা খণ্ডের মধ্যে বেশ বড় কিছু উল্কা খণ্ডও মিলেছে। সর্বোচ্চ দেড় কেজি ওজনের একটি পাথর খুঁজে পাওয়া গেছে ওই গ্রামে। বিক্রিত পাথরের টাকায় ইতিমধ্যে স্বপ্নের বাড়ি-গাড়িও কেনা শুরু করে দিয়েছেন বেশ ক’জন দরিদ্র গ্রামবাসী!
গণমাধ্যমের আলোড়নে নড়ে-চড়ে বসে তুরস্কের সরকার। স্থানীয় কর সংস্থা এই পাথর ব্যবসায় কর আরোপের সিদ্ধান্ত নিতে চাইলে অর্থমন্ত্রী তার ব্যক্তিগত টুইটার অ্যাকাউন্ট হতে উন্মুক্ত মতামত জানতে চেয়ে একটি টুইট করেন সম্প্রতি। এতে ৭০ শতাংশ নাগরিক নেতিবাচক মতামত দেওয়ায় উল্কা পাথর বিক্রিতে কর আরোপের সিদ্ধান্ত হতে সরে আসে সরকার।
উল্লেখ্য, পৃথিবীর বুকে প্রতিবছর পতিত হওয়া কয়েক হাজার উল্কা খণ্ডের মাত্র কয়েক’শ পাথর বাষ্পায়ন ক্রিয়া ছাপিয়ে ভূপৃষ্ঠে পৌঁছাতে সক্ষম হয়। আর তাই এমন দুষ্প্রাপ্য পাথর হতে অর্থ আয়কে ভাগ্যের কেরামতি মনে করছেন ওই গ্রামবাসী। তথ্যসূত্র: polishaber.bi