দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ চীনের চ্যাং গুওরোং। এক সময় রাস্তায় রাস্তায় ভিক্ষা করাটাই ছিলো তার কাজ। কিন্তু তিনি হয়েছেন বিখ্যাত মডেল!
চ্যাং গুওরোং এর এমন এক অবস্থা ছিলো কোনোদিন জুটলে খায়, না হলে পেটে খিদে নিয়েই ঘুমিয়ে পড়ে। তবে ভিক্ষুক হলে হবে কী, চ্যাং তার জীবনটা কাটায় তার নিজস্ব স্টাইলে।
ছেঁড়া জ্যাকেট, ডাস্টবিন থেকে কুড়িয়ে আনা জুতো ও নানা জিনিসপত্র এনে নিজের স্টাইলে সেলাই করে পরে। প্রকৃতপক্ষে চ্যাংয়ের জীবনমন্ত্রটা খুবই সোজা। তুমি যতোই ভিখারি হও, মনটা রাখো রাজার মতো। শেষ অবধি এই জীবনমন্ত্রটাই বদলে দিয়েছেন চ্যাংয়ের জীবন প্রবাহ।
অন্য দিনের মতোই দক্ষিণ চীনের নিংবোর বড় রাস্তায় ভিক্ষা করতে বেরিয়েছিলেন চ্যাং। পরনে ছিলো জ্যাকেট, ভিতরে সোয়েটার, ফ্যাব্রিক বেল্ট ও মুখে সিগারেট। একেবারে অন্য এক ভিন্ন লুক যাকে বলে। এমন অবস্থায় চ্যাংকে চোখে পড়ে এক তরুণের। সে চমকে যায়, এ একজন ভিখারি!
সঙ্গে সঙ্গে সে ওর কাঁপা কাঁপা অপেশাদার হাতে তুলে নেন চ্যাংয়ের ছবি। সেই ছবি তারপর পোস্ট করেন সোশ্যাল মিডিয়ায়।
ব্যস, আর যায় কোথায়? ছবিটা ভাইরাল হতে একেবারেই সময় নেয়নি। চীনের বিজ্ঞাপনী সংস্থাগুলো ঝাঁপিয়ে পড়ে চ্যাংকে পাওয়ার জন্য। কিছুটা মেকওভারের পর চ্যাং সত্যিই নেমে পড়েন মডেলিংয়ে।
এরপর সম্পূর্ণ বদলে যায় চ্যাংয়ের জীবন। দেশের সবচেয়ে হ্যান্ডসাম পুরুষের শিরোপা জিতে নেন চ্যাং।
চ্যাংয়ের জীবনের এই রূপকথার গল্পের মতো উত্থানের বাইরেও একটা গল্প রয়েছে। চ্যাং নিংবোতে ১৯৯৬ সালে এসেছিলেন কাজের খোঁজে। আসলে চ্যাংয়ের একটা সুন্দর পরিবার রয়েছে। বাবা, স্ত্রী, দুই সন্তান নিয়ে ছিলো তার পরিবার। ভালো চাকরিও ছিলো একটা।
চাকরিটা চলে যাওয়ার পরই সবকিছু এলোমেলো হয়ে যায়। চাকরি যাওয়ার পরও বাড়িতে কিছুই জানাননি তিনি। সংসার চালাতেন জমানো টাকা দিয়ে। সেটাও একদিন শেষ হয়ে যাওয়ার পর তিনি বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যান। তারপরই আসেন নিংবোতে। সেখানে কিছু না পেয়ে ভিক্ষা করতে শুরু করেন।
১৪ বছর পর বাড়ি ফিরে চ্যাং দেখেন তার বাবা ও স্ত্রী মারা গেছেন। চ্যাংয়ের ভক্তকূল প্রথমে তাকে জীবনে ফিরে আসতে আর্থিক সহায়তা করেছিলো। পরে চুক্তিতে কাজ করার পর বহু ধন-সম্পত্তির মালিক হয়ে গেছেন চ্যাং। এভাবেই ভিক্ষুক হতে তিনি হয়েছেন বিখ্যাত মডেল!