দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্থ দেশের দক্ষিণাঞ্চলের বহু মানুষ এখনও খোলা আকাশের নিচে বসবাস করছে। বহু কৃষক নি:স্ব হয়ে হাহাকার করছেন। সরকারি সাহায্য একেবারেই অপ্রতুল।
১৫ মে যেদিন প্রথম আঘাত হানে মহাসেন সেদিন পটুয়াখালীর খেপুপাড়ার পরিস্থিতি ছিল অবর্ণনীয়। সেখানকার কাঁচা বাড়িঘর লণ্ডভণ্ড হয়ে যায়। ঘূর্ণিঝড়ের আগে যেভাবে সরকারি উদ্যোগ ছিল ঘূর্ণিঝড় যখন খেপুপাড়ায় আঘাত হেনে দূর্বল হয়ে চলে যায় তারপর থেকে ক্ষতিগ্রস্থদের সে তুলনায় সাহায্য করা হচ্ছে না বলে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার জনগণ বলেছেন। ঘূর্ণিঝড়ের পূর্বাভাসের সময় মেডিক্যাল টিম, স্বেচ্ছাসেবক দল, হেলিকপ্টার, জাহাজ, সেনা, নৌবাহিনীসহ সরকারি জরুরি বরাদ্দসহ সব রকম প্রস্তুতি ছিল চোখে পড়ার মতো। কিন্তু ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী ক্ষতিগ্রস্থদের সাহায্য সহযোগিতা তেমন একটা চোখে পড়ছে না বলে এলাকাবাসীরা অভিযোগ করেছে।
ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার অনেকেই ঝুপড়ি ঘর তৈরি করে, কেও আবার একচালা টিন দিয়ে অথবা আত্মীয়স্বজনদের বাড়িতে বসবাস করছে। ক্ষতিগ্রস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে। অনেক এলাকায় ত্রাণও পৌঁছেনি। ক্ষতিগ্রস্ত অনেক মানুষ নগদ অর্থ পায়নি বলে অভিযোগ করেছে। কলাপাড়া-কুয়াকাটা সড়ক যোগাযোগ পাঁচ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। সম্ভাবনাময় পর্যটন নগরী কুয়াকাটায় নেই বিদ্যুৎ । কতদিন এই অবস্থা চলবে তা কেওই বলতে পারছে না।
পটুয়াখালীতে ঘূর্ণিঝড় মহাসেনের আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের অনেকের মাঝে এখনও ত্রাণ পৌঁছেনি। রাঙ্গাবালী উপজেলার চরমোন্তাজ, গলাচিপা উপজেলার চরকাজল, চরবিশ্বাস ও সদর ইউনিয়নের হাজার হাজার মানুষের ব্যাপকভাবে ক্ষতি হলেও ত্রাণ পেয়েছে কিছু এলাকার মানুষ। কলাপাড়ায় ক্ষয়ক্ষতি বেশি হলেও বেশির ভাগ এলাকায় ত্রাণ পৌঁছেনি বলে অভিযোগ করা হয়েছে। পাঁচ দিন পর পটুয়াখালীর বিচ্ছিন্ন এলাকা চরকাজল পরিদর্শন করেছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী। সকালে মন্ত্রী ত্রাণ দিতে আসার খবরে হাজার হাজার নারী-পুরুষ স্কুল মাঠে ভিড় করলেও ২০০ জনকে ২০ কেজি চাল ও ৫০ জনকে নগদ টাকা দেওয়া হয়েছে। তবে স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম মাওলা রনি ব্যক্তিগত তহবিল থেকে চার লাখ টাকা প্রদান করেন দূর্গতদের মাঝে।
দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী গতকাল ২০ মে বিকালে বরগুনায় আক্রান্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বিকাল ৩টা ৪০ মিনিটে সী-প্লেনে এসে বরগুনার বড়ইতলা ফেরিঘাটে নামেন। সেখান থেকে বড়ইতলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ক্ষতিগ্রস্তদের হাতে ত্রাণ তুলে দেন।
ভোলার ৭ উপজেলায় সরকারি হিসাবে চার লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৬ জন ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে জানানো হয়েছে। তবে এর মধ্যে চরফ্যাশন ও মনপুরা উপজেলায় সবচেয়ে বেশি ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। জেলা প্রশাসনের তালিকা অনুযায়ী সাত উপজেলায় মোট ৬৮টি ইউনিয়নে ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে। এতে ওইসব এলাকার ৮৯ হাজার ৭২০ পরিবারের চার লাখ ৪৭ হাজার ৮৯৬ জন লোক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তথ্য: বিভিন্ন অনলাইন পত্রিকা সূত্রের।