দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ নতুন এক গবেষণা মানুষকে আশান্বিত ও বিস্মিত করেছে। আর তা হলো ঘ্রাণ নিয়ে ক্যান্সার শনাক্ত করতে সক্ষম কুকুর! এটি অনেক ক্ষেত্রে ল্যাব টেস্টের চাইতেও কার্যকরী বলে দাবি গবেষকদের।
সিএনএনে প্রকাশিত এক সংবাদে বলা হয়েছে, একমাত্র গন্ধ শুঁকেই ক্যান্সার শনাক্ত করতে পারে কুকুর, এটি অনেক ক্ষেত্রে ল্যাব টেস্টের চাইতেও কার্যকরী বলে দাবি গবেষকদের। সম্প্রতি প্রকাশিত হয়েছে এমনই এক প্রজাতির কুকুরের কথা। ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, লুসি নামের ওই কুকুর প্রজাতিটি ক্যান্সার শনাক্তে ৯৫ শতাংশই সফল হয়েছে।
সংবাদ মাধ্যমের খবরে জানা যায়, ল্যাব্রেডর রিট্রিভার এবং আইরিস ওয়াটার স্প্যানিয়েল দুই প্রজাতির শংকর লুসি। এরা ঘ্রাণ শক্তি দিয়ে প্রভুর পছন্দের কাজ করতে না পারায় তাকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় তার আগ্রহের ঘ্রাণ দিয়ে কাজ করার জন্য। আর তা হচ্ছে ক্যান্সার শনাক্তকরণ প্রক্রিয়া। তাদের এই প্রশিক্ষণ দেওয়া হয় টানা ৭ বছর ধরে।
সংবাদে বলা হয়, প্রশিক্ষণ শেষে লুসি হয়ে ওঠে এই কাজে প্রায় বিশেষজ্ঞের মতোই। এমনকি ল্যাবরেটরির পরীক্ষা হতেও বেশি পারফেকশন দেখা যায় লুসির কাজে! অন্তত ৯৫ শতাংশ ক্ষেত্রে সে সঠিকভাবে ক্যান্সার চিনতে পেরেছে বলে দাবি করা হয়েছে।
জানা যায়, ‘মেডিক্যাল ডিটেশন ডগ’ নামে এক ব্রিটিশ সংস্থার হয়ে সে এখন ক্যান্সার চেনার কাজ অব্যাহত রেখেছে। তার মতো রয়েছে আরও ৭টি কুকুর। সংবাদে উল্লেখ করা হয়, সংস্থার সিইও ক্ল্যারি গেস্টেরও ব্রেস্ট ক্যান্সার ধরা পড়েছিল। আর তার ক্যান্সার চিনতে পেরেছিল তাঁর পোষা কুকুর (ল্যাব্রেডর) ডেইজি৷
এতে আরও বলা হয়, কুকুরের ঘ্রাণশক্তি প্রবল। কেনোনা মানুষের যেখানে ঘ্রাণ নেওয়ার কোষের সংখ্যা ৫ মিলিয়ন, সেখানে কুকুরের এই কোষের সংখ্যা ৩শ’ মিলিয়ন। শুধু তাই নয়, কুকুরের একটি দ্বিতীয় ঘ্রাণেন্দ্রীয় থাকে, যাকে বলা হয়ে থাকে জ্যাকবসন অর্গ্যান। এই দুয়ের সম্মিলনেই মূলত কুকুরদের ক্ষেত্রে ক্যান্সার শনাক্তকরণ সহজ হয়েছে বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কুকুরের এই বিরল ক্ষমতা মানুষ আগে বুঝতে পারেনি। ১৯৮৯ সালে প্রথম তাদের এই পরিচয় পাওয়া যায়। তখন লন্ডনের কিংস কলেজ হাসপাতালের জনৈক চিকিৎসক এটির সন্ধান পান। একজন মহিলার নিকট থেকে তিনি জানেন যে, তার পায়ের আঁচিলের গন্ধ শুঁকে তার পোষ্য কুকুরটি অন্যরকম আচরণ করতে শুরু করে! পরীক্ষা করতে গিয়ে ক্যান্সার ধরা পড়ে ওই মহিলার। আর তখন থেকেই কুকুরদের এমন ক্ষমতা সম্পর্কে ধারণা জন্মায়। গবেষকরা দীর্ঘদিন ধরে সেইসব বিষয়গুলো নিয়ে গবেষণা অব্যাহত রাখেন। যার ফলশ্রুতিতে বর্তমানে এমন একটি সাফল্য এসেছে। যদি সঠিকভাবে কুকুরদের দিয়ে এই কাজটি করানো যায় তাহলে ক্যান্সার শনাক্তের ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী সাফল্য আসবে বলে মনে করা হচ্ছে।
দেখুন ভিডিও তথ্যচিত্র
https://www.youtube.com/watch?v=myhTWDPKSwk