দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের কথা শুনলেই ভেসে ওঠে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের বিশাল গাড়ির কথা। কিন্তু আজ রয়েছে এক ভ্রাম্যমাণ পাঠাগারের গল্প যেটি গাড়িতে নয় ঘোড়ার পিঠে!
পাঠাগারের কথা শুনলেই চোখের সামনে ভেসে ওঠে হাজারো বইয়ে ঠাঁসা পিনপতন নিরব একটি কক্ষ, কিংবা বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের এক বিশাল গাড়ির কথা। এলাকায় এলাকায় গিয়ে নির্দিষ্ট স্থানে থেমে থাকে যে গাড়ি। যেখানে আপনমনে সবাই পড়েন, হারিয়ে যান বইয়ের ভূবনে।
বর্তমানে অবশ্য পাঠাগার ব্যবস্থাপনায় এরকম পরিবর্তন এসেছে। আগে পাঠকরা পাঠাগারে গিয়ে পড়তেন কিন্তু এখন পাঠাগারই চলে আসছে মানুষের দরজায়।
বাংলাদেশে বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের ব্যবস্থাপনায় চালু থাকা ভ্রাম্যমান পাঠাগারের মতো
এমনই এক ভ্রাম্যমান পাঠাগার চালু রয়েছে ইন্দোনেশিয়ার প্রত্যন্ত গ্রাম সেরাংয়ে। তবে বাস কিংবা ট্রাকে নয়, এবার সেই পাঠাগার চলে ঘোড়ার পিঠে!
জাভা দ্বীপের বানটেন প্রদেশের গ্রামটিতে এমন একটি পাঠাগার চালু করেছেন রিদওয়ান সুরুরি নামে এক ব্যক্তি। একটি সাদা ঘোড়ার পিঠে বইয়ে ঠাসা ভ্রাম্যমাণ পাঠাগার নিয়ে রিদওয়ান সুরুরি ছুটে চলেন পুরো গ্রামময়। সপ্তাহের নির্দিষ্ট একটি দিনে বই নিয়ে গ্রামে পৌঁছান রিদওয়ান সুরুরি।
সুরুরির ঘোড়ার শব্দ পেলেই গ্রামের শিশুরা ছুটে আসে, নতুন বইয়ের গন্ধ নিতে।
এই পাঠাগারের সদস্য কেবল ছোট্ট শিশুরা তা নয়, বয়স্করাও রিদওয়ান সুরুরির পাঠাগারের নিয়মিত সদস্য। তবে পাঠাগারের সদস্যদের নতুন বই নিতে হলে অবশ্যই আগের সপ্তাহে নেওয়া বই ফেরত দিতে হবে। বইগুলো পড়তে হবে সযত্নে।
রিদওয়ান সুরুরি বলেন, কোনো পরিকল্পনা না থাকলেও ২০১৫ সালে এক বন্ধুর কাছ থেকে ১০০টি বই নিয়ে এই পাঠাগারটি চালু করি। ধীরে ধীরে বিভিন্ন ব্যক্তি ও সংস্থার সহায়তায় বইয়ের সংখ্যা বেড়েই চলেছে।
ইন্দোনেশিয়ার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের হিসাব মতে, ২০১৩ সালে শিক্ষার হার ৯৬ শতাংশে পৌঁছেছে। কিন্তু জাভাসহ বেশ কয়েকটি প্রদেশ শিক্ষার হারের দিক হতে এখনও পিছিয়ে রয়েছে। এমন এক অবস্থা পরিবর্তন ও শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে রিদওয়ান সুরুরির ‘ঘোড়ার পিঠের পাঠাগার’টি দৃষ্টান্ত হতে পারে।