দি ঢাকা টাইমস্ ডেস্ক ॥ আমরা জানি ভালোবাসা চিরন্তন। কিন্তু এবার এক গবেষক বললেন ভিন্ন কথা। তিনি বলেছেন, চিরন্তন ভালোবাসা বলে কিছু নেই!
মনোবিজ্ঞানী বারবারা ফ্রেডরিকসন তার নতুন বই লাভ ২.০: হাউ আওয়ার সুপ্রিম ইমোশন অ্যাফেক্টস এভরিথিং উই ফিল, থিঙ্ক, ডু, অ্যান্ড বিকাম- নামক বই এ ভালোবাসার সম্পূর্ণ নতুন এই ধারণা দেওয়া হয়েছে!
চ্যাপেল হিলের নর্থ ক্যারোলিনা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিবাচক আবেগ বিষয়ে নেতৃস্থানীয় গবেষক হলেন এই ফ্রেডরিকসন। তিনি দাবি করে বলেছেন, ভালোবাসাকে আমরা যেমনটা ভাবি ভলোবাসা কিন্তু তেমনটা নয়। এর স্বপক্ষে তিনি বৈজ্ঞানিক সাক্ষ্য-প্রমাণও হাজির করেছেন।
তিনি আরও বলেন, দীর্ঘমেয়াদি, সার্বক্ষণিকভাবে হাজির কোনো আবেগের কারণে কোনো বিয়েই টিকে থাকে না। ব্যাকুলতা কিংবা আবেগই শুধু কোনো তরুণ ভালোবাসার বৈশিষ্ট্য নয়। এটি কোনো আত্মীয়তার বন্ধনও নয়।
ফ্রেডরিকসনের মতে, ভালোবাসার অর্থ হলো ইতিবাচক অনুরণনের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূ্র্তের সমষ্টিমাত্র। ভালোবাসা হলো একটি সংযোগ, যাতে করে থাকে ইতিবাচক অনুভূতির বন্যা। যা আপনি অপরের সঙ্গে যোগাযোগ সৃষ্টি হয়। আপনি এই মুহূর্তগুলো আপনার রোমান্টিক পার্টনার কিংবা শিশু অথবা ঘনিষ্ঠ কোনো বন্ধুর সঙ্গেও অভিজ্ঞতার মাধ্যমে অর্জন করতে পারেন। তবে আপনি ক্ষণিকের জন্যও কারো প্রেমে পড়ে যেতে পারেন। যেমন, রাস্তায় কোনো অপরিচিত জন, সহকর্মী কিংবা মুদি দোকানের লাইনে দাঁড়িয়ে থাকা কেও।
গবেষক ফ্রেডরিকসনের মতে, ভালোবাসাকে শুধু বিশেষ কোনো মানুষের (জীবন সঙ্গী কিংবা সঙ্গিনীর) সঙ্গে সীমাবদ্ধ করলে ভালোবাসা হতে মানুষ যে স্বাস্থ্য ও সুখ পেয়ে থাকে তার গণ্ডিও সীমাবদ্ধ হয়ে পড়ে। অথচ এখন পৃথিবীর বেশিরভাগ মানুষই তাদের ভালোবাসাকে এভাবে শুধু বিশেষ একজনের জন্য সীমাবদ্ধ করে ভাবতে অভ্যস্ত হয়ে পড়েছেন।
ফ্রেডরিকসন আরও বলেন, যেসব নিঃসঙ্গ মানুষরা ভালোবাসার জন্য এমন বিশেষ কাওকে খুঁজে পাওয়ার জন্য অপেক্ষা করছেন তারা বোকার স্বর্গে বসবাস করছেন। তারা মূলত রোমান্টিক ভালোবাসা সম্পর্কে যে পৌরাণিক গাল-গল্প প্রচলিত রয়েছে সেসব বিশ্বাস করেই বসে আছেন। তারচেয়ে বরং তারা যদি অপরের সঙ্গে সংযোগের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র মুহূর্তগুলোতে ভালোবাসার অনুসন্ধান করেন ও উপভোগ করেন তাহলেই তাদের একাকিত্ব কিংবা নিঃসঙ্গতা কেটে যাবে খুব সহজে। গবেষক ফ্রেডরিকসন মনে করেন, প্রতিদিনই আমরা অসংখ্যবার এই ধরণের ইতিবাচক সংযোগমূলক মুহূর্তের অভিজ্ঞতা লাভ করি।